মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বছর দুই আগে, ২০২০ সালের নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়া মাহিন্দা রাজাপাকসে ভাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের অধীনে ঝামেলাহীনভাবেই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত বছর তাদের আরেক ভাই বাসিলের নাম অর্থমন্ত্রী হিসেবে ঘোষিত হলে দ্বীপদেশটির শাসনক্ষমতায় রাজাপাকসে পরিবারের নিয়ন্ত্রণ আরও পোক্ত হয়েছিল। তারপর এক বছরও হয়নি; শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী সেই পরিবারটিকেই এখন ভয়াবহ সংকটকাল পার করতে হচ্ছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিক্ষোভকারীরা গত কিছুদিন ধরে রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের যে দাবি তুলছেন চলমান অর্থনৈতিক সংকটের আগে তা কারও কল্পনাতেও হয়তো ছিল না। অথচ গত কয়েকদিন ধরে বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোর গাছপালায় পরিপূর্ণ প্রশস্ত এক রাস্তার ধারে কয়েকশ মানুষ ‘গোটা বাড়ি যাও’ সেøাগান দিচ্ছেন; পাশ দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলোর চালকরাও হর্ন বাজিয়ে তাতে সমর্থন জানাচ্ছেন। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার দক্ষিণের সমুদ্রতীরবর্তী শহরগুলো থেকে তামিলভাষী উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত সরকারবিরোধী শতাধিক বিক্ষোভ দেখার কথা জানিয়েছে। নজিরবিহীন এ স্বতঃস্ফ‚র্ত বিক্ষোভই মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি ঘাটতি, প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে থাকা লোডশেডিংয়ের বিরুদ্ধে জনসাধারণের ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। শাসকদের অব্যবস্থাপনা সংকটকে আরও তীব্র করেছে বলেও মত তাদের। “শ্রীলঙ্কানরা খুবই সহিষ্ণু। তাদেরকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোণায় নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা প্রতিক্রিয়া দেখায় না,” বলেছেন রাজাপাকসেদের পদত্যাগের দাবিতে ব্যানার ধরে রাখা বিক্ষোভকারী চান্তাল কুকে। বাইরে যেমন, পার্লামেন্টের ভেতরেও তেমনি বেশ বিপাকে পড়েছে রাজাপাকসে পরিবার। মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের মতো রোববার বাসিলও তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন; মঙ্গলবার ক্ষমতাসীন জোটের অন্তত ৪১ আইনপ্রণেতা সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় রাজপাকসে সরকার এখন সংখ্যালঘু সরকারে পরিণত হয়েছে; অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের প্রবল সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। “সংকট যত তীব্র হবে, রাজাপাকসে পরিবারের জন্যও তা ততই খারাপ হবে,” বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুসল পেরেরা। পেরেরা নিজেও দ্বীপদেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নিয়ে একটি বই লিখেছেন। অর্থনৈতিক সংকট ও গোটাবায়ার পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সাড়া পায়নি রয়টার্স। তবে সরকারি দলের প্রধান হুইপ ও মন্ত্রী জনস্টন ফার্নান্দো বলেছেন, গোটাবায়া ২০১৯ সালে ৬৯ লাখ ভোটারের রায় নিয়ে শাসনক্ষমতায় বসেছিলেন। “সরকারের দিক থেকে আমরা বলতে চাই, কোনো পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করবেন না। আমরা এই সংকট মোকাবেলা করবো,” বুধবার পার্লামেন্টে এমনটাই বলেন তিনি। বৌদ্ধ-অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলের এক রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া, ৯ ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম, নন্দসেনা গোটাবায়া রাজাপাকসে ১৯৭১ সালে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং দেশটিতে ২৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে তামিল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযানে অংশ নেন। অবসর শেষে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসজীবন কাটানোর পর ২০০৫ সালে দেশে ফিরে তিনি ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন। সবমিলিয়ে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া গৃহযুদ্ধের নৃশংস সমাপ্তি দেখভালের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।