এডিট করা যাবে পাঠানো মেসেজ! অতি প্রয়োজনীয় ফিচার আনছে হোয়াটসঅ্যাপ
অ্যাপেল কিংবা টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলিতে মেসেজ পাঠিয়ে দেয়ার পরও তাতে কোনও ভুল থাকলে এডিট করা
করোনা মহামারির পুরো সময়টাতে অনলাইনে চলেছে স্কুল, কলেজের ক্লাস ও পরীক্ষা। সারাক্ষণ না চাইলেও শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিতে হয়েছে বাবা-মাকে। ফলে পড়ালেখা যতটুকু হয়েছে তার বেশি ক্ষতিই বেশি। অনাইলনে আসক্ত হয়ে পড়েছে শিশুরা।
দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট ব্যবহারে যেমন ক্ষতি হচ্ছে পড়াশোনার। তেমনি জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। অনলাইনে শিশুর সাইবার বুলিং, অনলাইনে যৌন নিপীড়ন, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়া, প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ২৫ শতাংশ শিশু (১০-১৭ বছর বয়সী) ১১ বছর বয়সের আগেই ডিজিটাল জগতে প্রবেশ করতে শুরু করে। এ ছাড়া শিশুদের একটি বড় অংশ (৬৩ শতাংশ) প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্থান হিসেবে তাদের নিজেদের কক্ষটিকেই ব্যবহার করে। এটা 'বেডরুম কালচার'-এর ব্যাপকতা নির্দেশ করে, যা অপেক্ষাকৃত কম নজরদারির মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে।
‘বাংলাদেশে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শিরোনামে ইউনিসেফ বাংলাদেশ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ইন্টারনেট ব্যবহার করে এমন এক হাজার ২৮১ জন (১০ থেকে ১৭ বছর) শিশুর ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়।
জরিপে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের মধ্যে ধর্মীয় উস্কানি দেওয়ার বিষয়টিও সমীক্ষায় উঠে এসেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০ শতাংশ শিশু ধর্মীয় উস্কানিমূলক বিষয়বস্তুর মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ করে। কিশোর বয়সীরা (১৬ থেকে ১৭ বছর) অন্য বয়সী শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি এ ধরনের উস্কানিমূলক বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়।
এ জরিপে দেখা যায়, ১১ বছরের কম বয়সী শিশুরাও প্রতিদিন ইন্টারনেটে প্রবেশ ও ব্যবহার করছে। যদিও ছোট শিশুদের তুলনায় বেশি বয়সী শিশুরা অনলাইনে ভয়ভীতির সম্মুখীন হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তবে ক্ষতিকর সামগ্রী, যৌন নিগ্রহ ও অপব্যবহার এবং ভয়ভীতির সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি থেকে শিশুরা কখনোই মুক্ত নয় বলে মনে করছে সংস্থাটি।
এজন্য অচিরেই শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রথমেই সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিরাপদ করতে বাবা-মা কে মূলত দুটি জিনিস নজরদারিতে রাখতে হবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যে, শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে কোন ধরণের বিপদে পড়ছে কি না। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তারা কোন আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে কিনা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর ইন্টারনেট ব্যবহার নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রণ করার ৫ উপায়-
> প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন। শিশুদের যে ডিভাইসটি দিচ্ছেন সেটিতে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন। এতে শিশু কী দেখছে তার উপর নজরদারি করতে পারবেন সবসময়।
> কিছু সিকিউরিটি অ্যাপ রাখুন আপনার ফোনে। আপনার সন্তান যে ডিভাইসটি ব্যবহার করছে সেটিতে এই অ্যাপগুলো ইন্সটল করে রাখুন। এতে আপনার শিশু যদি কোনো অ্যাডাল্ট সাইটে ঢোকে তাহলে তা আপনাকে সতর্ত করবে।
> ফোনে চাইল্ড ভার্সন অপশনটি ব্যবহার করুন। ফেসবুক এবং মেসেঞ্জার এর ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের চাইল্ড ভার্সন আছে। সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেয়া যায় যেটি তারা ব্যবহার করলেও অভিভাবকদের সুপারভাইজ করার সুযোগ থাকে।
> ইন্টারনেট সংযোগ নেয়ার সময় সচেতন হোন: বাংলাদেশে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার রয়েছেন যারা ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে থাকেন। তবে যে কোম্পানির কাছ থেকে ইন্টারনেট সংযোগটি নেওয়া হচ্ছে তাদের বাচ্চাদের জন্য সেফ ইন্টারনেটের ফিচারটি আছে কি না সেটি যাচাই করে নেওয়াই ভালো।
> শিশুরা কতক্ষণ অনলাইন বা ইন্টারনেটে থাকবে তার একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হলে ইন্টারনেট সংযোগ বাসায় কখন কখন থাকবে আর কখন থাকবে না সেটির একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দিন।
সূত্র: ইউনিসেফ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।