মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অন্তঃসত্ত্বারা যে কোনো ধরনের কোভিড টিকা নিলে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাদের শিশু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহতা থেকে অনেকটাই নিশ্চিত হতে পারে। টিকা নেওয়া প্রসূতির সদ্যোজাতটি করোনায় সংক্রমিত যদি হয়ও তা ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা প্রায় নেই বললেই চলে। এই প্রথম কোনো গবেষণা এ আশাব্যঞ্জক খবর দিল। গবেষণাটি চালিয়েছে আমেরিকার ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’-এর ইনফ্যান্ট আউটকাম্স মনিটরিং রিসার্চ অ্যান্ড প্রিভেনশন ব্রাঞ্চ। গত মঙ্গলবার গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে সিডিসি-র ‘মর্বিডিটি অ্যান্ড মর্টালিটি উইক্লি রিপোর্ট’-এ।
মাতৃজঠরে ভ্রুণকে চারপাশ থেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখে প্লাসেন্টা। যা আদতে ভ্রুণকে নিরাপদে রাখার একটি আবরণ। অন্তঃসত্ত্বার দেহের রক্তরস ও অন্যান্য পুষ্টিরস এ প্লাসেন্টার মধ্যে দিয়েই ভ্রুণে প্রবেশ করে। ভ্রুণের বিকাশে বড় ভূমিকা নেয়। আগের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিডে সংক্রমিত হলে বা কোভিড টিকা আগে নেওয়া থাকলে অন্তঃসত্ত্বাদের শরীরে করোনার সংক্রমণ রোখার জন্য যেসব অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা রক্ত সংবহনের মাধ্যমে ওই প্লাসেন্টার মধ্যেও প্রবেশ করে। ফলে, সেই অ্যান্টিবডিগুলো ভ্রুণেও প্রবেশ করে।
কিন্তু অন্তঃসত্ত্বার শরীরে তৈরি হওয়া সেসব অ্যান্টিবডি ডেলটা, ওমিক্রনসহ করোনার সব ক’টি রূপের ভয়াবহতা থেকে সদ্য-ভূমিষ্ঠকে বাঁচাতে পারে কি না তা বিজ্ঞানীদের এত দিন জানা ছিল না। সিডিসি-র গবেষকদলের প্রধান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডানা মিনে-ডেলম্যান বলেছেন, ‘আমাদের গবেষণাতেই প্রথম জানা গেল, অন্তঃসত্ত্বার শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলো কোভিড সংক্রমণের ভয়াবহতা থেকে সদ্যোজাতদের প্রায় পুরোপুরিই রক্ষা করতে পারে। সম্পূর্ণ নতুন তথ্য পাওয়া গেল’।
কত দিন পর্যন্ত সেসব অ্যান্টিবডি রক্ষা করতে পারে সদ্যোজাতকে, তা-ও জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণাপত্রটি বলছে, জন্মের পর থেকে অন্তত ৬ মাস কোভিড সংক্রমণের ভয়াবহতা থেকে রেহাই পাওয়ার ব্যাপারে সুনিশ্চিত থাকতে পারে সদ্যোজাতরা। মায়ের শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলির দৌলতে। ফলে, জন্মের পর ৬ মাসের মধ্যে কোভিডে সংক্রমিত হলেও সদ্যোজাতদের আর হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় না। কোভিড ভয়াবহ হয়ে ওঠার কোনও প্রশ্নই থাকে না।
তথ্য ও পরিসংখ্যানের নিরিখে সিডিসি-র ওই গবেষকদল জানিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বা তার আগে যদি কেউ কোভিড টিকা নিয়ে থাকেন তা হলে তাদের ৬ মাস বা তার কমবয়সি শিশুদের মধ্যে অন্তত ৮১ শতাংশ সংক্রমিত হলেও হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না। মায়ের দেওয়া অ্যান্টিবডিই শিশুদের কোভিডের ভয়াবহতা রুখে দিতে পারছে।
পক্ষান্তরে, গবেষকরা এও দেখেছেন, যেসব সদ্যোজাতকে কোভিডে সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বা সংক্রমণ যাদের খুব ভয়াবহ হয়ে উঠছে, তাদের ৮৪ শতাংশের ক্ষেত্রেই তাদের মায়েরা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বা তার আগে কোনো কোভিড টিকাই নেননি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর প্রথম মাস থেকে নয় মাসের মধ্যে যে কোনো সময় টিকা নিলেই তা সদ্যোজাতের শরীরে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করে দিতে পারছে। তবে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরপরই টিকা নেওয়া থাকলে সেই কাজটা আরো ভাল হচ্ছে। কারণ, সংক্রমণ বা টিকা নেওয়ার পর শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হতেও কিছুটা সময় লাগে।
গবেষণা জানিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরের ২১ সপ্তাহে বা পাঁচ মাসের মধ্যে টিকার সবক’টি পর্ব নেয়া থাকলে সদ্যোজাতের (৬ মাসের মধ্যে) সংক্রমণ ৮৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে না। সদ্যোজাতকে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হচ্ছে না। ওই সময়ের আগে অন্তঃসত্ত্বারা সবক’টি কোভিড টিকা নিলেও তা তাঁদের সদ্যোজাতদের রক্ষাকবচ হয়ে উঠতে পারছে অনেক কম- মাত্র ৩২ শতাংশ ক্ষেত্রে। সূত্র : ইউএসএ টুডে, টাইম ডটকম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।