পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধীরগতিতে চলছে গণপরিবহন শ্রমিকদের করোনাভাইরাসের টিকা কার্যক্রম। এখন পর্যন্ত গণপরিবহনের কত শতাংশ কর্মী টিকা নিয়েছেন সেই পরিসংখ্যানও নেই। এমন ধীরগতিতে টিকা কর্যক্রম চলতে থাকলে কবে শেষ হবে তা নিয়ে সঙ্কায় সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় এই খাতের যারা টিকা নেননি তাদের অগ্রাধিকারের আওতায় এনে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। তবে অনেক পরিবহন শ্রমিকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন নেই। তাদের টিকা নিতে পড়তে হচ্ছে সমস্যায়। কারণ এখন জন্মনিবন্ধন করতে হলে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে গ্রাহককে। এমন গতিতে টিকা কর্যক্রম চলতে থাকলে গণপরিবহনের সকল শ্রমিকদের টিকা কর্যক্রমের আওতায় আনতে অনেক সময় লেগে যাবে বলে জানা গেছে।
সড়ক পরিবহন খাতে শ্রমিক প্রায় ৫০ লাখ। এর সঙ্গে যানবাহন মেরামতসহ নানা কাজে যুক্ত শ্রমিক আছেন আরও প্রায় ২০ লাখ। সব মিলিয়ে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, নছিমন-করিমনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। এর মধ্যে শুধু যাত্রীবাহী বাসের শ্রমিকের সংখ্যা ১০ লাখের মতো।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গণপরিবহনে কাজ করেন এমন অনেক বাস চালক ও হেলপার নিজ উদ্যোগেই অনলাইনে আবেদন করেছেন। এভাবে কেউ কেউ টিকা নিয়েছেন আবার অনেকে টিকা নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সূত্র বলছে, তাদের কাছেও টিকা কারা নেননি, এমন শ্রমিকের প্রকৃত তালিকা নেই। এ জন্য পরিবহন কোম্পানিগুলো নিজ প্রতিষ্ঠানের চালক ও সহকারীদের নাম তালিকাভুক্ত করার তাগিদ দিচ্ছে। বিভিন্ন বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক শ্রমিক ইউনিয়নগুলোও তালিকা তৈরি করছে।
বিআরটিএর এক পরিচালক বলেন, অনেক শ্রমিক আগেই টিকা নিয়েছেন। যারা নেননি, তাদের বেছে বেছে টিকা দেয়া হচ্ছে। ঢাকার বাস টার্মিনালগুলো ঘিরে টিকা দিলে বেশির ভাগ শ্রমিকই টিকার আওতায় চলে আসবেন।
বাসচালকরা জানান, গণপরিবহনে যারা কাজ করেন তাদের অনেকেই এখনো করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় আসেনি। আনেকে অনলাইনে আবেদন করেছেন করোনা টিকার জন্য কিন্তু এখন পর্যন্ত মেসেজ আসেনি। মোবাইল ফোনে মেসেজ আসলেই টিকা দিতে যাবেন। কিন্তু এর মধ্যে তো আর কাজ বন্ধ রাখতে পারি না। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন না করলে তাদের পরিবার নিয়ে চলতে পড়তে হবে বিপাকে। তাই টিকার মেসেজ আসুক বা না আসুক আমাদের নিয়মিত কাজ করতেই হবে।
পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, পরিবহন শ্রমিকদের করোনা টিকা যারা নিতে চান তাদের জন্য মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম দিকে টার্মিনাল এলাকায় শুরু হলেও পরবর্তীতে দেখা যায় টার্মিনাল এলাকায় টিকা রাখার ব্যবস্থা না থাকায় পার্শবর্তী হাসপাতালগুলোতে শ্রমিকদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এব্যাপারে পরিবহন মালিক সমিতি গণপরিবহন শ্রমিকদের টিকা কার্যক্রম গতিশীল রাখার জন্য সার্বিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শিকড় পরিবহনের হেলপার সাজু বলেন, অনলাইনে আবেদন করে হাসপাতালে গিয়ে টিকা নিয়েছি। মালিক পক্ষের দেয়া সুবিধা নেইনি। অনেকে বাকী আছে টিকা নেয়ার। তাদের আগে টিকার ব্যবস্থা করা দরকার। টিকা নেয়ার জন্য যদি দ্রæত ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে অনেকের টিকা নিতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে।
আরেক পরিবহন শ্রমিক কালাম বলেন, প্রথম দিকে মালিক পক্ষ থেকে টিকার জন্য চাপ দেয়া হতো। এখন তেমন চাপ নেই। অনলাইনে আবেদন করে হাসপাতালে গিয়ে টিকা দিতে হচ্ছে। পরিবহন শ্রমিকদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা সুবিধাজনক না। বেশি কাগজপত্র ছাড়া পরিচয়পত্র দিয়ে টিকার ব্যবস্থা করলে ভালো হতো।
গত ১৯ জানুয়ারি গণপরিবহন শ্রমিকদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়। মহাখালীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে এই কার্যক্রম শুরু হয়। টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের স¤প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক। সেদিন তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই সবাইকে আমরা টিকার আওতায় আনবো। টিকার কোনও সঙ্কট নেই।
ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ঝুমানা আশরাফি জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে টিকা দেয়া হচ্ছে। তবে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা জন্মনিবন্ধন সনদ দেখিয়ে টিকা নিতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের পরিবহন শ্রমিকদের এ টিকা দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।