Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুহাম্মদ বিন ওয়াহাবের শিক্ষায় আবদ্ধ নয় সউদী : এমবিএস

ওয়াহাবিবাদ ও সউদী আরব ৫

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ১২:১২ এএম

ওয়াহাবিদের জন্য দ্বিগুণভাবে চ‚ড়ান্ত আঘাত এসেছিল, যখন তাদের সউদী সমর্থকরা তাদের সমর্থন করা বন্ধ করে দেয় এবং যখন ২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর উত্থান ওয়াহাবিবাদ এবং চরমপন্থার ওপর বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করে। এমবিএস জনসমক্ষে ওয়াহাবিবাদ সম্পর্কে কথা বলার কয়েক বছর আগে বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ একজন সউদী শাসকের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন একটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় টেলিভিশনে এসেছিলেন, শীর্ষ ওয়াহাবি নেতাদের বসেছিলেন এবং তাদের তিরস্কার করেছিলেন।

তিনি একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তা এবং নীরবতা দেখতে পাচ্ছি।’
উপসাগরীয় অঞ্চলে, এ ধরনের কোনো মতবিরোধ বা বিবৃতি সাধারণত বন্ধ দরজার পিছনে করা হয়ে থাকে। নতুন হুমকিগুলোর বিরুদ্ধে ওয়াহাবিদের সংঘবদ্ধ হওয়ার অক্ষমতা সম্পর্কে তৎকালীন বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের এ কড়া মন্তব্যটি সউদী আরবের অত্যন্ত সম্মানিত এবং শক্তিশালী ধর্মীয় সংস্থার জন্য অবমাননাকর ছিল, যা আইএস-এর বিরুদ্ধে ওয়াহাবিদের নিষ্ক্রিয়তার ফলে সৃষ্ট তার হতাশাকে প্রতিফলিত করে। কারণ আইএস নেতাদের অনেকে ওয়াহাবিদের হাতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বা ব্যাপকভাবে ওয়াহাবি মতবাদ ধার নিয়েছে। আইএস ঐতিহাসিক খিলাফতের ঘোষণা দেয় এবং মক্কা ও মদিনায় বিস্তৃত হওয়ার প্রতিশ্রæতি দেওয়ার পর ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন অংশ দখল করে নেয়।

একদিকে উদারপন্থী এবং অন্যদিকে আইএসকে মোকাবেলা করার দ্বৈত চাপটি ওয়াহাবিবাদকে বিভ্রান্ত করে দেয় এবং এর ফলে দেশে এবং আঞ্চলিকভাবে নতুন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে ওয়াহাবিদের পদচারণা কঠিন করে যায়। বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের বিরল মন্তব্যের আট বছর পর তার সেই নেতিবাচকতাকে আরো অনেক এগিয়ে নিয়ে যান এমবিএস। তিনি গত বছর রোজায় যখন পরিবারগুলো টেলিভিশনের চারপাশে জড়ো হতো, তখন একটি বিস্তৃত টিভি সাক্ষাৎকারে ওয়াহাবিজমের বিরুদ্ধে স্পষ্ট মন্তব্য করেন। তিনি সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে বলেন, ‘সউদী আরব মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাবের শিক্ষায় আবদ্ধ নয়।’

শুধুমাত্র এমবিএস’র সাক্ষাতকারে দেয়াই নয়, এমনকি তার সাক্ষাৎকারকারী হিসেবে আবদুল্লাহ আল মুদাইফারকে নির্বাচন করার বিষয়টিও ছিল উল্লেখযোগ্য। কারণ মুদাইফার প্রাক্তন চরমপন্থী বা কট্টর আলেমদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামতে সহনশীলতা এনেছেন। বিন সালমান বলেছিলেন যে, ওয়াহাবিবাদের প্রতিষ্ঠাতা ইবনে আব্দুল ওয়াহাবের শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া একজন মানুষকে পূজা করার সমান, যা প্রতিষ্ঠাতা শেখের প্রণীত শিক্ষা বিরুদ্ধ। সাক্ষাৎকারকারীর প্রশ্নের সম্পূর্ণ উত্তরটি ওয়াহাবি ভিত্তিমূলের প্রতি কঠোর আঘাত এবং অভিশাপ, ‘যখন আমরা একটি নির্দিষ্ট স্কুল বা পন্ডিততকে অনুসরণ করার জন্য নিজেদের প্রতিশ্রæতিবদ্ধ করি, এর অর্থ আমরা মানুষকে আরাধ্য দেবতা বানাচ্ছি।’ (চলবে)



 

Show all comments
  • মুক্তার এ আজম ১ মার্চ, ২০২২, ৬:৪৬ এএম says : 0
    Salafy izm gave birth to the radical violent version of a peaceful religion. Islam is the most peaceful religion amongst others. It's a political idolize not a religious one so Salafy n wahabi izm has to be eliminated from our lives.
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Zabid ১ মার্চ, ২০২২, ৬:৪৬ এএম says : 0
    I don't know why Muhammad bin Abdul Wahab is blamed for corrupt politicians in Saudi.
    Total Reply(0) Reply
  • Ujjal Hasan ১ মার্চ, ২০২২, ৬:৪৭ এএম says : 0
    মুসলমানদের পবিত্র স্থান সৌদি আরব পশ্চিমা আদলে নতুন দুবাই হলে পশ্চিমারা এবং ইসলাম বিরোধীরা খুব খুশি হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Ibrahim Hossain ১ মার্চ, ২০২২, ৬:৪৭ এএম says : 0
    আমি সাধারণ মানুষ ও একজন মুসলমান। আমি বুঝি না আমাদের মধ্যে মতাদর্শ কেন ? আমাদের তো মতাদর্শ হওয়ার কথা ছিলো ১টা। সেটা হলো ইসলাম। এখানে বিভেদ কেন ????????
    Total Reply(0) Reply
  • তারেক মাহমুদ ১ মার্চ, ২০২২, ৬:৪৭ এএম says : 0
    হে আল্লাহ আপনি সউদী আবরসহ সকল মুসলীম দেশগুলোকে ইসলামের পথে পরিচালিত হওয়ার তৌফিক দান করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Monjur Rashed ১ মার্চ, ২০২২, ৬:৪৭ এএম says : 0
    Wahhabism is always a thorn in throat. It can not be swallowed.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ