পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেড়শ কিলোমিটার মহাসড়কে ৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। তার ওপর সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে হাটবাজার, অবৈধ পার্কিং। সেই সাথে রিকশা, অটোরিকশা, টমটম, মিশুক, চাঁদের গাড়িসহ ছোট গাড়ির ঢল। তাতে যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে। এতে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজারসহ এই অঞ্চলের লাখো মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারমুখী দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সীমাহীন বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকা, বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ সড়ক পথে কক্সবাজার, বান্দরবানের যোগাযোগের একমাত্র এই মহাসড়কের এমন বেহাল দশা পর্যটন, সার্বিক ব্যবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান তথা অর্থনৈতিক বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পর্যটনসহ কক্সবাজারের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র বন্দর, এনার্জি হাবসহ লক্ষ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বহরের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও পর্যটন খাতে সরকারি বেসরকারি বিনিয়োগে নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তবে বেহাল সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসব প্রকল্পের সুফল নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
গত এক দশকে কক্সবাজার, বান্দরবানসহ এই অঞ্চলের জনসংখ্যা, ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটকের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়লেও মহাসড়কটির তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের উন্নয়নে সরকারের তরফে বেশকিছু প্রকল্প গ্রহণের কথা বলা হলেও তার বেশির ভাগই এখনো কাগজে কলমে। ফলে এই মহাসড়কে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসান সহসা হচ্ছে না। বিগত ২০১১ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপন প্রকল্প নেওয়া হয়। সেই প্রকল্প বাস্তবায়নে চলছে ধীরগতি। কবে নাগাদ কক্সবাজারে রেল যাবে তাও এখনো অনিশ্চিত। চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে পতেঙ্গা হয়ে সাগর তীরে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনাও এখনো কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। ফলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মাত্র ভরসা এই মহাসড়ক। তবে মহাসড়কটি অতিরিক্ত যানবাহন ও বিশৃঙ্খলার ভারে বেসামাল হয়ে পড়েছে।
এর মধ্যে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেলের কাজ প্রায় শেষের দিকে। টানেল চালু হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহনের চাপ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাবে। আর তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়া আরো বেশি কঠিন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এখন চলছে পর্যটনের ভর মওসুম। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কক্সবাজার ও বান্দরবানসহ এই অঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। গতকাল ছুটির দিনে হাজারো পর্যটক কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। তবে পথে পথে যানজটে নাকাল হতে হয়েছে। জনদুর্ভোগ শুরু হয়ে মহাসড়কের কর্ণফুলী সেতুর উত্তর প্রান্ত থেকে। চট্টগ্রাম মহানগরী পার হয়ে সেতুর প্রবেশ পথে তীব্র যানজট আর বিশৃঙ্খলা। অসংখ্য ছোট বড় যানবাহন সেখানে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তোলা হয় যাত্রী। এরপর সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে মইজ্জার টেক যেতেই ছোট গাড়ির ঢল। পুরো সড়কে অবাধে চলছে রিকশা, অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, টমটম, মিশুক, টেম্পো, চাঁদের গাড়ি। সড়কে বেপরোয়া গতিতে চলছে মোটরসাইকেল। বাস, ট্রাক, পিক আপসহ ভারী যানবাহনের তুলনায় ছোট গাড়ির সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। দুই লেনের হলেও সড়কের প্রস্থ মাত্র ১৮ ফুট। তার ওপর রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। ফলে স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না যানবাহন। এতে যানজট বাড়ছে। হানিফ পরিবহনের বাস চালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে কমপক্ষে পাঁচ ঘণ্টা লেগে যায়। ছোট গাড়ির ভিড়ে রাস্তায় বাস চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তার ওপর রাস্তায় হাটবাজার বসছে। রাস্তা দখল করে গাড়ি রাখা হচ্ছে। দিনে দিনে যানজট তীব্র হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কে হাটবাজার ঘিরে চরম দুর্ভোগ। প্রতিটি বাজারে যানজটে আটকে পড়ছে যানবাহন। পটিয়ার শান্তির হাট, চন্দনাইশের দোহাজারি, সাতকানিয়ার কেরানি হাট, ঠাকুরদীঘি, লোহাগাড়ার আমিরাবাদ , চুনতি, চকরিয়ার বরইতলী, চিরিঙ্গা, খুটাখালী, ঈদগাঁও, রামু এবং কক্সবাজার শহরের নিকটবর্তী বাংলা বাজারে অসহনীয় যানজট। এসব বাজারে ট্রাফিক পুলিশের কোন তৎপরতা নেই। মহাসড়কজুড়ে কমগতির ছোট যানবাহনের আধিক্যের কারণে নিত্য দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহাসড়কে শৃঙ্খলা আনতে কোন উদ্যোগ নেই। তাতে দিনে দিনে মহাসড়ক স্থবির হয়ে পড়ছে। যানজট কমাতে পটিয়া বাইপাস চালু হয়েছে। তবে সেখানেও অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। ফলে তাতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু টানেলের আনোয়ারা প্রান্তের ১২০ ফুট প্রস্থের ছয় লেনের সড়ক যুক্ত হচ্ছে এই মহাসড়কে। মহানগরী থেকে বের হতে ১০০ ফুট প্রস্থের চার লেনের সঙ্গে টানেল সংযোগ সড়কের ১২০ ফুট প্রস্থের ছয় লেন মিলিয়ে ১০ লেনে গাড়ি চলবে দ্রুতগতিতে। মোট ২৪০ ফুট প্রশস্থের ১০ লেন সড়কের বিপুলসংখ্যক গাড়ির চাপ গিয়ে পড়বে বিদ্যমান ১৮ ফুট প্রশস্তের এই মহাসড়কে। তখন যানজট আরো তীব্র হবে। সড়ক ও জনপথ দোহাজারী বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এই মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করতে সরকার প্রকল্প নিচ্ছে। জাপানি সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।