Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এখনো উদ্ধার হয়নি সিলেট কানাইঘাটে নিহত ফরিদের বাম পা

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:০৭ পিএম

সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাটে ফরিদ হত্যার ৪ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত মাস্টার মাইন্ড ৩ খুনীকে গ্রেপ্তার করলেও এখনও কেটে নেওয়া বাম পায়ের গোড়ালীর অংশ উদ্ধার হয়নি। কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, খুনিরা ফরিদের বাম পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায়। এই পা উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জানা যায়, কানাইঘাটের বড়খেওড় গ্রামের যুবক ফরিদ উদ্দিন তার ভায়রা শাহীনকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে পার্শ্ববর্তী ডোনা বাজারে যান। সেখান থেকে তারা মমতাগঞ্জ বাজারে ফিরেন। ওখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিকালে গ্রামের পাহাড়ঘেরা ঢালু রাস্তায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় তাকে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার পর খুনিরা ফরিদের বাম পায়ের অংশ বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে গেছে। তারা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। কিন্তু খুনের মিশনে কারা ছিল সেটি এখনো অজানা। কেউ কেউ ধারণা করছেন- খুনিরা। ঘটনার পর পাহাড় ধরে ভারতে পালিয়ে গেছে। আর তারা বিচ্ছিন্ন পায়ের অংশ নিয়ে যাওয়ার কারণে এখনো ওই অংশের খোঁজ মেলেনি। ঘটনার পর ফরিদের পায়ের অংশের খোঁজে স্থানীয় লোকজনও তল্লাশি চালিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু কোথাও বিচ্ছিন্ন করা পায়ের অংশ পাননি। পা বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল। নিহত ফরিদ উদ্দিনের সম্বন্ধির উপরেও একই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা। ফলে যে চক্রটি এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা পেশাদার। এদিকে, খুনের পর ছায়া তদন্তে নামা র‌্যাবের অনুসন্ধানে মূল পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এরইমধ্যে ফরিদ খুনের ঘটনার পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্থানীয় লক্ষ্ীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের নবনির্বাচিত মেম্বার নিজাম উদ্দিনসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তারের পর গতকাল এ নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান জানিয়েছেন, ইউপি নির্বাচন কেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের জের ধরে ফরিদ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনের পর থেকে বিবদমান ফরিদ ও নিজাম মেম্বার গ্রুপের লোকজনের বিরোধ আরও প্রকট হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকিও দেয়া হয়। র‌্যাব জানায়, পরিকল্পনা মোতাবেক তারা ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়। প্রথম গ্রুপ- ঘটনার মাস্টারমাইন্ড নিজাম মেম্বার ও মোস্তাক মেম্বার সিলেটে অবস্থান করে। সিলেট নগরীতে অবস্থান করে তারা পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে। ২য় গ্রুপ- ফরিদ উদ্দিনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। ফরিদ কোথায় যাচ্ছেন, কি করছেন সব খবর ১ম ও ৩য় গ্রুপকে আপডেট দিতে থাকে। আর ৩য় গ্রুপ- বড়খেওর গ্রামের এফআইভিডিবি স্কুলের পাশে জঙ্গলে মুখোশ পড়ে অবস্থান নেয়। ঘটনাস্থলে ফরিদ উদ্দিন যাওয়া মাত্র তার উপর হামলা চালায়। হামলায় ঘটনাস্থলেই ফরিদকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ফরিদের একটি পা কেটে নিয়ে যায় খুনীরা। ঘটনার পর থেকেই র‌্যাব-৯ এ হত্যাকান্ডের মুল রহস্য উদঘাটনে অভিযান চালায়। অভিযানে জানতে পারে- ঘটনার মাস্টারমাইন্ড নিজাম মেম্বার মৌলভীবাজারের শেরপুরে আত্মগোপনে রয়েছেন। সেখান থেকে ৮ ঘন্টার সাড়াশি অভিযানে শুক্রবার ভোর ৫টায় নিজাম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থেকে কাওছার আহমদকে ও বন্দরবাজার থেকে মোস্তাক আহমদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। র‌্যাব জানায়, বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, ফরিদ উদ্দিন খুনের ঘটনার পর কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকায় ক্ষোভ কমছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিহত

২৯ ডিসেম্বর, ২০২২
২২ ডিসেম্বর, ২০২২
৭ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ