পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সামরিক অস্ত্রশস্ত্রে প্রতিটি দেশই এখন অনেক উন্নত হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে নবতম সংযোজন ড্রোন। আধুনিক সময়ে বড় বড় যুদ্ধে ড্রোন ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ড্রোন হলো মানববিহীন যুদ্ধবিমান, যা আধুনিক অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা সুসজ্জিত থাকে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে পারে। এমনকি ড্রোনের আঘাতে যুদ্ধের ট্যাঙ্কও নিমিষে উড়ে যেতে পারে। আধুনিক ড্রোনের সামনের ছুঁচালো অংশে একটি সেন্সর যুক্ত ক্যামেরা বসানো থাকে যা দিয়ে লক্ষ্যবস্তুর ওপর নজরদারি চালানো হয়। মূলত স্থিতিশীলতার জন্য এসবের শেষ ভাগ ভি-আকৃতির হয়।
এগুলো মূলত জিপিএস বা লেজার পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা যুক্ত থাকে। ক্যামেরার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুর গতিবিধির ওপর নজর রেখে এই ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়। ড্রোনের দৈর্ঘ্য সাধারণত ১১ মিটার বা ৩৬ ফুট-এর আশেপাশে থাকে। উচ্চতা হয় ৩.৫-৪ মিটার। একটি রিপার ড্রোন প্রতি ঘণ্টায় সর্বাধিক ৪৬৩ কিলোমিটার যাত্রাপথ অতিক্রম করতে পারে। সামরিক ড্রোনের আদর্শ উদাহরণ ‘এমকিউ-১ প্রিডেটর’। এটি আমেরিকার একটি সামরিক ড্রোন। আমেরিকার সঙ্গে আফগানিস্তান, ইরাক যুদ্ধে এটি অন্যতম প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছিল।
ড্রোনের উত্তরসূরি রিপার ড্রোনের তুলনায় বড় এবং ভারী ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বাগদাদ বিমানবন্দরের বাইরে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যায় রিপার ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। আধুনিক সময়ে কয়েকটি রক্তাক্ত যুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করেছে ড্রোন। সাম্প্রতিককালে সরকারবিরোধী টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সদস্যদের আক্রমণের মুখে থাকা আদ্দিস আবাবা সরকারের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে ড্রোন হামলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
ইথিওপিয়ান সরকারও তুরস্ক ও ইরান থেকে সশস্ত্র ড্রোন কিনেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত একইভাবে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে জেনারেল খলিফা হাফতারকে ড্রোন সরবরাহ করেছিল বলে ধারণা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সশস্ত্র ড্রোনের একটি সিদ্ধান্তমূলক প্রভাবও রয়েছে। ত্রিপোলিতে লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের ক্ষমতা টেকাতে রয়েছে ড্রোনের ভূমিকা। তবে ড্রোন হামলা প্রায়ই জটিল আইনি ও নৈতিক মতবিরোধ তৈরি করে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির মাধ্যমে ড্রোন ব্যবহার বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সাফল্য আসেনি কখনো।
আগে মূলত আমেরিকা এবং ইসরাযইল যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করত। আমেরিকা এবং ইসরায়েল ছাড়াও আরও অনেক দেশ সামরিক ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছে। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানসহ বিভিন্ন যুদ্ধে এখন মানববিহীন ড্রোন ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে একশটিরও বেশি দেশ এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছে এ যন্ত্র রয়েছে। অনেক প্রতিরক্ষা সংস্থার কাছেও সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহারের ছাড়পত্র রয়েছে। সূত্র ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।