চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
পবিত্র আজান, ধর্মীয় ওয়াজ-মাহফিল ও তাবলীগের কারণে শব্দ দূষণ হয়, এগুলোর অনুমতি বাতিল করতে হবে এধরনের কা-জ্ঞানহীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, পবিত্র আজানকে যারা শব্দ দূষণ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদেরকে মুসলমান বলা যায় না। তারা মানুষ নামের কলঙ্ক। এধরনের ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে দেশে যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে চায় তাদেরকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। অপরদিকে কওমী মাদরাসা নিয়ে খোদ সরকারের দুই মন্ত্রীর চক্রান্ত বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন শুরু হবে। কওমী মাদরাসাবিরোধী দুই মন্ত্রীকে দ্রুত অপসারণ করে সরকারকে কলঙ্কমুক্ত হতে হবে। কওমী মাদরাসায় ইসলামের খুঁটিনাটি বিষয়সহ খালেস দ্বীন শিক্ষা দিয়ে সুনাগরিক তৈরি করা হয়। সম্প্রতি চট্টগ্রামে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম ও নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং অপপ্রচারেরই অংশবিশেষ অবিলম্বে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং এই দুই মন্ত্রীকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বরখাস্ত করে সরকারকে কলঙ্কমুক্ত হতে হবে। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, এদেশের মাদরাসা ছাত্ররা কখনো স্বাধীনতাবিরোধী হতে পারে না। তাছাড়া দেশকে ভালোবাসা যে ঈমানের অঙ্গ এই শিক্ষা মাদরাসা ছাত্ররাই পেয়ে থাকে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, কওমী মাদরাসাগুলো নৈরাজ্যমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, অস্ত্রমুক্ত, মাদকমুক্ত, আদর্শ নাগরিক এবং আলোকিত সোনার মানুষ গড়ার কারখানা। আল্লাহভীরু মানুষ তৈরির নজিরবিহীন এক বিশাল প্রতিষ্ঠান এই কওমী মাদরাসাগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসেন, হেদায়াত দিয়ে মানুষকে জান্নাতের পথে আনেন। পীর সাহেব বলেন, যার মনে সামান্যতম ঈমান আছে সে ইলমে ওহীর শিক্ষা কেন্দ্র মাদরাসার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। এটি জঘন্য পাপ, ঈমানহীনতার লক্ষণ। তিনি পবিত্র আজান, ওয়াজ মাহফিল ও তবলীগের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে নাস্তিক মুরতাদদের এজেন্ট তাসমিমারা মুসলমানের হৃদয়ে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এরা তসলিমা নাসরিনের যোগ্য উত্তরসূরি। এদেরকে বয়কট করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর হজরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, দেশে নতুন নতুন নাস্তিক-মুরতাদের আবির্ভাব ঘটছে। নাস্তিক-মুরতাদরা ধর্মীয় ওয়াজ-মাহফিল এবং আজানকে শব্দ দূষণ হিসেবে আখ্যায়িত করতেও দ্বিধা করছে না। ধর্মীয় সভা, মাইকে আজান বন্ধ করতেও সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে যারা আজানকে সহ্য করতে পারে না, যারা ওয়াজ-মাহফিল সহ্য করতে পারে না তাদের এদেশে থাকা উচিত নয়। এদেশ মুসলমানের দেশ, আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখের দেশ। এদেশে এধরনের দাবি করার সাহস দেখালে ওইসব নাস্তিক-মুরতাদদের ছেড়ে দেয়া হবে না। ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল, তাবলিগ এবং মসজিদের আজান বন্ধের দাবি জানিয়ে ওইসব নাস্তিকগোষ্ঠী নিজেদের চরম ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।
সম্প্রতি পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আইএবি মিলনায়তনে বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর মানুষের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সংগঠনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, নগর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ও নগর সেক্রেটারি মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন, আলহাজ হারুন অর রশিদ, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী প্রমুখ।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, নাস্তিক-মুরতাদ গোষ্ঠীর আষ্ফালন দেখে আমরা বিস্মিত। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাইলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে না। বর্তমান সরকারের ডানে বামে নাস্তিকগোষ্ঠী ভীড় জমাচ্ছে। তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন না করলে নৌকা ডুবলে কিন্তু আর ভাসবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।