Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উগ্র জাতীয়তাবাদের চরম পর্যায়ে পালুদান

সুইডেনে বিক্ষোভ অব্যাহত, ২৬ পুলিশসহ আহত ৪০

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে সুইডেনে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভ থেকে কমপক্ষে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতায় ২৬ পুলিশসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন এবং ২০ টিরও বেশি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সংঘর্ষে প্রায় ২০০ জন জড়িত ছিল। এটি অপরাধী চক্রের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে থাকতে পারে। সংঘর্ষে জড়িত বেশ কয়েকজন পুলিশ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার কাছে আগে থেকেই পরিচিত। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইডেনে চলমান দাঙ্গায় পুলিশের গুলিতে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে সউদী আরব, ইরান ও ইরাক। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা রাসমুস পলুডান আয়োজিত একটি বিক্ষোভের পর সহিংসতা শুরু হয়। পলুডান খ্রিষ্ট ধর্মের উৎসব ইস্টার সানডের সপ্তাহান্তে সুইডেন জুড়ে একাধিক বিক্ষোভের অনুমতি পেয়েছিলেন। তার আয়োজিত বিক্ষোভে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। পলুডান একজন ড্যানিশ-সুইডিশ রাজনীতিক। অপর এক খবরে বলা হয়, সুইডেনে ডেনমার্কের বিতর্কিত কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক রাসমুস পালুদানের ইসলামবিরোধী সভা ও মিছিলকে কেন্দ্র করে চরম সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সপ্তাহব্যাপী ইস্টারের ছুটির মধ্যে সুইডেনের বিভিন্ন শহরে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা সারা বিশ্বের মিডিয়ায় ঢেউ তুলেছে। আলোচনায় উঠে এসেছে বাইরের বিশ্বে স্বল্প পরিচিত নেতা পালুদানের নাম। রাসমুস পালুদান ডেনমার্কের চরমপন্থী ‘টাইট কোর্স’ নামের একটি তুলনামূলক ক্ষুদ্র দলের সামনের সারির একজন নেতা। সম্প্রতি তার দলটি সুইডেনের বিভিন্ন বড় শহরে ইসলামবিরোধী সমাবেশ এবং মিছিলের অনুমতি পায়। কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাক স্বাধীনতার আইনের যুক্তিতে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পালুদানবিরোধী অনেক মানুষ পথে নেমে আসে। তার চরমপন্থী সংগঠনটির সভা চলাকালে দাঙ্গা বাধে। এতে বহু মানুষ আহত হয়। সম্পদেরও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ নিয়ে টানা কয়েকদিন ধরে সহিংসতা চলছে। রাসমুস পালুদান ১৯৮২ সালে ডেনমার্কের উত্তর জিল্যান্ডের হর্নবেকে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ এবং বাবা একজন সুইডিশ সাংবাদিক। পালুদান একজন আইনজীবী হিসাবে নিজের প্রতিষ্ঠানেই কাজ করতেন। ২০১৯ সালে একটি জাতিগত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাকে চৌদ্দ দিনের কারাদÐ ভোগ করতে হয়। আরেকটি ঘটনায় পুলিশকে হুমকি দেওয়ার জন্যও দোষী সাব্যস্ত হয়ে দÐিত হয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালের শেষের দিকে পালুদান ১৩ বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে যৌন বিষয়ক চ্যাট করার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তবে পালুদান এই অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেন। ২০২০ সালে সুইডেনের মালমো শহরে এক সা¤প্রদায়িক সভায় যোগ দিতে আসার পথেই তাকে বাধা দিয়ে ডেনমার্কে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দুই বছরের জন্য তার সুইডেনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে বাবা সুইডিশ হওয়ায় তিনি আবেদন করে সুইডেনের নাগরিকত্ব লাভ করেন। তখন থেকে সুইডিশ আইন ভোগ করেই তিনি অবাধে এ দেশে উগ্র সা¤প্রদায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন। বর্তমানে তিনি সুইডেন ও ডেনমার্কের যৌথ নাগরিকত্বের অধিকারী। সা¤প্রতিক দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে সুইডেনের আইনমন্ত্রী মরগান জোহানসন পালুদানের কার্যকলাপকে ‘ডানপন্থী চরমপন্থীর ছড়ানো ঘৃণ্য বার্তা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আদর্শগতভাবে পালুদান উগ্র জাতীয়তাবাদের চরম পর্যায়ে পৌঁছেছেন’। বিবিসি, ওয়াশিংটন পোস্ট, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ