যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
অনেক মানুষ লজ্জায় শরিরের কিছু বিষয়ের ব্যাপারে অসেতন থাকেন। পায়ুপথের ফিস্টুলা যেহেতু এক জটিল রোগ কোনো অবস্থাতেই বিশেষজ্ঞ কলোরেক্টাল চিকিৎসক ছাড়া অন্য কারও দ্বারা পায়ুপথের ফিস্টুলা চিকিৎসা সম্ভব নয় এবং বাংলাদেশে বিভিন্ন অচিকিৎসক দ্বারা ফিস্টুলা চিকিৎসা করিয়ে অনেক রোগী অহরহ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
পায়ুপথের ফিস্টুলা (এনাল ফিস্টুলা বা ফিস্টুলা-ইন-এনো) রোগ শুরু হয় পায়ুপথের বাইরের ত্বক ও ভেতরের পেশির মধ্যে জীবাণুযুক্ত সংযোগ পথ সৃষ্টির মাধ্যমে। বাংলাদেশে এ রোগের প্রকোপ বেশ পরিলক্ষিত হয়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ছেন কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বৃহদ্রান্ত ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল হক মাসুম।
সাধারণত পায়ুপথের গ্লান্ডগুলোয় ইনফেকশন হতে এনাল ফিস্টুলার শুরু। ইনফেকশন হতে ফোড়া হয় এবং সেই ফোড়া ফেটে গিয়ে অথবা অপারেশনের মাধ্যমে পুঁজ বের করে দিলে পায়ুপথের বাইরের ত্বকের সঙ্গে এনাল গ্লান্ডের সংযোগ স্থাপিত হয় এবং পায়ুপথের বাইরের ত্বকের সঙ্গে এনাল গ্লান্ডের মাঝে এক সুড়ঙ্গের মতো পথ তৈরি হয়। পুঁজ বেরিয়ে যাওয়ার পর উপসর্গের উন্নতি হয়। পুঁজ আস্তে আস্তে আবার জমতে থাকে এবং একটা সময়ের পর ফোলা ব্যথা জ্বর ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। উপসর্গগুলোর মাত্রা রোগীভেদে কম বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী ফিস্টুলা বাইরে এবং ভেতরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একাধিক ছিদ্র বা মুখ থাকতে পারে এবং ভেতরের মুখ যদি পেশির বেশ ওপরে হয় তবে চিকিৎসা জটিলতার সম্মুখীন হয়।
রোগ নির্ণয়
সফল চিকিৎসার জন্য ফিস্টুলা পথ কোথা থেকে শুরু হয়ে কোন পথ দিয়ে পায়ুপথের দেয়ালের মধ্য দিয়ে গিয়ে কোন স্থানে ভেতরের মুখটা খুলেছে- রোগ নির্ণয় ও আরোগ্য নিশ্চিত করতে সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অত্যাবশ্যক।
বাইরের অর্থাৎ ত্বকের ওপরে যে মুখটা লাল ও প্রদাহময় যেখান থেকে পুঁজ অথবা রক্ত বেরিয়ে আসে। বাইরের মুখটা সহজেই চোখে পড়ে। পায়ুপথের ভেতরের মুখটা খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। এমআরঅ্যাই স্ক্যান, এন্ডো-এনাল আল্ট্রাসাউন্ড ফিস্টুলা পথকে সঠিকভাবে চিত্রিত করতে পারে। যদি ফিস্টুলোগ্রাম এক্সরে ব্যবহার করা হয়, ফিস্টুলা পথটা যেহেতু সবসময় খোলা থাকে না দূষিত ময়লাযুক্ত শক্ত পুঁজ দ্বারা বন্ধ থাকতে পারে, ফিস্টুলোগ্রাম এক্সরে দ্বারা ঠিক পথ নির্ণয় সাধারণত কষ্টকর, সব সময় বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
উপরিউক্ত পরীক্ষাগুলো সাধারণত জটিল ফিস্টুলার জন্য সীমাবদ্ধ থাকে। বেশিরভাগ ফিস্টুলা জেনারেল এনেস্থেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করার পর লকহার্ট ম্যামারি নামে একজন ইংরেজ ব্রিটিশ সার্জন আবিষ্কৃত ধাতু নির্মিত ‘প্রব’ (লকহার্ট ম্যামারি প্রব) বাইরের মুখ থেকে ফিস্টুলা পথ দিয়ে ভেতরের মুখ দিয়ে বের করে এনে ফিস্টুলা পথটা পুরোপুরি শনাক্ত করা যায় এবং ফিস্টুলা পথটা পায়ুপথের মাংসপেশির ওপরে অথবা নিচের দিকে খুলেছে কিনা সেটা বুঝতে পারা যায়।
অপারেশন
যদি ফিস্টুলা পথের ভেতরের মুখ পায়ুপথের মাংসপেশির নিচের দিকে থাকে তবে ফিস্টুলা পথ আচ্ছাদিত পায়ুপথের চর্ম ও পেশি কোনো মারাত্মক জটিলতা ছাড়াই কেটে দেয়া যায় এবং ফিস্টুলা থেকে আরোগ্যলাভ সম্ভব হয়। কিন্তু যদি ফিস্টুলা পথের ভেতরের মুখ পায়ুপথের মাংসপেশির ওপরে উন্মুক্ত হয় তাহলে ফিস্টুলা পথ আচ্ছাদিত পায়ুপথের পেশি কেটে আরোগ্যলাভ তো সম্ভবই নয়, মল নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে পায়ুপথ দিয়ে অবিরত মল ঝরতে থাকে এবং রোগীর জীবন দুর্বিষহ এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অসম্ভবে পরিণত হয় সে কারণে উচ্চ অবস্থিত ফিস্টুলা চিকিৎসা সম্পূর্ণ আলাদা এবং কয়েকবার অপারেশনের মাধ্যমে হয়ে থাকে যাতে করে পায়ুপথ নিয়ন্ত্রণ নষ্ট না হয়ে যায়। যে বিভিন্ন অপারেশনের মাধ্যমে উচ্চ অবস্থিত ফিস্টুলার রোগ মুক্তি সম্ভব তার মধ্যে সিটন, ফিস্টুলা প্লাগ, প্লাস্টিক ফ্ল্যাপ এবং অন্যান্য জটিল শল্যচিকিৎসা উল্লেখ্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।