Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপসংস্কৃতি ও তার প্রতিকার-১

মুহাম্মাদ সিরাজুম মুনীর | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৫ এএম

সংস্কৃতি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আজ বিশ্বের দিকে দিকে চলছে শিক্ষা ও সংস্কৃতির যুদ্ধ। কোনো সংস্কৃতি যখন ইসলামী কার্যকলাপে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং নৈতিকতা বিবর্জিত হয় তখন তা অপসংস্কৃতি বলে চিহ্নিত হয়। এই অপসংস্কৃতির প্রভাবে জাতি তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে এবং তরুণ সমাজ হয় বিপথগামী। মুসলমান জাতি আজ ইহুদি, খ্রিষ্টানদের চাল-চলন, পোশাক-পরিচ্ছদ, জীবন নির্বাহের যাবতীয় রীতিনীতি অন্ধভাবে অনুকরণ করে যাচ্ছে।

এহেন কার্যকলাপ থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন জীবনের সর্বস্তরে ইসলামী সংস্কৃতি চর্চা করা এবং এর ব্যাপকতার জন্য নিজস্ব মিডিয়া সৃষ্টি করা। সংস্কৃতির বিকৃত রূপই হলো অপসংস্কৃতি। ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন ও হাদিসের সাথে, আত্মা ও আচরণের সাথে, জীবনবোধ ও নৈতিকতার সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই, যা মানব জীবনকে কলুষময় করে এবং জীবনের ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে তাই অপসংস্কৃতি।

তরুণ সমাজকে আজ অসত্যের ধূম্রজালে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সঠিক পথের দিশা পাচ্ছে না তারা। মাঝিবিহীন নৌকার মতো জীবনের লক্ষ্য হারিয়ে মাঝ দরিয়ায় খাবি খাচ্ছে। এভাবে মুসলমান তার ধর্মীয় স্বকীয়তা হারাচ্ছে। আজ অনেক মেয়ের চাল-চলনে বোঝা যায় তারা ইসলামী বিধি-বিধানের ব্যাপারে খুবই অজ্ঞ। ইহকালই যেন তাদের সব। পরকালের চিন্তা করার সুযোগই পায় না। বেপর্দা ও অর্ধনগ্নতা মহামারির আকার ধারণ করছে।

তাদের অনেকেই অধিকার আদায়ের জন্য পাশ্চাত্যের নারীদের মতো রাস্তায় নেমে ¯েøাগান দিচ্ছে আর এই অধিকারের নামেই নারীদের শিক্ষা দিচ্ছে লজ্জাহীনতা এবং টেনে নিচ্ছে জাহেলী যুগের নারীদের অবস্থানে। ইহুদি, খ্রিষ্টানরা অপসংস্কৃতির বিকাশে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করছে। তার মধ্যে একশ্রেণির হলুদ মিডিয়া হচ্ছে মূল হাতিয়ার। এই মিডিয়া উস্কানিদাতা ও সন্ত্রাসীর ভূমিকায় নেমেছে। ইহুদি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া যা চায় তাই হচ্ছে। এমনকি এর মাধ্যমে জাতির ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ নাশ করার গতি ত্বরান্বিত করা হচ্ছে।

গানের সুর-তরঙ্গে থাকে এক প্রকারের মাদকতা যা শ্রোতাকে মাতাল করে দেয়। বিষ দেহকে হত্যা করে, জীবনের অবসান ঘটায়। আর নাচ বা নৃত্য মানুষকে আচ্ছন্ন করে। অশ্লীল গান মুনাফেকী সৃষ্টি করে যেমনিভাবে পানি শস্য উৎপন্ন করে। কুরআন মজীদে সঙ্গীত গান-বাজনা নৃত্যকে ‘লাহওয়াল হাদিস’ বলা হয়েছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো এমন কথা যা মানুষকে বিভ্রান্ত করে, দায়িত্ব ও কর্তব্যে তাকে গাফেল ও অসতর্ক বানিয়ে দেয়। বিজাতিরা আসল ধর্ম পরিত্যাগ করে ক্রীড়া ও কৌতুককেই ধর্মাচার হিসেবে গ্রহণ করেছে।

মহান প্রভু আল্লাহ তাআলা সূরা আনআমের ৭০ নং আয়াতে তাদের ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, তাদের পরিত্যাগ করুন, যারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদের ধোঁকায় ফেলে রেখেছে।



 

Show all comments
  • Masud Rana Chowdhury ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:০১ এএম says : 1
    দুনিয়াতে আল্লাহ প্রদত্ত অফুরন্ত নে‘মতরাজির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যৌবনের শক্তিমত্তা। মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারার তিনটি স্তর শৈশব, যৌবন ও বার্ধক্য। এর মধ্যে যৌবনকাল শ্রেষ্ঠ। অফুরন্ত প্রাণশক্তির আধার যুবসমাজই দেশ ও জাতির ভবিষ্যত কর্ণধার। তারা দেশ ও জাতির সম্পদ। শত ঝড়-ঝাপটা ও বাতিলের কালো থাবা উপেক্ষা করে তারাই পারে সত্য, ন্যায় ও অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠায় বীর বিক্রমে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। যুবসমাজই পারে পরিবার, সমাজ ও দেশকে কুসংস্কার মুক্ত করে অহি-র সোনালী সমাজ কায়েম করতে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ রমিজ ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:০২ এএম says : 0
    পথভ্রষ্ট ও নৈতিকভাবে অধঃপতিত যুবসমাজের দ্বারাই পৃথিবীতে সংঘটিত হয়েছে যত অপকর্ম, ধ্বংস হয়েছে বহু সভ্যতা। তাই বলা যায় যুবসমাজের অধঃপতনই জাতির অধঃপতন। এজন্য যুবসমাজের অবক্ষয় ও পতন রোধে দরকার কার্যকর পদক্ষেপ।
    Total Reply(0) Reply
  • তরিকুল ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:০২ এএম says : 0
    মানুষের ভিতরকার অনুশীলিত কৃষ্টির বাহ্যিক পরিশীলিত রূপকে সংস্কৃতি বলা হয়। এটা তাওহীদ, রিসালাত ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসের আলোকে শারঈ নির্দেশনায় গড়ে উঠলে সেটাই প্রকৃত অর্থে সংস্কৃতি। এর বাইরে যা কিছু আছে সবই নষ্ট ও অপসংস্কৃতি।
    Total Reply(0) Reply
  • হাসান আল মেহেদী ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:০২ এএম says : 0
    বর্তমানে যুবসমাজের মাঝে নষ্ট সংস্কৃতির প্রভাব সুস্পষ্ট, যা তাদেরকে নৈতিক অধঃপতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • কায়কোবাদ মিলন ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:০৩ এএম says : 0
    বিজাতীয় সংস্কৃতির মধ্যে ভ্যালেন্টাইন ডে, থার্টি ফার্স্ট নাইট, নববর্ষ উদযাপন প্রভৃতি বিজাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বেলেল্লাপনা ও বেহায়াপনার সয়লাব চলে। এসব অনুষ্ঠানে যুবক-যুবতীর উন্মাতাল নাচ-গান যুবচরিত্রকে ধ্বংস করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • simon ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৩৯ পিএম says : 0
    thik
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:১৬ পিএম says : 0
    দেশ চলে কাফেরের আইন দিয়ে যারা দেশ চালায় তারা খুব ভাল করেই জানে যে জনগণকে হারাম কাজের মধ্যে ডুবিয়ে দিলে তারা তাদের মাথার উপর পা দিয়ে সবকিছু করতে পারবে এবং তাই হচ্ছে আল্লাহ তা'আলা যা হারাম করেছে উনারা সব হালাল করে দিয়েছে... ইসলামের একটি প্রসিদ্ধ মূলনীতি হলো হারাম কাজের পথ বন্ধ করা, অর্থাৎ এর নিয়ম হলো যে সমস্ত কথা কিংবা কাজ হারামের দিকে ঠেলে দেয়; হারাম কাজের পথ খুলে দেয়, যেমন সিনেমা-নাটক গান বাজনা নাচানাচি, ভিডিও গেম, কার্টুন, মাদক, সহশিক্ষ। পুরুষ মহিলার অবাধ মেলামেশা, অশালীন কাপড় পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই পরে সে সমস্ত কথা বা কাজ কেও হারাম ঘোষনা করা যাতে হারামের পথ বন্ধ থাকে.,
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:১৮ পিএম says : 0
    বিশ্বশ্রেষ্ঠ শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহমতউল্লাহ লিখেছেন: অকাট্য দলিল ও সমস্ত উম্মাহর ঐক্য বদ্ধ ঐক্যমতের ভিত্তিতে একথা স্পষ্ট যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মকে সমর্থন করবে কিংবা মোহাম্মদ [সাঃ] শরিয়া ব্যতীত অন্য কোন রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সমর্থন করবে সে কাফের. যেভাবে কেউ কোরআনের কিছু অংশ বিশ্বাস করে আর কিছু অংশ অবিশ্বাস করলে কাফের হয়. { মাজমুউ ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম 524/28 } Surah:Al-Hajj: Ayat:41: আমি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করলে তারা সালাত কায়েম করবে যাকাত দিবে এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করবে সকল কাজের পরিণাম আল্লাহর অধিকারে... Surah:5: Ayat:44: “যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার করে না এমন লোক তো পূর্ণ কাফির” Surah:5: Ayat:45: “যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে না তাহলে তো এমন ব্যক্তি পূর্ণ জালিম.” Surah:5: Ayat:47: “যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার ফয়সালা করে না, তাহলে তো এই লোকই পাপাচারী ফাসেক”এইজন্যই তো নবী [সাঃ] নবীজির জীবনে 10 বছরে প্রায় 100 পাঁচটা যুদ্ধ হয়েছিল…..নিজেই সাতাশটা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন কাফেরদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করত না… আলী রাদিয়াল্লাহু বলতেন যে যুগে যুগে ইসলামকে ধ্বংস করবে দরবারী আলেম ও শাসকগণ. “তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফেল নন”। সূরা বাকারা: (৮৫) ইসলামে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত কোনো বিষয় যে প্রত্যাখ্যান করল, সে কাফের ও পথভ্রষ্ট, যদিও তার প্রত্যাখ্যান করা বিষয়ের পরিমাণ খুব কম ও সামান্য হয়। অতএব পার্থিব রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ইসলামের সকল বিধান যে প্রত্যাখ্যান করে, সে কাফের বলার অপেক্ষা রাখে না, যেমন সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার অনুসারীরা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপসংস্কৃতি

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন