মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেন যুদ্ধের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। শনিবার সকালে তার কার্যালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে ভিডিওতে জনগণের উদ্দেশে বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করছে না। দেশটির সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করছে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে দেশটির ক্ষমতা দখলের আহ্বান জানানোর পর থেকেই এমন খবর ছড়িয়েছে। তবে পুরো বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর ভুয়া। এটি বিশ্বাস না করার আহ্বান জানান তিনি। কিয়েভের রাজপথে দাঁড়িয়ে নিজের হাতে ধারণ করা এক ভিডিওতে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এখানে, আমরা অস্ত্র নামিয়ে রাখবো না। দেশকে রক্ষা করবো সবাই।’ এছাড়া দেশ ছাড়ার খবরও নাকচ করে দেন তিনি। ইউক্রেনে এখন সর্বাত্মক যুদ্ধ। পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিং করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রুশ বাহিনী কিয়েভে দখলের আগেই জেলেনস্কিকে ইউক্রেন ছাড়তে সহায়তার একটি প্রস্তাব দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো এমনটাই জানাচ্ছে। তবে তা প্রত্যাখান করে দিয়েছেন তিনি। অপর এক খবরে বলা হয়, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধে নামার পর খুব দ্রুতই যুদ্ধের কঠিন অংশটুকু সামনে চলে আসায় তাদের অগ্রগতি শ্লথ হয়ে গেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে হামলার প্রথম দিন তার জেনারেলরা ও সামরিক বাহিনী স্থল আক্রমণের ‘টেক্সটবুক কৌশল’ অনুসরণ করেছিল। ইউক্রেনের আকাশ দখল নিতে এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে রাজধানী কিয়েভ অভিমুখে রওনা দেওয়া বাহিনী যেন দ্রুত পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিতে তারা ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার ওপর ভূমি, সমুদ্র ও আকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল। সীমান্ত অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকে পড়া বাহিনী অল্প সময়ের মধ্যে কিয়েভের কাছে পৌঁছে যায়, পেয়ে যায় চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রসহ অনেকগুলো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ; কিন্তু এরপর থেকেই রুশ বাহিনীর এগুনোর গতি ধীর হয়ে আসে বলে এক প্রতিবেদনে বলেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। পেন্টাগন কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা বলছেন, মাথার ওপরে থাকা যুদ্ধবিমানের সুরক্ষা নিয়ে ট্যাংক আর কামান নিয়ে অন্য দেশের সীমান্তে ঢুকে পড়া এক জিনিস আর শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং জীবন দিতে প্রস্তুত লোকজনের সমন্বয়ে গঠিত সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করা সম্পূর্ণ অন্য জিনিস। ইউক্রেনে ঢোকার একদিনের মধ্যেই ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধের কারণে রুশ বাহিনী কিছু ‘মোমেন্টাম’ হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রাশিয়া এখনো জনবহুল কোনো শহর দখলে নিতে পারেনি বলে শুক্রবার পেন্টাগনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কেবল তাই নয়, রাশিয়া এখনও ইউক্রেনের আকাশের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণও নিতে পারেনি; এর আংশিক কারণ ইউক্রেনীয়রা সহজে পরিবহনযোগ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করছে; অন্য কারণ হচ্ছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের পুরনো আকাশ প্রতিরক্ষা স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যা একই সঙ্গে রাশিয়ার গোয়েন্দা তখ্যে ঘাটতির বিষয়টিও উন্মোচন করে দিয়েছে। ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার তুমুল ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু দেশটির বিমান বাহিনী এখনও আকাশে বিমান ওড়াতে পারছে এবং আকাশে রাশিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বাধা দিচ্ছে, বলেছেন মার্কিন ওই কর্মকর্তা। কর্মকর্তারা আরও বলছেন, রাশিয়া তার প্রাথমিক অভিযানের সিংহভাগই চালিয়েছে দিনের বেলায়, যা তাদের রাতে লড়াইয়ের সক্ষমতা কম বলেই ধারণা দিচ্ছে। “ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী দৃঢ় প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে,” বলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দাপ্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল জিম হকেনহল। পেন্টাগন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলছেন, রাশিয়া এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে যে সেনা পাঠিয়েছে, তা সীমান্তে জড়ো করে রাখা দেড় লাখ থেকে এক লাখ ৯০ হাজারের মধ্যে থাকা সেনার এক তৃতীয়াংশ; মস্কো যে কোনো সময়ে আরও সেনা পাঠিয়ে চাপ বাড়াতে পারে। রাশিয়ার অভিযান এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে; ইউক্রেনের সিংহভাগ দখলে তাদের দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগতে পারে, মত সামরিক কর্মকর্তাদের। কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়া দক্ষিণে মারিওপোলের কাছে আজোভ সাগর থেকে আরেকটি আক্রমণ শুরু করতে যাচ্ছে। কয়েক হাজার রুশ নৌ পদাতিক সেনা সেখানে এরই মধ্যে জড়ো হয়েছেন; শহরের দিকে অগ্রসর হওয়াই তাদের উদ্দেশ্য বলে অনুমান সামরিক কর্মকর্তাদের। সাইবার যুদ্ধ, ট্যাংক, ভারি অস্ত্রশস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ আর সেনা সংখ্যায় রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেন খুবই দুর্বল। বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।