মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সদ্যোজাত মেয়ের সঙ্গে এক বারের জন্যও দেখা হয়নি। সারোগেট মায়ের গর্ভে থাকাকালীন কন্যাসন্তানের একটি ত্রিমাত্রিক স্ক্যানের ছবিই সম্বল। তাকে আঁকড়েই দিন কাটছে। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমে এমনই দাবি করেছেন রাশিয়ার ধনকুবেরের স্ত্রী হানা ভলকোভা। তার দাবি, শিশুকন্যাকে অপহরণ করে মস্কোয় লুকিয়ে রেখেছেন তারই স্বামী কিরিল শামালভ।
লন্ডনের অভিজাত দুনিয়ার বাসিন্দা হানার স্বামীর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। রাশিয়ার ‘সবচেয়ে কমবয়সি ধনকুবের’ হিসাবে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি কিরিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক জামাইও বটে। পুতিনের ছোট মেয়ে ক্যাটেরিনা তিখোনোভার সঙ্গে কিরিলের বিয়ে হয়েছিল। তবে ২০১৩ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। যদিও কিরিল যে কখনই পুতিনের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের বাইরে যাননি, সে দাবি করেছে ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম।
রাশিয়ার খ্যাতনামীদের অন্যতম হানা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে কিরিলকে বিয়ে করেন তিনি। তার পর থেকে বহু বার আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হননি। গত অক্টোবরে মস্কোর একটি এজেন্সির সাহায্যে এক সারোগেট মায়ের খোঁজ পান। তার গর্ভেই বড় হচ্ছিল হানা এবং কিরিলের কন্যাসন্তান। হানার দাবি, সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের জন্মের কিছুকাল আগে থেকেই কিরিলের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হয়। এর পর মস্কো ছেড়ে লন্ডনে চলে যান তিনি। সে সময়ই নাকি তাকে সারোগেসির চুক্তিপত্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর পর সন্তানের জন্ম হলেও তাকে দেখেননি বলে দাবি হানার।
মস্কোর ওই এজেন্সিতে যোগাযোগ করেও সন্তানের খোঁজ পাননি বলে দাবি করেছেন হানা। ওই এজেন্সি থেকে বলা হয়েছিল, যে সারোগেট মায়ের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছিল, তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এর পর কোভিডের দাপট শুরু হওয়ায় লন্ডনেই আটকে পড়েন হানা। তার কথায়, ‘‘কোভিডের জন্য লন্ডনে গিয়ে আটকে পড়েছিলাম। এর পর যত তা়ড়াতাড়ি সম্ভব মস্কোর বিমান ধরেছিলাম।’’ হানা জানিয়েছেন, মস্কোয় ফিরে জানতে পারেন যে তাদের সন্তানের জন্ম দিয়েছেন সারোগেট মা। হানা বলেন, ‘‘শুনেছি মেয়ের নাম রাখা হয়েছে আনা। অথচ আমরা স্থির করেছিলাম ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের নামে মেয়ের নাম রাখব।’’
মস্কোয় ফিরে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন হানা। শহরতলিতে সেই বিশাল বাড়িতে তিনি কিরিলের অপেক্ষায় ছিলেন বলেও জানিয়েছেন। হানার কথায়, ‘‘তিন দিন ধরে (কিরিলের) অপেক্ষায় বসেছিলাম। শেষমেশ বাড়ি এসে আমাকে বলল যে তার নতুন বান্ধবী হয়েছে। তবে আমার থেকে ডিভোর্স চায় না।’’ হানার আরও দাবি, ‘‘আমাকে আঘাত দিতে চেয়েছিল কিরিল।’’
লন্ডনের সংবাদমাধ্যমের কাছে কিরিলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন হানা। ৪৪ বছরের হানার অভিযোগ, কিরিলের আইনজীবীরা তাকে সন্তানের দাবি ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাগজপত্রে সই করাতে চেয়েছিলেন। তবে তাতে রাজি হননি তিনি। এ নিয়ে রাশিয়ার পুলিশ-প্রশাসনের উপর তার ভরসা নেই বলেও জানিয়েছেন হানা। এর পরই লন্ডনে ফিরে গিয়ে এ বিশয়ে মামলা রুজু করেছেন তিনি। সদ্যোজাত সন্তানের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতে কিরিলের লোকজন বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন হানা। তার দাবি, আনাসতাসিয়া জাডোরিনা নামে এক ফ্যাশন ডিজাইনারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছেন কিরিল। গত সপ্তাহে কিরিলের ৪০তম জন্মদিনের পার্টিতে দুবাইয়ে হাজিরও ছিলেন আনাসতাসিয়া।
ঘটনাচক্রে, কিরিলের ‘বান্ধবী’ রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা ফেডেরাল সিকিউরিটি সার্ভিসের এক জেনারেলের মেয়ে। ফলে রাশিয়ায় যে তাঁর সমস্ত দাবি নস্যাৎ করে দেওয়া হবে, তেমনই আশঙ্কা করছেন হানা। আপাতত যমজ বোন এবং তার আগের পক্ষের কিশোর সন্তানের সঙ্গে লন্ডনে বসবাস করছেন হানা। তিনি জানিয়েছেন, কিরিলকে ডিভোর্স করতে চান। সেই সঙ্গে বিয়ের আগে কিরিলের সঙ্গে যে আর্থিক চুক্তি হয়েছিল, তা-ও ছেড়ে দিতে চান তিনি।
বিয়ের আগে কিরিলের সঙ্গে হানার আর্থিক চুক্তিতে বলা হয়েছিল, বিবাহবিচ্ছেদ হলে সাড়ে ৪ কোটি পাউন্ড পাবেন হানা। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৫১০ কোটি টাকারও বেশি। তবে সন্তানের জন্য এই বিপুল অর্থও ছেড়ে দিতে রাজি বলে দাবি হানার। মেয়ের একটি ত্রিমাত্রিক স্ক্যানের ছবি দেখিয়ে হানা বলেন, ‘‘এই ছোট্ট ছবিটা নিয়েই বেঁচে রয়েছি। তার মা যে তাকে ফেলে পালিয়ে যায়নি, এটাই মেয়েকে বলতে চাই। কিরিল সাড়ে ৪ কোটি পাউন্ড রেখে দিক। আমি শুধু মেয়েকে দেখতে চাই।’’ যদিও হানার এই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি কিরিল। সূত্র: ডেইলি মেইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।