মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সফররত চীনের স্টেট কাউন্সেলর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদে সাক্ষাত করেছেন এবং দুই দেশের মধ্যে সব ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতায় আরো অর্জনের ওপর জোর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও আদান-প্রদানের বিষয়ে কথা বলেন এবং চীনের সাথে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন যাতে বৃহত্তর সাফল্য অর্জন করা যায়। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে লৌহ-পরিচ্ছন্ন বন্ধুত্ব কেবল উভয় সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত নয়, উভয় দেশের জনগণের পছন্দও। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে সহযোগিতা উভয় পক্ষ এবং বিশ্বের জন্য ইতিবাচক শক্তি সরবরাহ করেছে এবং পাকিস্তানি পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যত উন্নয়নে আস্থায় পূর্ণ। তার অংশের জন্য ওয়াং বলেছেন যে, চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষিত এবং কঠিন। উভয় পক্ষই সর্বদা একে অপরকে বুঝেছে এবং সমর্থন করেছে এবং দৃঢ়ভাবে একসাথে দাঁড়িয়েছে। চীনা পক্ষ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করে এবং সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে এবং দুই পক্ষের মধ্যে বৃহত্তর সাফল্য অর্জনে সহায়তা করতে পাকিস্তানকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। ওয়াং বলেন, সব ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতার প্রচার করতে ইচ্ছুক। ওয়াং বলেন, পাকিস্তানে কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ এবং শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করতে চীন চীনা উদ্যোগকে পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে। উভয় পক্ষ চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের কৌশলগত গুরুত্বের কথা উচ্চারণ করেছে এবং বলেছে যে, অস্থির আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মুখে চীন ও পাকিস্তানের উচিত ঐক্য ও সহযোগিতাকে আরো জোরদার করা এবং অঞ্চল ও বিশ্বে স্থিতিশীল ভূমিকা পালন করা। উভয় পক্ষই চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক এবং আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ইতিবাচক ভূমিকাকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান সহযোগিতা আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক এবং আঞ্চলিক সংযোগে আফগানিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সহায়তা করে। তিনি বলেন, পাকিস্তানি পক্ষ উচ্চ-মানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার অগ্রগতি এবং আফগানিস্তানে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর সম্প্রসারণের জন্য চীনের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। উভয় পক্ষ ইউক্রেন ইস্যুতে মতামত বিনিময় করেছে, বলেছে যে, ইউক্রেনকে পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে সেতু হয়ে উঠতে হবে এবং একটি বড় শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়।
ইউক্রেন সঙ্কটের প্রাদুর্ভাব রোধে প্রচেষ্টা চালানো উচিত উল্লেখ করে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং ন্যাটোকে রাশিয়ার সাথে আলোচনা করতে হবে এবং অবিভাজ্য নিরাপত্তা নীতির ভিত্তিতে একটি ভারসাম্যপূর্ণ, কার্যকর এবং টেকসই সুরক্ষা কাঠামো স্থাপন করা উচিত। এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উপনীতি হয়েছে। এবার নিজেদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বকে আরো দৃঢ় ভিত্তি দিতে ‘লৌহবর্ম’ বন্ধুত্বের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে পাকিস্তান ও চীন। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির মধ্যে এক বৈঠক শেষে সাক্ষরিত হয় এ চুক্তি। চুক্তির ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরো গভীর হবে বলে এক বিবৃতিতে সাংবাদিকদের জানিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন কাউন্সিল অব ফরেইন মিনিস্টার্সের ৪৮তম সভা চলছে ইসলামাবাদে। এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে মাহমুদ কুরেশির আমন্ত্রণে পাকিস্তানের রাজধানিতে এসেছেন ওয়াং। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সহযোগিতা আরো বাড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে চুক্তিতে। ইউক্রেন ও আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপনে চীন ও পাকিস্তানের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে নতুন কিছু বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। পাকিস্তানের ৫টি নতুন খাতে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি খাত হলো শিক্ষাব্যবস্থা। পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষা খাতে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। এ সহায়তা প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিউচ্যুয়াল রিকগনিশন অব হায়ার এডুকেশন সার্টিফিকেট অ্যান্ড ডিগ্রিজ’। মঙ্গলবারের বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বকে লৌহবর্মের মতো দৃঢ় করে তুলতে আরো কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায়- সে বিষয়ক আলোচনা করেছেন পাকিস্তান ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।’ সূত্র : সিনহুয়া, এনডিটিভি, পিটিআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।