বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বগুড়ার কাহালু উপজেলার জয়তুল গ্রামে আলহাজ্ব সেকেন্দার আলী (৫৫) নামে এক মৎস্য চাষীকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে হামলাকারি ও তার পরিবারের ৬টি বাড়ি ও একটি মুদি দোকান আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পেয়ে আগুন নেভাতে গেলে তারাও বাঁধার মুখে পড়েন। পরে পুলিশ গিয়ে গ্রামবাসীকে হটিয়ে দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
নিহত আলহাজ্ব সেকেন্দার আলী (৫৫) কাহালু উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়তুল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। শাপলা মৎস্য খামারের সত্বাধিকারি সেকেন্দার তাঁর নিজ গ্রামের বাসিন্দাদের ভোটে নির্বাচিত গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তথ্য অনুসন্ধানে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাহালু সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আমিরুল ইসলাম জানান, গত ২ মার্চ তাঁদের গ্রামে এক ব্যক্তি মারা যান। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাযার নামাজ হওয়ার কথা। কিন্তু সেই মাঠ উন্নয়নের জন্য সদ্য মাটি ভরাট করার কারণে মাঠটি অসমতল ছিলো। গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে সেকেন্দার আলী সেখানে গিয়ে জানাযার আগেই মাঠটি সমতল করতে উদ্যোগ নেন। কাজ শেষে রাত সোয়া ৭টার দিকে যখন গ্রামবাসী জানাযায় দাঁড়াবে সেই মুহুর্তে হামলার ঘটনা ঘটে। ইউপি সদস্য জানান, ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সভাপতি রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে অন্ততঃ ১০জনের সশস্ত্র যুবক অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এসময় তারা এলোপাথাড়ীবে সেকেন্দারকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।
গুরুতর আহত সেকেন্দারকে নিয়ে গ্রামবাসী প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। সেখান থেকে তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। শজিমেক হাসপাতালের চিকিৎসকগণ তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। সেখানে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় হার্ট ফাউন্ডেশনে নেয়া হলে শনিবার সকাল ১০টায় মারা যান সেকেন্দার আলী। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছলে বিক্ষুপ্ত গ্রামবাসী রাকিব, তার বাবা ফজলু ও চাচা নজরুল ইসলাম সহ অন্যান্য ৬ জনের বাড়িতে ও একটি মুদি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভায়।
কাহালু ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রুবেল রানা জানান, আগুন লাগানোর খবর পেয়ে জয়তুল গ্রামে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গেলে ক্ষিপ্ত জনতা আগুন নেভাতে বাধা দেয়। পরে পুলিশ পৌঁছে জনতাকে হটিয়ে দিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিউর বলেন আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে কাহালু থানার ওসি আবরার হোসেন জানান, পূর্ব বিরোধের কারণে সেকেন্দার আলীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামবাসী কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়। তিনি বলেন, সেকেন্দার আলীর চিকিৎসার কারণে ঘটনার দিন থেকেই পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় অবস্থান করায় থানায় কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে হামলার পর থেকেই জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।