মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়ার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম শুনলেই পিলে চমকে উঠবে সকলের! কারণ, এটিই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র। নাম ‘সারমাত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’। বুধবারই তার সফল উৎক্ষেপণ সারল রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেই এই সংবাদ জানিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে বিশ্বের অন্য দেশও চিন্তিত। পুতিনের দাবি, পৃথিবীর যে কোনও লক্ষ্যে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম সারমাত। কেন একে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র বলা হচ্ছে? অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হল এটি একসঙ্গে একাধিক পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। পরমাণু অস্ত্র বহন করে বিশ্বের যে কোনও লক্ষ্যে নির্ভুল আঘাত হানতে পারে সারমাট।
দ্বিতীয়ত, এই ক্ষেপণাস্ত্রে ১০ বা তার বেশি ‘ওয়ারহেড’ যোগ করা যায়। অর্থাৎ, তা একাধিক যুদ্ধাস্ত্র নির্ভুল ভাবে ছুড়তে পারে। যার ফল, সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে সারমাতের ধ্বংসের ক্ষমতা অনেক বেশি। এমনই প্রযুক্তিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয়েছে যে একে ধরতে পারবে না শত্রুপক্ষের কোনও রেডার। ফলে শত্রুপক্ষের অজান্তেই এই ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে বলে দাবি রুশ সংবাদমাধ্যমের।
রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি নিয়ে প্রায় ২২ বছর ধরে গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণা করে এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যা অন্য ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে কয়ের গুণ বেশি শক্তিশালী। বলা হচ্ছে, সারমাতের তিনটি স্তর। ১৮ হাজার কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে তরল দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
সারমাত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের দৈর্ঘ্য ৩৫.৫ মিটার। ব্যাস তিন মিটার। পশ্চিমী বিশ্ব সারমাতকে ‘দ্বিতীয় শয়তান’-এর তকমা দিয়েছে। রাশিয়ার আগামী প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পুতিনের ভাষায় ‘অজেয়’ কিঞ্ঝল এবং আভানগার্ড হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। তার সঙ্গে এ বার যুক্ত হল সারমাতও। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সারমাতের সফল উৎক্ষেপণটি সম্পন্ন হয়েছে উত্তর রাশিয়ার প্লেসেটস্ক কসমোড্রোমে।
রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, ছ’হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে নির্ভুল ভাবে আঘাত হানতে পেরেছে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি। সফল উৎক্ষেপণের পর পুতিন বলেছিলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই হাতিয়ার ক্রেমলিনের শত্রুদের দু’বার ভাবতে বাধ্য করবে। কারণ পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের যে কোনও বিন্দু এখন এর পাল্লার মধ্যে এসেছে।’চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ এই ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পাবে রুশ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারকারী সেনা।
প্রাচীন কালে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং কাজাখস্তান অঞ্চলে বাস করা সারমাতিয়ান নামে একটি যাযাবর গোত্রের নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে। সেই বাইশ বছর আগে দুই হাজার সালে এটির কাজ শুরু হয়। দফায় দফায় এর নকশা ও কৌশল পরিবর্তন করা হয়। এটি তৈরির খরচও বেড়েছে অনেকবার। ২০১৪ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন সারমাত দক্ষিণ থেকে উত্তর মেরু উড়ে যেতে সক্ষম।
তাস লিখেছে সারমাত যে কটি পরমাণু ‘ওয়ারহেড’ বহন করতে পারে তার ওজন ১০ টনের মতো। ক্ষেপণাস্ত্রটির নিজের ওজন দুইশ টন। এটি চলার পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম তাই এটিকে কোন ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী অস্ত্র দ্বারা আঘাত করা কঠিন। ২০১৫ সালে এটি তৈরির কাজ শেষ হয় তবে এটির পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের দিনক্ষণ বারবার পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এর একটি ‘প্রোটোটাইপ’ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
২০১৮ সালে এর ব্যাবহার শুরু করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছিল। সোভিয়েত আমলের ভয়েভোদা ক্ষেপণাস্ত্র যেটি ১৯৮৮ সাল থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটির স্থলাভিষিক্ত হবে সারমাত। এটি ব্যবহারে রাশিয়াতেই প্রস্তুত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে, বলেছেন পুতিন। রাশিয়ার মহাকাশ বিষয়ক সংস্থা রসকসমসের মহাপরিচালকের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে এই বছরের অক্টোবরের দিকে তারা রাশিয়ার মিসাইল রেজিমেন্টকে ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রেরণের কাজ শুরু করবে। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।