বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনার বহুল আলোচিত মডার্ণ সী ফুডের কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার সাহা হত্যা মামলায় প্রতিষ্ঠান মালিকের ছেলে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসান স্টার্লিংসহ পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমান না হওয়ায় চারজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ শহিদুল ইসলাম আজ সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, মেহেদী হাসান ষ্টারলিং, মোঃ আরিফুল হক সজল, নাহিদ রেজা রানা ওরফে রানা ওরফে লেজার রানা, মোঃ ডালিম শিকদার ওরফে আমির শিকদার ডালিম ও সজল মোল্লা।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, উজ্জ্বল কুমার সাহা মডার্ণ সী ফুডের ফিন্যান্স শাখায় কর্মরত ছিলেন। চাকরীর সুবাদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসান স্টারলিংয়ের পিতা ও স্ত্রীর সাথে তার ভাল সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন সময়ে তিনি মেহেদী হাসান স্টার্লিং সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তাদের কাছে সরবরাহ করতেন। এক পর্যায়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে উজ্জ্বল কুমার সাহাকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। এরপরও মেহেদী হাসান স্টারলিং বিভিন্ন বিষয়ে উজ্জ্বল কুমার সাহাকে নানা বিষয়ে সন্দেহ করতেন। এক পর্যায়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১২ সালের ৭ জুন সকাল পৌনে ১০টায় সন্ত্রাসীদের দিয়ে উজ্জ্বল কুমার সাহার মেয়ের জোহরা খাতুন বিদ্যানিকেতনের সামনে তার উপর হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও ইট দিয়ে তাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ অবস্থায় তাকে প্রথমে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই সুমন কুমার সাহা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই মো. সোহেল রানা মেহেদী হাসান স্টারলিংসহ সকল আসামিকে গ্রেফতার করেন। এর মধ্যে আসামি মামুনকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সহ সকল আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এ মামলা থেকে মুল পরিকল্পনাকারী মেহেদী হাসান স্টারলিং ও তার বন্ধু মেহেদী হাসান মামুনের নাম বাদ রেখে ৮ জনের নামে তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০১৪ সালে ১৩ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশক্রমে মামলাটির তদন্তভার সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শেখ শাহাজাহানের ওপর ন্যাস্ত করা হয়। তদন্ত শেষে একই বছরের ১২ অক্টোবর প্রধান আসামি মেহেদী হাসান স্টারলিং ও তার বন্ধু মেহেদী হাসান মামুনকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর খুলনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের আদেশ নং-৪২ মোতাবেক মামলাটির তদন্তভার পিবিআই হেডকোয়ার্টারের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলামের ওপর ন্যাস্ত হয়। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি তিনি মামলার কেস স্টোরি স্ট্যাডি করেন। সেখানে তিনি দেখেন মেহেদী হাসান স্টারলিংয়ের অনৈতিক কার্যকলাপের কথা পরিবারকে বলার কারণে উজ্জ্বল কুমার সাহাকে পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়। মুল পরিকল্পনাকরী মেহেদী হাসান স্টারলিংকে কিভাবে এ মামলার দায় থেকে পুর্বের তদন্ত কর্মকর্তারা বাদ দিলেন তা তার বোধগম্য নয় বলে গত বছর ২ আগষ্ট দেয়া সম্পূরক চার্জশিটে উল্লেখ করেন। মামলা থেকে স্টারলিংয়ের বন্ধু মেহেদী হাসান মামুনকে অব্যাহতি চাওয়া হয় চার্জশিটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।