Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিয়েভে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:১১ পিএম

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কিয়েভ শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে নয় কিলোমিটার দূরের ওবোলোন এলাকায় রাশিয়ার ট্যাঙ্ক চলছে। কিছুক্ষণ আগেই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, রাশিয়ার সৈন্যরা শহরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।

ভিডিওটি স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ঘর থেকে ধারণ করেছেন। এলাকটি ওবোলোন বলে বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে। কিয়েভ থেকে বিবিসির সংবাদদাতা পল অ্যাডামস টুইট করেছেন, গত ১০ মিনিটে কিয়েভে ছোট অস্ত্রের দুই দফা গুলির আওয়াজ শোনা গেল। কি ঘটছে, বোঝা অসম্ভব। তবে গুজব ছড়িয়েছে যে, রাশিয়ার ‘নাশকতাকারীরা’ এর মধ্যেই শহরের মধ্যে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক ওয়েবসাইট বেলিংকাটের নির্বাহী পরিচালক ক্রিস্টো গ্রোজেভ লিখেছেন, ‘কিয়েভের শহরতলীর আবাসিক এলাকায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।’ ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক অ্যান্তন হেরাসচেঙ্কো বলেছেন, উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ট্যাঙ্ক বহর নিয়ে রাজধানী কিয়েভ দখলের জন্য এগিয়ে আসছে রাশিয়া।

কিয়েভ নিয়ে রাশিয়ার পরিকল্পনার কথা ইউক্রেনের প্রাভদা ওয়েবসাইটকে জানিয়েছে একটি গোয়েন্দা সূত্র। যদিও এটি আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য নয়, তবে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে সম্পর্কে সেখানে যা বলা হয়েছে:

কিয়েভের প্রধান একটি বিমানবন্দর দখল করে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করা, যার মাধ্যমে তারা ১০ হাজার সৈন্য নামাবে। সেই সময় সীমান্তে হামলা অব্যাহত রেখে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে ব্যস্ত রাখবে। কিয়েভের বৈদ্যুতিক এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় নাশকতা করে আতঙ্ক তৈরি করা। মানুষজনকে আতঙ্কিত করে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে ঠেলে দিয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি।

কেবিনেট, পার্লামেন্ট ভবন সহ সরকারি ভবনগুলো দখল করা। সেই সঙ্গে নেতৃবৃন্দকে আটক করে রাশিয়ার শর্তে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা। রুশপন্থী নেতাদের ক্ষমতায় এনে সাবেক পূর্ব এবং পশ্চিম জার্মানির মতো ইউক্রেনকে দুইভাবে বিভক্ত করা। তবে এসব তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে: ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোর নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন। কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে রাশিয়ার ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শীর্ষ পর্যায়ের রুশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

যুক্তরাজ্য পাঁচটি রাশিয়ান ব্যাংকের সম্পদ জব্দ করেছে এবং সেসব ব্যাংককে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বাদ দিয়েছে। একই ধরণের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা আর জাপানও। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ায় হাই-টেক যন্ত্রপাতি রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে কোনো দেশই এই মুহুর্তে ইউক্রেনের সরাসরি সমর্থনে সেখানে সেনা পাঠাবে না বলে জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে সাত হাজার অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে জার্মানিতে ‘নেটো জোটের মিত্রদের আশ্বস্ত’ করার লক্ষ্যে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন পূর্ব ইউরোপে নেটো মিশনে ৪৬০ জন সেনা সদস্য পাঠাবে তারা। তবে কানাডা ইউক্রেনে সেনা সহায়তা পাঠানোর চিন্তা করছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু তারা জানায়নি।

ওদিকে ইউরোপের বিভিন্ন শহরের পাশাপাশি রাশিয়ার অনেক শহরেও ইউক্রেনের সমর্থনে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ ও মিছিল হয়েছে। রাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করায় অন্তত ৭০০ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। জাতিসংঘের ধারণা, এরই মধ্যে অন্তত এক লাখ মানুষ যুদ্ধের সহিংসতা থেকে বাঁচতে ঘর ছেড়েছে। ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী দেশ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও মলদোভায় শরণার্থী পরিবারের সদস্যদের আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ