গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
পুলিশ বাহিনীতে থাকা মন্দ লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদ চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। আজ শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সম্মিলনের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশে বাহিনীতে থাকা মন্দ লোকের বিরুদ্ধে জিহাদ চলছে। বাহিনীতে ভালো মানুষের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং ভালো মানুষকে রিক্রুট করার জন্য পুলিশের আইজিপি দক্ষতার সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারো কাছেই তিনি নতি স্বীকার করছেন না। পুলিশ বাহিনীতে মেধা অনুযায়ী যাদের চাকরি পাওয়া দরকার তাদেরই চাকরি হচ্ছে। একটি পয়সা খরচ করা ছাড়াই তাদের চাকরি হচ্ছে।
পুলিশের পদোন্নতির বিষয়ে তিনি বলেন, সেন্ট্রালি পরীক্ষা হচ্ছে। পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সদস্য তার যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি পাবেন। তদবির, টাকা-পয়সা খরচ করার কোনো সুযোগ এখানে নেই। বাহিনীতে পদায়ন প্রক্রিয়া আমরা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পদোন্নতিতে কোনো টাকা-পয়সা লেগেছে, এমন একটি বিষয় দেখাতে পারবেন না। এটা আমার প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের মতো ভেতর থেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে সদস্য দুর্ব্যবহার ও খারাপ আচরণ করছে, তার বিষয়ে ন্যূনতম কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু অনুরোধ থাকবে, ধারণার বশবর্তী হয়ে সবসময় আমাদের (পুলিশের) সমালোচনা করবেন না। আপনি থানায় আসেন, দেখেন পরিবর্তনটা কী। যদি মনে করেন কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন হয়নি, তবে আমাদের দরজা খোলা আছে, পরামর্শ দেন, কথা বলেন। একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন রাজধানীর পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আজকে আমার গায়ে যে পোশাক আছে, কালকে আমি আপনার লাইনে এসে বসব। কারণ আমার গায়ে ইউনিফর্ম থাকবে না, আমার সন্তানের গায়ে ইউনিফর্ম থাকবে না। সে সময় আমার ও আমার সন্তানের নিরাপত্তাও কিন্তু থেকে যাওয়া এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উপর নির্ভর করে। আমরা এমন একটি বাহিনী তৈরি করে রেখে যেতে চাই আপনার বিপদে আপনার পাশে দাঁড়াবে, আমার বিপদে আমার পাশে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, নগরীর কোথাও কোনো অপরাধ ও অবিচার হতে দেখলে আমাদের অবহিত করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি, পাশে আছি। আপনার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায় অবিচারের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। আমি এটুকু আশ্বস্ত করতে পারি, নগরীর দুই কোটি মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছি।
উৎসবের সময় নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যরা ছুটি পায় না উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নগরবাসী রাতে যখন ঘুমায় পুলিশ সদস্যরা তখন জানমাল ও সম্পত্তির পাহারা দেয়। আপনারা ঈদ ও পূজা উদযাপন করছেন। কিন্তু পুলিশের কারো ছুটি নেই। আমরা আমাদের বাবা-মা পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করার সুযোগ পাই না। জনমানুষ যাতে এই উৎসবগুলো নিরাপদে পালন করতে পারে, সেজন্য আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তখন কাজ করি। তিনি বলেন, আপনি-আপনার সন্তানের হাত ধরে তার স্কুল অথবা পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন আর আমি কন্ট্রোল রুমে বসে থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছি। অথচ আমার সন্তানও পরীক্ষার্থী। আপনার সন্তানকে আমার সন্তান মনে করেই আমরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমি আপনার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলাম, আর আপনি আমার সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো ধারণা ছাড়াই বলে দেন ঘুষখোর। এতে বন্ধুত্ব কি প্রত্যাশা করতে পারেন?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।