প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
নব্বইয়ের দশকে হিন্দুদের কাশ্মীর ছাড়ার ঘটনা নিয়ে বলিউডের বিবেক অগ্নিহোত্রী ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি নিয়ে নিয়ে ভারতসহ সর্বত্র বইছে নিন্দার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিবাদ, ক্ষোভ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সিনেমাটি বয়কটের আহ্বান জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
খোদ কাশ্মীরের অধিকাংশ মানুষই রুষে উঠেছে সিনেমাটির বিরুদ্ধে। তারা বলছেন, এটি একটি উদ্দেশ্যমূলক ছবি। এই ছবিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়কে স্থানীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘একাধিক মিথ্যা তথ্য দেখানো হয়েছে কাশ্মীর ফাইলস ছবিতে।’
কাশ্মীরে পণ্ডিতদের স্বার্থ নিয়ে লড়াই করা কাশ্মীর পণ্ডিত সংঘর্ষ সমিতির সদস্য সঞ্জয় টিকুর বলেন, ‘কিছু লোক এই ছবি দেখিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়। তাদের অঙ্গুলিহেলনেই ছবিটি তৈরি হয়েছে। ওরা চায় এখন উপত্যকায় যে সব পণ্ডিত রয়েছেন, তাদেরও হত্যা করুক জঙ্গিরা।’
কাশ্মীর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক মহম্মদ শাকিরের মতেও, সিনেমায় যা দেখানো হচ্ছে, তা সঠিক নয়।
‘‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এ সত্যকে ম্যানুপুলেট করা হয়েছে।’ - এক টুইটে এমনটাই দাবি করেছেন ভারতের প্রখ্যাত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ।
ক্ষমতাসীন বিজেপি ছাড়া ক্ষোভ জানাচ্ছে পুরো ভারতবাসী। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় সিনেমাটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। সবাইকে এ সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকতে বলছেন তিনি।
সিনেমাটির কঠোর সমালোচনা করেছেন বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা নানা পাটেকর। তিনি বলেছেন, ‘হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই এই ভারতের বাসিন্দা। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তি, সৌহার্দ-সম্প্রীতিতে বসবাস করে। কারণ তাদের একে-অন্যকে প্রয়োজন। পরস্পরকে ছাড়া থাকতে পারবেনও না তারা। কিন্তু কোনো এক সিনেমার জন্য এই দুইয়ের মধ্যে বিভাজনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়া ঠিক নয়। দেখতে হবে সবাই যেন শান্তিতে থাকেন। এমন সিনেমা বানিয়ে যারা এই শান্তি ভাঙার চেষ্টা করছেন, তাদের কাছে জবাব চাওয়া উচিত। তাদের বুঝিয়ে দেওয়া উচিত, এমন করলে সমাজটাই টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।’
অধিকাংশ চলচ্চিত্র সমালোচকের কাছে এ সিনেমা পক্ষপাতদুষ্ট মনে হয়েছে। তারা বলছেন, এই সিনেমা বস্তুনিষ্ঠতার ধার ধারে নি, বরং ইসলামভীতি উস্কে দিচ্ছে।
রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়েই ওই ছবি তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করেন কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আহমেদ ওয়ানি।
সোম্যা লাখানি নামে জনৈক কাশ্মীরি পণ্ডিতের মতে, ‘এই সিনেমা শিল্প নয়, প্রচার। শিল্প ও প্রচারের সূক্ষ্ম ফারাক আছে। সেই পার্থক্যটা বোঝা জরুরি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।