মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি বিন সালমান ছিলেন নেতিবাচক এবং স্পষ্ট। তিনি এই গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত নেতাদের কারাবন্দী করেন এবং তাদেরকে বিদেশী মতাদর্শ হিসেবে চিহ্নিত করেন। মুসলিম ব্রাদারহুড ছিল মিশরীয়। তাই তাদের ‘সুরুরিবাদ’ তথা সালাফিবাদ এবং রাজনৈতিক ইসলামের একটি সঙ্কর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
সালাফিবাদের আরেকটি শাখা, যেটি ব্যাপকভাবে ওয়াহাবিবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল, কিন্তু সিরিয়া-আলবেনিয়ান নেতা মুহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের সাথে যুক্ত ছিল, সেটিকেও আমদানিকৃত আখ্যা দিয়ে সউদী আরবে বর্জন করা হয়। ওয়াহাবিবাদ মতবাদকে মোকাবেলা করার জন্য এমবিএস একটি ভিন্ন এবং ক্রমবর্ধমান পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। সময়ের সাথে সাথে শক্তিশালী হয়ে ওঠা তার প্রচারণায় গত বছর তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন যে, কোনও একক ব্যক্তি বা আদর্শের সাথে সউদী আরবের আবদ্ধ থাকা উচিত নয়।
একভাবে, বর্তমান সউদী ক্রাউন প্রিন্স ওয়াহাবিবাদের সাথে তাই করছেন, যা তার পিতামহ এবং তৃতীয় সউদী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ ইবনে সউদ ১৯২৯ সালে তার প্রাক্তন মিত্রদের সাথে করেছিলেন। সেসময় ইখওয়ান মিন-তা-আল্লাহ (আল্লাহর প্রতি অনুগতদের ভাইয়েরা) নামে পরিচিত যাযাবর এবং উগ্র বেদুইন উপজাতি ইবনে সউদের মৈত্রী অস্বীকার করেছিল। ইখওয়ানরা ইসলামের সত্য ও বিশুদ্ধ বাণী প্রচারের নামে এবং অ-ওয়াহাবী ভ‚মি জয়ের নামে ইরাক, জর্ডান এবং কুয়েতে অভিযান চালিয়েছিল। ইবনে সউদ তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান চালান এবং সেই বছরের বসন্তে সাবিলার (বা সাবলাহ) যুদ্ধে তাদের পরাজিত করেন। তারপর ১৯৩০ সালের জানুয়ারিতে তিনি এই উপজাতিদের বিরুদ্ধে চ‚ড়ান্ত জয় লাভ করেন। ইখওয়ান উপজাতি আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের মধ্যে অনেকে পরে সউদী ন্যাশনাল গার্ডে পরিণত হয়েছিল।
এর ঠিক অর্ধশতাব্দী পর তাদের একজন বিদ্রোহী নেতার সন্তান জুহায়মান আল-ওতাইবির দ্বারা মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ দখলের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ১৯৭৯ সালে তাদের আন্দোলনটি প্রায় শেষ হয়ে যায়। নতুন বিদ্রোহটি তৎকালীন বাদশাহ খালিদ বিন আবদুল আজিজকে শঙ্কিত করেছিল এবং তাকে তেল রাজস্বের মাধ্যমে রাষ্ট্রের আধুনিকীকরণের কয়েক দশকের প্রচেষ্টা বন্ধ রেখে ওয়াহাবিদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্তুষ্ট করতে এবং কট্টর ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য করেছিল। ওয়াহাবিবাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার সউদী আরবের নতুন নীতিতে অন্যান্য ভ‚-রাজনৈতিক ঘটনা যেমন, ইরানী বিপ্লব এবং ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আক্রমণ সমানভাবে অবদান রেখেছে। এর মানে হ’ল যে, দেশটি ম‚লত ১৯৮০ এর দশক জুড়ে ওয়াহাবি এবং ইসলামপন্থী মৌলবাদীদের সহ্য করেছে।
বিন সালমান প্রায়শই বাদশাহ খালিদ এবং তার উত্তরসূরিদের এই রাষ্ট্রীয় সমঝোতাকে একটি ধাক্কা হিসাবে উল্লেখ করেছেন এবং দেশকে উন্মুক্ত করার এবং চরমপন্থীদের দমন করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এমবিএস এমন কিছু হুমকি মোকাবেলা করছেন, যেগুলির কারণে প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে তার চাচা মাথা নত করেছিলেন এবং এরও অর্ধ শতাব্দী আগে তার দাদা সেগুলিকে পরাজিত করেছিলেন। এসময় সুফিবাদের আধ্যাত্মিকতা, প্রগতিশীল ও মধ্যপন্থী আলেমদের গোঁড়ামিমুক্ত ধারণা, শিয়া এবং অন্যান্য অ-সুন্নি সম্প্রদায়ের ভিন্ন ধারার অনুশীলনকে বহু ঈশ্বরবাদী বা বিধর্মী তকমা দিয়ে ওয়াহাবিবাদ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
এরপর, আঞ্চলিক যুদ্ধে মৌলবাদী মতাদর্শের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা, স্যাটেলাইট চ্যানেলের পাশাপাশি প্রযুক্তির উৎকর্ষতা এবং ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে ও ২০০০-এর দশকের প্রথম দিকে তরুণ্যের জাগরণের সাথে সাথে সমসাময়িক ওয়াহাবিবাদ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে শুরু করে। সূত্র : নিউজ লাইন্স ম্যাগাজিন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।