চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রফেসর আলহাজ মুহাম্মাদ মাসউদুর রহমান
সৃষ্টির উৎস হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাউহি ওয়া সাল্লামের উপর পবিত্র মাহে রমজানের লাইলাতুল কদর অবতীর্ণ সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম পথপ্রদর্শক মহামহিমায় আল কোরআন। মানবজাতিকে মহাসত্য ও সুন্দরের আহ্বান জানিয়ে পবিত্র কোরআনের যাত্রা শুরু করে পার্থিব শক্তি, মর্যাদা, অহংকার স্বার্থের দ্বান্দ্বিক ধারণার পথ থেকে মহান আল্লাহ তায়ালার এক ও অদ্বিতীয় প্রেমময়ে মত্ত্বার দিকে আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞানময় কোরআন মানব সমাজে উপস্থিত হয়েছিল। আবির্ভাবের ক্ষণ থেকেই এর ভাষা ও বর্ণনা বিশ্ববাসীকে বিমোহিত করে রেখেছে। আজ পবিত্র কোরআনের দেড় হাজার বছর অতিক্রান্ত প্রায়।
যুগজিজ্ঞাসা ও কালের প্রয়োজনে এ ঐশী ও অলৌকিক গ্রন্থ আজও জীবন্ত কাল সমকাল ও শেষ কালের সীমানা পেরিয়ে কোরআনের মহিমা চির ভাস্বর ও চির অম্লান। বিশ্বাসী মানুষের সুখ-দুঃখ ও আনন্দ বেদনায় বার বার কেবল কোরআনের কাছেই ফিরে আসেন। এঁকে আপন মনে তিলাওয়াত করেন, অর্থ খোঁজেন ও এর বাণী ও মর্মের পরশে নিজেদের পরিশুদ্ধ করতে ব্রত হন। জ্ঞানী প-িত ও বিদগ্ধজনেরা ভাষার দেয়াল সরিয়ে দিয়ে এ মহাগ্রন্থকে বোধগম্য করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন যুগযুগ ধরে। এ সাধনা আজও বহমান, থাকবে চিরকাল।
আসুন, পবিত্র কোরআনকে কোরআনের সুন্দর সুন্দর ও গুণবাচক নামে সম্বোধন করি। চেষ্টা আমাদের ব্যর্থতা পূর্ণতা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে।
আল কোরআনের তথ্য ও তত্ত্ব
কোরআনে উল্লেখিত কোরআনের ৭২টি নাম : ১. আল কিতাব (মহাগ্রন্থ) ২. কিতাবুল্লাহ (আল্লাহর কিতাব) ৩. আল কোরআন (অধিক পঠিত) ৪. আল ফুরকান (মানদ-) ৫. আন নুর (জ্যোতি) ৬. আল হুদা (পথ নির্দেশক) ৭. আয যিকর (স্মারক) ৮.আল কওল (কথা) ৯. কালামুল্লাহ (আল্লাহর বাণী) ১০. মুবারক (মহিমান্বিত) ১১. রহমাত (অনুকম্পা) ১২. হিকমাতুল বালিগাহ (পরিপূর্ণ) ১৩. আল হাকিম (প্রজ্ঞাময়) ১৪. হাবলুল্লাহ (আল্লাহর রজ্জু) ১৫. রুহ (প্রেরণা) ১৬. আল ওয়াহহী (প্রত্যাদেশ) ১৭. আল ইলম (পরমজ্ঞান) ১৮. আল হাক্ক (মহাসত্য) ১৯. আল বাশির (সুসংবাদদাতা) ২০. আন নাযির (সতর্ককারী) ২১. আল মাজিদ (মর্যাদাবান) ২২. আদল (সুষম) ২৩. আমরুল্লাহ (আল্লাহর নির্দেশ) ২৪. মুহাইমনি (সংরক্ষক) ২৫. বুরহান (প্রমাণ) ২৬. মুবিন (সুস্পষ্ট) ২৭. শিফা (নিরাময়) ২৮. মাওইয়া (উপদেশ) ২৯. আলী (সুউচ্চ) ৩০. রিছালাতুল্লাহ (আল্লাহর বার্তা) ৩১. হুজ্জাতুল্লাহ (আল্লাহর প্রমাণ) ৩২. আল মুসাদ্দিক (সত্যয়নকারী) ৩৩. আল আযীয় (শক্তিময়) ৩৪. ছিরাতুল মুস্তাকিম (সঠিকপথ) ৩৫. কাইয়ূম (সুদৃঢ়) ৩৬. আল ফাঝল (মীমাংসাকারী) ৩৭. আল হাদিছ (বাণী) ৩৮. আহছানুল হাদিছ (সর্বোত্তম উক্তি) ৩৯. নাবাউল আযীম ৪০. মহাসংবাদ ৪১. মুতাশাবিহা (সাদুশ্যময়) ৪২. মাছানী (পুনরাবৃত) ৪৩. তানযীল (অবতীর্ণ) ৪৪. আরবী (আরব্য) ৪৫. বাছিয়ার (প্রজ্ঞা) ৪৬. বায়ান (বিবরণ) ৪৭. আয়াতুল্লাহ (আল্লাহর নির্দেশ) ৪৮. আজব (চমৎকার) ৪৯. তযকিরাহ (স্মারক) ৫০. উরত্তয়াতুল উছকা (দৃড় অবলম্বন) ৫১. আছ ছিদক (অতীব সত্য) ৫২. মুনাদী (আহ্বানকারী) ৫৩. আলবুশরা (আনন্দবার্তা) ৫৪. বাইয়িনাত (প্রমাণপঞ্জি) ৫৫. বালাগ (বার্তা) ৫৬. আল কারীম (মর্যাদাবান) ৫৭. আলমীযান (ন্যায়দ-) ৫৮. নিয়ামাতুল্লাহ (আল্লাহর অনুগ্রহ) ৫৯. হুদালাহ (আল্লাহর নির্দেশ) ৬০. কিতাবুয মুবীন (সুস্পষ্ট কিতাব) ৬১. কিতাবুন হাকীম (বিজ্ঞানময় কিতাব) ৬২. কুরআনুল মুবীন (উজ্জাল কোরআন) ৬৩. কিতাবুম মাছতুর (ছত্রলিপি গ্রন্থ) ৬৪. কিতাবুমন আযীয (প্রিয় পুস্তক) ৬৫. যিকরুল হাকীম (কৌশলপূর্ণ) ৬৬. মাতলু (অধিক অধ্যয়নযোগ্য) ৬৭. হুদাল লিন নাছ (মানবজাতির দিশারী) ৬৮. যিকরুল্লাহ (আল্লাহর স্মরণ) ৬৯. যিকরুল লিল আল আমিন (জগৎসমূহের জন্য স্মারক) ৭০. নুরুল্লাহ (আল্লাহর আলো) ৭১. নুরুল মুবীন (সুস্পষ্ট আলো) ৭২. কালিমাতুল্লাহ (্আল্লাহর বাণী)
আরবী আমাদের মাতৃভাষা না হলে ও ধর্মীয় ভাষা হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে যে গুরুত্ব দেয়া হয় আরবী গুরুত্ব তার চেয়ে শত সহ¯্র লক্ষ্য কোটি গুন বেশী। কারণ আরবী আমাদের ইবাদতের ভাষা দোয়ার ভাষা, নামাযের ভাষা। প্রিয় নবী (সা) বলেছেন তিনটি কারণে তোমরা আরবীকে ভালোবাস, কারণ আমি আরবী, কোরআন আরবী, জান্নাতের ভাষা আরবী (বুখারী শরীফ)
লেখক : কথা সাহিত্যিক টিভিভাষ্যকার, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভাসিটির প্রো-ভাইসচ্যান্সেলর
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।