মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখলের পর পশ্চিমা দেশগুলো যখন রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে ছিল চীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বেইজিং তেল ও গ্যাস কেনা নিয়ে মস্কোর সঙ্গে চারশো বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করে। যেটি সে সময় রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ভরাডুবি থেকে রক্ষা করেছিল। যদিও পর্যবেক্ষকদের অনেকেই তখন বলেছিলেন, রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি থাকলেও সহজ শর্ত এবং সস্তায় জ্বালানি সম্পদ কেনার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি চীন। বর্তমানে তাইওয়ানসহ নানা ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। সম্প্রতি ইউক্রেন ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে যেকোনো দিন হামলা করতে পারে রাশিয়া, এমন দাবি করছেন হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা। তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনা তাদের নেই। ইউক্রেনের অচলাবস্থার মধ্যে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রায় দুই বছর পর বেইজিং সফরে যান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্লেষকদের ধারণা পশ্চিমাদের সঙ্গে ইউক্রেন ও তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনার কারণে চীন ও রাশিয়া আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। ব্যবসা, বাণিজ্যসহ অন্যান্য সম্পর্ককেও আরও পাকাপোক্ত করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বিশ্বের প্রাকৃতিক গ্যাসের ১৭ শতাংশ উৎপাদন করে রাশিয়া। আর এই গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ইউরোপীয় দেশগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্য বলছে, ১৯৭০ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ইউরোপ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি শুরু করে। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে সেই নির্ভরতা আরও বেড়েছে। চলমান ইউক্রেন সংকটের মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার বিকল্প হিসেবে অন্য কোন দেশ খুঁজছে গ্যাস আমদানির জন্য। ঠিক তেমনি ইউরোপীয় গ্রাহকদের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার কারণে রাশিয়া একটি নতুন পাইপলাইনের মাধ্যমে চীনে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। রাশিয়া বর্তমানে বেইজিংয়ের তৃতীয় বৃহত্তম গ্যাস রফতানিকারক দেশ। জানা গেছে, সম্প্রতি বেইজিং সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের সঙ্গে তেল ও গ্যাস রফতানির জন্য ১১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৈইজিং বৈঠকে বলেছেন, রাশিয়ার তেল প্রস্তুতকারকরা চীনে হাইড্রোকার্বন সরবরাহের জন্য খুব ভালো এবং নতুন সমাধান নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। রাশিয়া থেকে চীনে প্রতি বছর ১০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস রফতানির কথাও বলেন তিনি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, চীনের সঙ্গে সেই তেল ও গ্যাসের চুক্তির সময়সীমা ২৫ বছর পর্যন্ত। যদিও চীনের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে সেই চুক্তির মেয়াদ ৩০ বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। সাইবেরিয়ার পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালে রাশিয়া থেকে গ্যাস রফতানি শুরু হয় চীনে। এছাড়া তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসও (এলএনজি) রফতানি হচ্ছে জাহাজের মাধ্যমে। ২০২১ সালে চীনে ১৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস রফতানি করেছে রাশিয়া। সাইবেরিয়ার পাইপলাইনের মাধ্যমে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের জন্য সংযোগ নেই। ফলে পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়া এই পাইপলাইন দিয়ে চীনকে ৩৮ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ করতে চায় ২০২৫ সালের মধ্যে। এ ছাড়া, রাশিয়ান তেল জায়ান্ট রোসনেফ্ট, কাজাখস্তানের মাধ্যমে ১০ বছরে ১০০ মিলিয়ন টন তেল সরবরাহ করতে চীনের সিএনপিসি-র সঙ্গে একটি ৮০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। আল-জাজিরা, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।