রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন-বিএসসির জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধির ২৮ নাবিক আগামিকাল বুধবার দেশে ফিরে আসছেন। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় রোমানিয়ার বুখারিস্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন তারা। এমন তথ্য জানিয়ে বিএসসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (চার্টারিং, পরিকল্পনা) ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, বুধবার সকাল নাগাদ তারা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবেন। তবে আসছেনা রকেট হামলায় নিহত জাহাজটির তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের কফিন। ইউক্রেনের একটি হিমঘরে থাকা ওই লাশ কখন দেশে আনা হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।

যুদ্ধ কবলিত ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে ভয়ংকর রকেট হামলার শিকার হয়ে টানা ৪০ ঘণ্টা বন্দর নিকটবর্তী একটি বাংকারে অবস্থান করেন ওই ২৮ নাবিক। ৩৯ ঘণ্টা বাংকারে অবস্থানের পর বাসযোগে তাদের মলদোভা হয়ে রোমানিয়া নেয়া হয়। রোববার সকালে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারিস্টে পৌঁছেন ওই ২৮ নাবিক। সেখান থেকে তাদের টার্কিশ এয়ারলাইনের একটি বিমানে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থা থেকে স্বদেশে ফেরার আনন্দে উদ্বেলিত বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকেরা। দেশে স্বজনেরাও অধীর আগ্রহে তাদের বরণের অপেক্ষায় আছেন।

জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ২২ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক থেকে ইউক্রেনে পৌঁছায়। সেখান থেকে পণ্য বোঝাই করে ইতালির রেভেনা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগেই যুদ্ধ শুরু হলে জাহাজটি আটকা পড়ে। পণ্য নেয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে তখন ‘চ্যানেল ক্লিয়ার’ হওয়ার অপেক্ষায় ছিল জাহাজটি। এর মধ্যেই গত ২ মার্চ জাহাজে রকেট হামলায় মারা যান হাদিসুর রহমান।

তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি
যুদ্ধকালীন সময়ে বিএসসির জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধির ইউক্রেনের বন্দরে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশন। গতকাল নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বরাবরে এক লিখিত আবেদনে এ দাবি জানানো হয়েছিল বলে জানান এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। তারা অভিযোগ করেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও জাহাজটিকে ইউক্রেনের বন্দরে পাঠিয়ে বিএসসি কর্তৃপক্ষ তাদের অব্যবস্থাপনার পরিচয় দিয়েছেন। জাহাজটি সেখানে আটকা পড়ে এবং রকেট হামলার শিকার হয়। একজন প্রকৌশলীর মৃত্যুসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাহাজটি। এখন জাহাজটি সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ জাহাজ পরিচালনায় বিএসসির অব্যবস্থাপনার কারণে একজন নাবিকের মৃত্যু এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।