মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কোভিড-টিকায় পাওয়া অ্যান্টিবডি শরীর থেকে উধাও হয়ে যায় কয়েক মাসেই। কিন্তু একবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর কিংবা টিকার দু'টি ডোজ নেওয়ার পর শরীরে যে টি-লিম্ফোসাইট কোষ জন্মায়, তা বছর ঘোরার পরেও দিব্যি টিকে থাকে।
এই টি কোষই হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সেই স্মৃতিকোষ, যা করোনার হামলা দেখলেই শরীরকে ফের লড়াইয়ের উপযোগী পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি বানিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি নিজেরাও ভাইরাসের উপর শুরু করে হানাদারি। গত এক সপ্তাহে 'দ্য সায়েন্স ইমিউনোলজি' ও 'দ্য ল্যান্সেট মাইক্রোব'-এর মতো দু'টি নামকরা বিজ্ঞানপত্রিকায় বেরোনো একটি মার্কিন ও একটি চীনা গবেষণাপত্রে দাবি এমনটাই।
এর ফলে একটি মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, করোনা টিকার বুস্টার ডোজ় কতটা জরুরি ছিল? একবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে গেলে আর টিকার দরকার কতটা আছে? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দোলুই বলেন, ''সর্বত্র বুস্টার ডোজ় চলছে বটে। কিন্তু এর সমর্থনে তেমন ইতিবাচক তথ্য এখনও নেই। শুধু জানা আছে, হালকা হয়ে আসা অ্যান্টিবডির মাত্রাকে ফের চাঙ্গা করে তোলে বুস্টার। কিন্তু সে কাজটা যে শরীরে টিকে যাওয়া টি-লিম্ফোসাইট কোষই বিলক্ষণ পারে, সেটা এই দু'টি গবেষণায় জানা গেল।''
নিউ ইয়র্ক ও পেনসিলভ্যানিয়ার একদল গবেষক করোনা আক্রান্তদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে প্রমাণ করেছেন, অ্যান্টিবডির চেয়েও টি-লিম্ফোসাইট বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দীর্ঘমেয়াদি ইমিউনিটি এই কোষই দেয়। আবার চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, এই টি-লিম্ফোসাইট কর্মক্ষম থাকে এক বছরেরও বেশি। করোনার আদি রূপই হোক বা আলফা-বিটা-ডেল্টা- সব ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম টি কোষ।
ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, ''কোভিড-টিকার পর পাওয়া অ্যান্টিবডির গুরুত্ব বারবার আলোচিত হলেও টি-লিম্ফোসাইট নিয়ে চর্চা বিজ্ঞানী মহলে কিছুটা বাত্যই ছিল। অথচ টি কোষের সাহায্য ছাড়া অ্যান্টিবডি তৈরির জো নেই, তা সকলেরই জানা। এই স্মৃতিকোষ নিজেও ভাইরাস নিকেশ করতে পটু। তাই টি কোষের মাধ্যমে সুরক্ষা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে আরও বেশি কার্যকর।'' সিদ্ধার্থ মনে করছেন, এই তথ্য টিকাপ্রাপকদের পাশাপাশি করোনা আক্রান্তদেরও স্বস্তি দেবে।
বাংলা-সহ সারা দেশ তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে ছেয়ে গিয়েছিল ওমিক্রন এবং তার বিএ.২ সাব-ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণে। সে জন্যই এই দু'টি গবেষণায় আশার আলো দেখছেন এখানকার চিকিৎসকরা। মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ সৌগত ঘোষ মনে করেন, ''টিকাপ্রাপকদের পাশাপাশি আক্রান্তদেরও যে অ্যান্টিবডি কমে গেলে চিন্তিত হয়ে পড়ার দরকার নেই, সে কথাটাই তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এই দু'টি গবেষণায়। অ্যান্টিবডি গেলেও টি কোষের সুবিধা মিলবে।''
ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ আবিরাল রায়ের মতে, টিকাপ্রাপকদের চেয়েও বেশি সুবিধা পাবেন করোনা আক্রান্তরা। কেননা, টিকায় ভাইরাসের নির্দিষ্ট একটি অংশের একটি বা দু'টি প্রোটিন সম্পর্কে পরিচিত হয় শরীর। কিন্তু প্রাকৃতিক সংক্রমণে গোটা ভাইরাসের সব ধরনের প্রোটিনকেই চিনে নেয় ইমিউনিটি। তার কথায়, ''সে জন্যই সংক্রমণটা একবার হয়ে গেলে ভবিষ্যতের সুরক্ষা ঢের বেশি মজবুত হয়।'' সূত্র: চিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।