Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কায় নববর্ষ পালন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ৯:২২ এএম

কাঠের টুকরো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে তাতে ছোট্ট একটি পাত্রে দুধ গরম করে নববর্ষ পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় শ্রীলঙ্কায়। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে বহু মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশে নতুন বছরের শুভ সূচনা করেন দিলানি জয়ারত্নে। দ্বীপ রাষ্ট্রটির সিংহল এবং তামিল জনগোষ্ঠী সাধারণত নিজ নিজ বাড়িতেই প্রাচীন রীতি মেনে নববর্ষ উদযাপন করে আসছে। কিন্তু এবারের আয়োজন ছিল ব্যতিক্রম।

দেশটিতে অর্থনৈতিক ধস নামায় বহু মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এ বছর দিলানি ও তার পরিবারের সদস্যরা শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোয় হাজির হয়েছেন। নববর্ষের দিন তারা যেখানে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে সেখানে সামিল হয়েছেন।
দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ বিভ্রাট, জ্বালানির তীব্র সংকট, খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া ও হাসপাতালে ওষুধ সংকটসহ নানাবিধ কারণে শ্রীলঙ্কাজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করতে হবে।
৩৮ বছর বয়সী জয়ারত্নে বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের আগে স্বামী ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে রওনা হন আন্দোলনে যোগ দিতে। এক ঘণ্টার বেশি সময় ভ্রমণ করে কলম্বোয় রাজাপাকসের কার্যালয়ের কাছে যেটি গোতাবায়ার গ্রাম নামে পরিচিত সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশস্থলে পৌঁছান তিনি। আন্দোলনে অংশ নেওয়া এই নারী বলেন, আমরা বাড়িতে বসে থাকতে পারি না। এই আন্দোলন রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে বলেও মনে করেন তিনি।

তার মতো আরও অনেকেই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন সমাবেশস্থলে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা কাগজের প্লেটে চারকোণা আকারের ক্ষিরিভাত (নারকেলের দুধ ও চাল দিয়ে তৈরি করা), কলা, আচার ও বাটার কেক বিক্ষোভকারীদের হাতে তুলে দেন। নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি বিক্ষোভের সমর্থনকারীরা সরবরাহ করেন। আন্দোলনে সমর্থনকারী একজন বলেন, আমরা সাধারণত নতুন বছরের জন্য শুভ কামনা জানাই। এবার আমরা আন্দোলনের জন্য শুভ কামনা জানাচ্ছি।

এদিকে, দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে তার নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, সম্প্রতি কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটি ঠেকানো দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে ও আরও ভাল বোঝাপড়ার মাধ্যমে সেই সংকট মোকাবিলা করা।

শত শত বিক্ষোভকারী রাজাপাকসের কার্যালয়ের কাছে জড়ো হয়েছেন। তাদের কারো হাতে শ্রীলঙ্কার পতাকা। কেউবা দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসা রাজাপাকসে পরিবারের শাসনের অবসান চাইছেন।
দুই ছেলেকে নিয়ে বিক্ষোভস্থলে আসা জয়ারত্নে খুব সতর্কভাবে ছোট্ট পাত্রটিতে দুধ জ্বাল করছিলেন, যেন তা উপচে পড়ে না যায়। তিনি জানান, দুই ছেলেকে বিক্ষোভস্থলে নিয়ে আসার কারণ হচ্ছে, তারা যেন নিজের চোখে দেখতে পায় এই বিক্ষোভ কীভাবে জাতি, শ্রেণি ও ধর্মীয় বিভেদ ভুলে শ্রীলঙ্কার সব মানুষকে একত্র করেছে। সূত্র: রয়টার্স



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ