যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
বাজার থেকে নানা ধরনের খাবার, শাক-সবজি কিংবা ফলমূল নিয়মিত কিনে খান সবাই। তবে খাবার কিনে আনার পর তা সঠিকভাবে সংরক্ষণ কিংবা পরিষ্কার করার বিষয়ে অনেকেই নানা ধরনের ভুল করেন। আর এ কারণেই ভুগতে হয় ফুড পয়জনিংসহ নানা সমস্যায়।
অনেকেই খাদ্যের নিরাপত্তার বিষয়ে অবগত নন। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে কীভাবে খাদ্যের নিরাপত্তা বজায় রাখা যায়।
এজন্য ৪টি উপায় অনুসরণ করতে বলা হয়েছে সবাইকে। এক্ষেত্রে বাড়িতে ৪টি সহজ ধাপ অনুসরণ করে- পরিষ্কার, আলাদা, রান্না ও সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিবারকে ফুড পয়জনিং থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
পরিষ্কার করুন
বিভিন্ন ফল-মূল কিংবা শাক-সবজি কিনে আনার পরপরই তা চলমান পানির নীচে রেখে ধুয়ে নিন। খাদ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী জীবাণু অনেক জায়গায় বেঁচে থাকতে পারে। এমনকি আপনার রান্নাঘরের চারপাশেও ছড়াতে পারে।
খাবার তৈরির আগে, খাওয়ার আগে ও পরে সাবান পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য হাত ধুয়ে নিন। গরম সাবান পানি দিয়ে বাসনপত্র, কাটিং বোর্ডসহ চুলা, বেসিন ইত্যাদি ধুয়ে ফেলুন।
মাছ-মাংস আলাদা রাখুন
কাঁচা মাংস, মুরগি, সামুদ্রিক খাবার ও ডিম সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে অন্যান্য খাবারে জীবাণু ছড়াতে পারে। এজন্য এসব খাবারের আলাদা কাটিং বোর্ড ও প্লেট ব্যবহার করুন।
মুদি কেনাকাটার সময় কাঁচা মাংস, মুরগি, সামুদ্রিক মাছ ও ডিমের সঙ্গে অন্যান্য জিনিস একত্রে রাখবেন না। এসব কাঁচা খাবার রেফ্রিজারেটরে অন্যান্য খাবার থেকে আলাদা রাখুন।
যে ৪ উপায়ে খাদ্যের নিরাপত্তা বজায় রাখবেন
সঠিক তাপমাত্রায় রান্না করুন
খাবার যদি সঠিক তাপমাত্রায় রান্না করা হয়, তাহলে এর অভ্যন্তরীণ জীবাণু খুব দ্রুত ধ্বংস হয়ে যায়। আপনার খাবার নিরাপদে রান্না করা হয়েছে কি না তা জানার একমাত্র উপায় হলো একটি খাদ্য থার্মোমিটার ব্যবহার করা।
খাবারটি সঠিক উপায়ে রান্না হয়েছে কি না কিংবা নিরাপদ কি না তা খাবারের রং ও টেক্সচার দেখে কখনো পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই খাদ্য থার্মোমিটার ব্যবহার করুন। কোন খাবার কতটুকু তাপমাত্রায় রান্না করবেন জেনে নিন-
>> গরুর মাংসসহ বিভিন্ন ধরনের লাল মাংস ১৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রান্না করতে হবে। রান্নার পর অন্তত ৩ মিনিট অপেক্ষা করে খেতে হবে।
>> পাখনাসহ মাছ ১৪৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে ও
>> চিকেন ও টার্কি ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রান্না করতে হবে।
খাবার সংরক্ষণের সঠিক নিয়ম
রান্নার পর বিভিন্ন ধরনের খাবার ঘরের তাপমাত্রায় ৪০-১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রেখে দিলে দ্রুত এমন খাবারে ব্যাকটেরিয়া বাড়ে।
পচনশীল খাবার কখনো ২ ঘণ্টার বেশি বাইরে রাখা যাবে না। আর ঘরের তাপমাত্রা যদি ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়, তাহলে বাইরে একঘণ্টার বেশি এমন খাবার রাখা যাবে না।
তাই পচনশীল খাবার ২ ঘণ্টার মধ্যে ফ্রিজে রাখুন। ফ্রিজে রাখা খাবার সঠিক উপায়ে সংরক্ষণের পর বের করে ঠান্ডা পানিতে বা মাইক্রোওয়েভে নিরাপদে গরম করতে পারেন।
তবে ঘরের তাপমাত্রা রেখে কখনো খাবার গলাবেন না। এর ফলে ওই খাবারে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বেড়ে যাবে।
আজ জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস। দেশে পঞ্চমবারের মতো দিবসটি পালন হচ্ছে। ২০১৮ সালে ২ ফেব্রুয়রিকে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালন হচ্ছে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘সুস্বাস্থ্যের মূলনীতি, নিরাপদ খাদ্য ও স্বাস্থ্যবিধি’। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) দিবসটি পালন করছে প্রতিবছর। এ সংস্থার প্রতিষ্ঠার দিনটিকেই এই দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
সূত্র: সিডিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।