বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থেকে ১০ জন জেএমবি মতাদর্শী জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব সদস্যরা। শুক্রবার রাতে খালিশপুর বিআইডিসি রোডের কাশিপুর এলাকার আলম শেখের মালিকানাধীন বাড়ির তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের আটক করা হয়। অভিযান শেষে তাদেরকে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে র্যাব এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়েছে।
আটককৃতরা হচ্ছে আনোয়ার কবির মিলন ওরফে মিদ্দাত হোসেন(৫০), সোহেল রানা(৩০), আমিনুল(৩৮), কামরুল ইসলাম(৫৫), রিফাত রহমান(২৪), আব্দুর রউফ(৬২), মোঃ শেখ ফরিদ(২৭), আব্দুল আলীম(৫০), মোঃ রফিকুল ইসলাম(৪৬) ও তালহা ইসলাম(১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ৬ খুলনার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মোশতাক আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, খালিশপুরের কাশিপুর এলাকার আলম শেখের বাসভবনের ৩য় তলায় ‘মাদানী নিসাব খালিশপুর বয়স্ক মাদ্রাসা ও মসজিদে’ জঙ্গি সংগঠন ‘জেএমবি’ মতাদর্শীর নতুন সংগঠন ‘জামআতুল মুসলেমিন’ এর একটি গোপন বৈঠক চলছিলো। শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাত ১টায় র্যাবের অভিযানিক দল ওই ভবনে অভিযান চালিয়ে ১০ জন জঙ্গী সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। সংগঠনটির স্বঘোষিত আমির আনোয়ার কবির মিলন ওরফে মিদ্দাত হোসেন ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে লেখাপড়া করেন। লেখাপড়া শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে আসলে তার সাথে ভোলা-চরফ্যাশন এলাকার প্রফেসর মজিদের সাথে পরিচয় হয়। প্রফেসর মজিদ তৎকালীন জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমান এবং শায়খ সাইদুর রহমানের অনুসারী ছিল। জেএমবির সদস্য প্রফেসর মজিদ ৬৩ জেলায় বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল এবং পরবর্তীতে মামলার জন্য সে জেল হাজতে ছিল। জেলে থাকাকালীন প্রফেসর মজিদ জেএমবির নেতৃ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে সম্পৃক্ততা রাখত। মিদ্দাত হোসেন সৌদি আরব থেকে ফেরার পর থেকেই মজিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে মজিদের কাছে জেএমবির বায়াত গ্রহণ করে। সে সময়ে মিদ্দাত হোসেন এর সাথে জেএমবির অনেক সদস্যের পরিচয় ঘটে। সন্দেহভাজন জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য ২০১২ সালে ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। এরপর থেকে মিদ্দাত হোসেন একটি নিজস্ব সংগঠন তৈরি করার ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ২০১৮ সাল হতে প্রফেসর মজিদ এর সাথে সম্পৃক্ত বেশ কিছু ব্যক্তি মিদ্দাত হোসেন কে সাথে নিয়ে নতুন সংগঠন গঠন করা এবং লোক সংগ্রহের জন্য একতাবদ্ধ হয়। এ প্রেক্ষিতে তারা দ্বীনের দাওয়াত দেয়া শুরু করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল দাওয়াত দেয়ার মাধ্যমে জনগণের একটি বড় অংশকে নিজেদের দলে ভেড়ানো এবং পরবর্তীতে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মিদ্দাত হোসেন এবং তার সহযোগীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সূরা সদস্য নিয়োগ করে সূরা সদস্য এর মাধ্যমে প্রতিটি এলাকা থেকে সাথী সদস্য সংগ্রহের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল। ‘বর্তমানে টাঙ্গাইল, গাজীপুর, যশোর, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা এলাকাতে রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রম ব্যাপক আকারে চলছে। পরবর্তীতে নিকট ভবিষ্যতে কুষ্টিয়া, রাজশাহী, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ এলাকাতে রিক্রুটমেন্ট এর পরিকল্পনা ছিল এবং অদূর ভবিষ্যতে তারা সারাদেশব্যাপী রিক্রুটমেন্ট করার জন্য সকলকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছিল।’ এ প্রেক্ষিতে এবারের তিনদিনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয় যেখানে মূল লক্ষ্য ছিল নেতৃত্ব এবং সারাদেশে কিভাবে কার্যক্রম চলবে সেটি ব্যাখ্যা করা। প্রোগ্রামকে সফল এবং পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে নির্দেশনা গ্রহণের জন্য অন্যান্য সূরা সদস্যগণ তাদের কর্মীদেরকে নিয়ে প্রোগ্রামে যোগদান করে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।