Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্তির রজনী শবে বরাত

মাওলানা এসএম আনওয়ারুল করীম | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২২, ১২:০৫ এএম

তবে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ “শবেবরাত” প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন : “আমি তো তা’ অবতীর্ণ করেছি এক মুবারক (বরকতময়) রজনীতে এবং আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। (সুরা দুখান-৩-৪ আয়াত)। অবশ্য অধিকাংশ মুফাসসির একে শবেকদরের সাথেই সম্পৃক্ত করেছেন। পবিত্র কুরআনের কোথাও এ সম্পর্কে কোনো আলোচনা না থাকলেও ‘শবেবরাত’ বা ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বড়পীর খ্যাত আবদুল কাদের জিলানী (র) বলেছেন, দুনিয়াবাসীর জন্যে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর নামে মুসলমানদেও যেমন দুটি ঈদ রয়েছে, তেমনি ঊর্ধ্বাকাশসমূহে ফেরেশতাগণের জন্যেও দুটি ঈদ রজনী রয়েছে। এর একটি হচ্ছে শবেকদর, অপরটি শবেবরাত। মুমিন বান্দাগণের জন্যে ঈদ-উৎসব দিনে থাকে। আর ফেরেশতাগণের ঈদ-উৎসব নির্ধারণ করা হয়েছে রাতে। কেননা মানুষ নিদ্রা যায় পক্ষান্তরে ফেরেশতাদের কোনো নিদ্রা নেই।

শবেবরাতে করণীয় : হাদিসে শবেবরাতের নিম্নোক্ত পালনীয় আমল উল্লেখ রয়েছে :
১। কোনো বিশেষ ব্যবস্থা বা আয়োজন না করে সাধারণভাবে এ রাতে কবরস্থানে যাওয়া এবং মৃতব্যক্তিদের জন্যে দোয়া করা, দরুদ-ইসতিগফার পাঠ করে দোয়া করা।

২। এ রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত তথা কুরআন তেলাওয়াত করা, অধিক হারে দরুদ পাঠ করা এবং নফল নামাজ পড়া। তবে নামাজের জন্য কোনো বাধ্যবাধকতা নেই; বরং সামর্থ্যানুসারে জামাত ব্যতীত অনির্দিষ্টভাবে নামাজ পড়া এবং নিজের জন্য ও সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করা।

৩। শবেবরাতের পরদিন অর্থাৎ ১৫ শাবান নফল রোজা রাখা। রাসুলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের সামনে শাবান মাসের পঞ্চদশ রাত শবেবরাত উপস্থিত হয়, তখন তোমরা সেই রাতে নামাজ পড়ো আর দিনের বেলায় রোজা রাখো।

শবেবরাতে বর্জনীয় : বরকতময় এ রজনীতে তওবা-ইসতিগফার ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে নিমগ্ন থাকাই মুমিনের কর্তব্য। অথচ কিছুসংখ্যক লোক এ রাতে এমন কিছু কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে, যেগুলো ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যেমন : পটকাবাজি, তারাবাজি, আতশবাজি, অতিরিক্ত আলোকসজ্জা, পোলাও-বিরানি ও হালুয়া-রুটি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি। এগুলো নিছক কুসংস্কার বৈ কিছু নয়।

মুহাদ্দিসে কেরাম বলেছেন, আতশবাজি একটি সামাজিক কুসংস্কার, অপচয় ও অপরাধের কাজ। ইয়াজুজ-মাজুজ আল্লাহর দিকে তীর নিক্ষেপ করবে তাকে ঘায়েল করার জন্য। আতশবাজির মাধ্যমে অনেকাংশে সেটারই অনুকরণ হয় বলে এটি শরিয়তে নিষিদ্ধ। অন্যদিকে আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ এ রজনীতে দুনিয়াবাসীর প্রতি রহমত নাজিল করতে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন। বান্দাদেরকে তার রহমত ও বরকত লাভ করার জন্য অবিরাম আহ্বান জানাতে থাকেন; ঊর্ধ্বমুখী আতশবাজির দ্বারা যেন প্রকারান্তরে তৎপ্রতিই বিদ্রƒপ প্রকাশ হয়ে পড়ে।

আতশবাজির সামাজিক কুফল : আতশবাজি সামাজিকভাবেও দারুণ ক্ষতিকর। আতশবাজির ফলে নানা দুর্ঘটনার সংবাদ প্রতি বছরই পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়ে থাকে। শবেবরাতে একটি উল্লেখযোগ্য কুসংস্কার হলো, হালুয়া-রুটি না হলে যেন শবেবরাত পালনই অসম্পূর্ণই থেকে যায়। মূলতঃ শরিয়তে এর কোনো নিয়ম নেই। কারণ, এদিন সূর্যাস্ত থেকেই আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশে এসে বান্দাকে ডাকতে থাকেন। তাই তার ডাকে সাড়া না দিয়ে এসব ভোজনে লিপ্ত থাকা একদিকে যেমন ইবাদতে বিঘ্ন ঘটায়, অন্যদিকে উদরপূর্তির দরুন এ মুক্তির রজনীতে ইবাদতে আলস্য চলে আসে। রাত্রি জাগরণের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ ইবাদত-বন্দেগি করার ইচ্ছা করলে হালকা-পাতলা খানা খাওয়া ভালো। অনেক স্থানে এ রাতে গরু-ছাগল-মুরগী জবাইয়ের ধুম লেগে যায়। এ সবই সুন্নাত পরিপন্থি। একটি স্বার্থান্বেষী মহল আগাছার ন্যায় মুসলমানদের ভেতর অতি সংগোপনে এসব রুসুম ও কুসংস্কার অনুপ্রবেশ করিয়েছে।

অনেক স্থানে দেখা যায়, বরাত রজনীতে মুসল্লিদেরকে একত্রিত করে রাতব্যাপী ওয়াজ-নসিহতের আয়োজন করা হয়। যেহেতু এ রাতে নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দরুদ পাঠ, কবর জিয়ারতের মতো বিভিন্ন ইবাদত করতে নবি করিম (সা.) হতে ইঙ্গিত এসেছে, তাই অন্যান্য ইবাদত ব্যতীত শুধু ওয়াজ-নসিহত করে জাগরণ করা মাকরূহ হবে।

তবে হ্যাঁ, রাতের শুরুতে ইবাদতের নিয়ম-কানুন জানানোর উদ্দেশ্যে এ রাতের গুরুত্ব অনুধাবনের জন্যে কিছু সময় আলোচনা করা যেতে পারে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তির রজনী শবে বরাত
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->