পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৬ ধর্ষককে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে গোপালগঞ্জের ১নং বিচারিক আদালতের সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ূন কবিরের আদালতে হাজির করে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানব›দি রেকর্ড করা হয়।
গত শুক্রবার গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে র্যাব ওই ৬ জনকে গ্রেফতার করে। পরে ভিকটিমকে নিয়ে ওই আসামীদের শনাক্ত করে র্যাব। আসামীর হলো, রাকিব মিয়া ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪),নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪) ও তূর্য মোহন্ত (২৬)। এর আগে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছিল। এদিকে র্যাব ও পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
এঘটনায় র্যাব-৮ এর সহকারি পরিচালক (এএসপি) মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমরা যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছি ভিকটীমকে নিয়ে তাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে। গত রোববার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনির অন্য সদস্যরা কাকে কিভাবে গ্রেফতার করেছে-তা আমরা জানিনা। এটা তাদের ব্যাপার।
অপরদিকে, এ ব্যপারে মুখ খুলতে রাজি হননি গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দীকা। তিনি সাংবাদিকদের জানান, মামলা তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে কিছুই বলা যাবে না।
আদালত চত্বরে হরিজন সম্প্রদায়ের কযেকজনের সাথে কথা বললে বাংলাদেশ হরিজন সম্প্রদায় গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শিপন জমাদ্দার বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় র্যাব ইতোমধ্যে ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে। ভিকটিমও ওই ছয়জনকে শনাক্ত করেছে। ছয়জনের মধ্যে হরিজন সম্প্রদাযের কেউ নেই। তাহলে পুলিশ কেন আমাদের সম্প্রদায়ের দু’জনকে ওই মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠালো?
এদিকে ছাত্রী ধর্ষনের ঘটনায় ৪র্থ দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় ধর্ষণের ঘটনার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৬ ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়। প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করে। পরে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। গোটা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে আবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয় মিছিলটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং ছাত্র ও শিক্ষকদের সুরক্ষার দাবিতে ৩ দিন ধরে নানান কর্মসূচি পালন করে আসছি আমরা। আমাদের সব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এর আগে বেলা ১১টায় ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পাটগাতী-গোপালগঞ্জ সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোপালগঞ্জ জেলা পরিবার। মানববন্ধনে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন।
এর আগে সকাল ১০টায় এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং উপাচার্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্ষকদের দোসররা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে তারা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে। এ ছাড়া বিকেল ৪টায় ক্যাাম্পাসে ধর্ষণ বিরোধী মঞ্চ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সন্ধ্যায় বের করা হয় আলোর মিছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার বিষয়ে উপাচার্যের সাথে শিক্ষকদের সভা চলছে। সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের একছাত্রী বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তার এক বন্ধুর সাথে গোপালগঞ্জ শহরের হেলিপ্যাড থেকে নবীনবাগের মেসে ফিরছিলেন। এ সময় রাকিব মিয়ার নেতৃত্বে ধর্ষকরা তাদের গতিরোধ করে। বন্ধুকে মারধর করে ওই ছাত্রীকে পার্শ¦বর্তী জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ ভবনের ভেতরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।