Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ব্যাংকে থাকা শত কোটি টাকার কোনো দাবিদার নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে দাবিহীন আমানত হিসাবে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে বছরের পর জমা রয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা। মালিক না পাওয়া এসব অ্যাকাউন্টের টাকার পরিমাণ হাজার বা লাখ নয়, ছাড়িয়ে গেছে শত কোটি টাকা। কোনো ব্যাংকে টাকা জমা আছে কিন্তু ১০ বছর ওই আমানতের দাবিদার না থাকলে সেটাকে ‘আনক্লেইমড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট’ (অদাবিকৃত অর্থ) হিসেবে গণ্য করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই অ্যাকাউন্টের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করার নির্দেশনা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয় ১৫ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকার অদাবিকৃত অর্থ। এর পর ২০১৮ সালে জমা পড়ে ১০ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার, ২০১৯ সালে ১০ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা, ২০২০ সালে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার এবং সবশেষ ২০২১ সালে দাবিহীন আমানত থেকে জমা হয় ৩৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া অদাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ১০৮ কোটি ১৮ লাখ ২২ হাজার ৫০৩ টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় পড়ে থাকা আমানত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর একটি নির্দেশনা দেওয়া আছে। ব্যাংকগুলো অদাবিকৃত আমানতের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দিচ্ছে। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করছে। তিনি জানান, তবে অনেক ব্যাংক এখনও অর্থ জমা করেনি। ওই সব ব্যাংকে পরিদর্শনের সময় বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এ ধরনের হিসাব পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো ব্যাংকের কাছে ১০ বছর ধরে আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর দাবিদার না থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা মানছে না অনেক ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক জমা দিলেও সঠিক নিয়মে তথ্য ও সুদের হিসাব করছে না। বছরের পর বছর ধরে ব্যাংকগুলো নিজস্ব সম্পদ হিসেবে এসব অর্থ ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পরিদর্শনে বিষয়টি উঠে আসে। এরপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দাবিবিহীন আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী জমা দেওয়ার বিস্তারিত জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা রয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ জমা দেওয়ার পরও দুই বছরের মধ্যেও দাবিদার এলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আর এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তরিত অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তালিকা সংশ্নিষ্ট ব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে এবং সরকারি গেজেট ও অন্যান্য দুটি পত্রিকায় প্রতি তিন মাসে একবার করে এক বছর ধরে প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটেও এক বছর ধরে এ-সংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শন করা হবে। এর পরও দুই বছরের মধ্যে কোনো দাবি উত্থাপিত না হলে বাকি অর্থ বা সামগ্রীর ওপর আর কোনো দাবি থাকবে না। পরবর্তী সময়ে তা সরকারের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে এবং সরকারের কাছে ন্যস্ত করা হবে।

ব্যাংকগুলো অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে জমার পরও গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে স্বাক্ষরের দলিল ও অন্যান্য দলিল সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর আর তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে না। একই সঙ্গে সংশ্নিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদনপত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তরের বিষয়টি চিহ্নিত করতে হবে। মৃত ব্যক্তির জমানো অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য মৃত্যু সনদ জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে নমিনি মনোনয়ন করা না থাকলে উত্তরাধিকার সনদ অনুযায়ী উপযুক্ত উত্তরাধিকারী সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করবেন।



 

Show all comments
  • Harunur Rashid ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:৫৬ এএম says : 0
    Give this money to the poor farmers who feeds people of Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply
  • Nadim Mostofa ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩০ এএম says : 0
    এই খবর দেখা পরে শকূনগুলো উঠেপড়ে লাগবে এগুলো হজম করার জন্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Sharif ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩১ এএম says : 0
    দূদকের ভয়ে দাবিদার উধাও।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Salem Zanzabil ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩২ এএম says : 2
    ঠিক আছে তাহলে আমি যদি দাবি করি সেগুলে কি পাবো??
    Total Reply(0) Reply
  • SA Sagor ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩৩ এএম says : 0
    এসব টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিয়ে সদকায়ে জায়রিয়া হিসেবে দান করা উচিৎ যাতে যার টাকাই হোক উনার কল্যানে লাগে
    Total Reply(0) Reply
  • Ashim Pathak Pathak ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩৩ এএম says : 0
    নিশ্চয়ই বৈধ আয়ের টাকা নয়। ধরা পরার ভয়ে এই টাকা উত্তলোন করছেনা। তানাহলে এভাবে টাকা জমা থাকে। আমি মনে করি দাবীদার না পেলে এই টাকা দিয়ে গরীবদের জন‍্য হাসপাতাল তৈরী করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • shorif ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৫৭ এএম says : 0
    tk gulo hojom korar fand
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahman ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৯:২৮ এএম says : 0
    ID card জমা থাকলে তো সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে খুজে পাওয়া কষ্টকর না। তাহলে ব্যাংকের ID card জমা নেওয়ার দরকার কি?
    Total Reply(0) Reply
  • Mominur ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:১৫ পিএম says : 0
    যদি একজন স্থায়ী নাগরিকের ব্যাংক একাউন্টে দশবছর বা তার বেশি সময় নির্দিষ্ট অংকের টাকা পড়ে থাকে আর তা লিখিত অনাদাবী না থাকে তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শাখায় সেই অর্থ ফেরত যাওয়া বা নেওয়া গ্রাহকের সাথে মারাত্মক ভাবে বৈষম্য করা হবে। কারণ ব্যক্তিটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিয়েছিল। ওয়ারিশান যাছাইপূর্বক যেকোন ব্যক্তির যেকোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনাদাবীকৃ টাকা দিয়ে দেয়া উচিত। আর একাউন্ট হোল্ডারের তথ্যগত ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকলে ভিন্ন ইস্যু। তাছাড়া নমীনী সে যে-ই হোক একাউন্ট হোল্ডার মনোনীত করে যান তার সঠিক স্বাক্ষরের মাধ্যমে তাহলে তাকেই সেই টাকা দিয়ে দেয়া উচিত। একাউন্ট হোল্ডার জেনে বুঝে সব করেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • মিজান ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:০৫ পিএম says : 0
    কোন ব্যাংকতো একাউন্ট হোল্ডারের বৈধ পেপারস ছাড়া লাওয়ারিশ একাউন্ট করেনা। আবার একাউন্টের নমিনিও থাকে। তাহলে দাবীদার না থাকার মানে কি?
    Total Reply(0) Reply
  • খায়রুল ইসলাম ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:২৫ এএম says : 0
    বেশির ভাগই মৃত ব্যক্তির জমানো টাকা হওয়ার সম্ভাবনা ৷ ওয়ারিশদের খোজ নিয়ে টাকা ফেরত দেওয়া উচিৎ। অনেকেই জানেনা তাদের পিতা মাতার ব্যংক একাউন্ট আছে কিনা ৷
    Total Reply(0) Reply
  • Md Alomgir Hossen ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৯:৪৮ পিএম says : 0
    এটাকাগুলো যিনি রেখেছেন তিনি হয়ত মার গেছেন এবং কাউকে বলেও যেতে পারেননি এবং ওয়ারিশানগনও জানেননা যে তাদের বাবা বা মার একাউন্ট আছে। এখন দশ বছরে কেউ না আসলেও হিসাব খোলার সময় এনআইডি তথা ঠিকানা দিছে ছবি দিছে সেগুলো মিডিয়ায়, টিভিতে প্রচার করলেই সত্যিকারের দাবীদার পাওয়া যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:০৮ পিএম says : 0
    ভাওতাবাজি না করে যার একাউন্ট তার ওয়ারিশদের কাছে টাকা ফেরত দিয়ে দিন। আপনাদের কাছে এনআইডি কার্ড আছে, এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে ওয়ারিশ খুঁজে বের করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Faruk Ahmed ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:৫০ পিএম says : 0
    এখানে অনেক বাংলদেশী প্রবাসীদের টাকা আছে, আমার জানা মতে আমার খালাতো বোন -এর বেশ টাকা জমা আছে কিন্তু তার ম্রুতুপ্রবাসেই হয়।তার নমিনীও আছেন ইউকে -তে ব্যস্ততার করোনার জন্য আসছেন না।
    Total Reply(0) Reply
  • জাকির হোসেন ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:৫২ পিএম says : 0
    মন্তব্য করে লাভ কি?জার টাকা তাকে ফেরত দিলেই চলে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohsin ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৯:১০ এএম says : 0
    ব্যাংক কারো কাছে 1 টাকা পেলে ও তার চৌদ্দগোষ্ঠী খুঁজে বের করে আর ব্যাংক এ জমানো টাকা ফেরত দিতে মালিক পায়না!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Noor Uddin ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:৪০ এএম says : 0
    Why This money will go Bangladesh bank ? There are form at least two nominee mobile number were recorded bank authority must contract with them before send to BD bank. Might man become dead but his families still present to receive this money .
    Total Reply(0) Reply
  • Belal ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:৫৫ পিএম says : 0
    ব্যাংক কারো কাছে 1 টাকা পেলে ও তার চৌদ্দগোষ্ঠী খুঁজে বের করে আর ব্যাংক এ জমানো টাকা ফেরত দিতে মালিক পায়না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ