Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনায় জমজ কন্যা মনি ও মুক্তাকে হত্যা করেন মা নিজেই !

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:৩০ পিএম

জমজ শিশু মনি ও মুক্তার প্রতিনিয়ত কান্নাকাটি ও স্বামীর অবহেলায় বিরক্ত হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর কন্যা মৃতদেহ দুটি পুকুরে ফেলে দেয় মা। পুলিশের কাছে এমনই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মা কানিজ ফাতেমা কণা। এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় নিহত শিশুদের পিতা বাদী হয়ে কণাকে আসামী করে শুক্রবার রাতে মামলা দায়ের করেছেন (যার নং-১০, ১৯-২-২০২২ইং)। খুলনা তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে খোরশেদের বাড়ীর পুকুর থেকে শুক্রবার সকালে জমজ কণ্যা শিশুর লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। আজ শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তি রেকর্ডের জন্য নিহত শিশুদের মা কানিজ ফাতেমা কণাকে আদালতে আনা হবে বলে জানিয়েছেন তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহুরুল হক।

তিনি জানান, বছর চারেক আগে তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের খোরশেদের কন্যার সাথে বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার মাতারচর গ্রামের মোল্লা আবু বক্কারের ছেলে মাসুম বিল্লাহর বিয়ে হয়। মাসুম বিল্লাহ একটি ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। বিয়ের তিন বছরের মাথায় তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা অন্তস্বত্তা হন। এরপর কণাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্বামী মাসুম বিল্লাহ্। বাচ্চা হওয়ার পর থেকে গত দুই মাস ১১ দিন বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন কণা। এতে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এদিকে, বাচ্চা দু’টি প্রচুর কান্নাকাটি করতো। এ বিষয়ে কণা স্বামীর সাথে যোগাযোগ করেন। বলা হয়, আগামী মাসে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। এতে বিরক্ত হয়ে জমজ শিশুকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে কণা। পরে হত্যাকান্ডটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শিশুদের লাশ পুকুরে ফেলে দেয় মা কণা।
বালিশ চাপায় হত্যার বর্ণনায় পুলিশকে যা বলেছে কণা : শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে ২ মাস ১১দিন বয়সী মনি ও মুক্তা কান্নাকাটি করছিল। প্রথমে কনা তাদের দুধ খাওয়ায়। এরপরও তারা থামছিল না। রাত ৩টার দিকে বাচ্চা দু’টির মুখে চড় মারে কনা। পরবর্তীতে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর কি করবেন ভেবে পারছিল না কনা। তাই নাটক সাজানোর জন্য বাচ্চা দু’টিকে পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে।
হত্যাকাণ্ড উদঘাটন যেভাবে : মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লাশ দু’টির সুরতহাল রির্পোট করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এরপর ওই পরিবারের প্রতিটি সদস্যর ওপর নজর রাখেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তেরখাদা থানার এসআই মোঃ এনামুল হক। পরবর্তীতে বিকেলে কণা, তার বাবা ও মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কণা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। কণা জমজ শিশু হত্যার কারণ পুলিশের নিকট ব্যাখ্যা করেন। পরে অপর দু’জনকে ছেড়ে দিয়ে কনাকে আটক রাখে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাতে জমজ শিশু হত্যার দায়ে নিহতদের পিতা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।



 

Show all comments
  • শামীম ৩০ মে, ২০২২, ৯:৩০ এএম says : 0
    খুবই দুঃখজনক ঘটনা...বাবাকে ও আইনের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করি...কারন তারও এখানে অবহেলা লক্ষ্মণীয়..
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা

৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ