যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
খাবারের টেবিলে অনেকেরই পাতে অতিরিক্ত লবণ নেয়া বা চায়ের বাড়তি চিনি নেয়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্প মাত্রার এরকম কাঁচা লবণ বা চিনি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।
মানবদেহের জন্য লবণ বা চিনির প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু তার মাত্রা রয়েছে। মানুষ প্রতিদিন যে নানা ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকে, তার ভেতরেও লবণ বা চিনির উপস্থিতি থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিন যতটা লবণ বা চিনি খাওয়া উচিত, খাবার থেকেই অনেক সময় তার চেয়ে বেশি শরীরে প্রবেশ করে। ফলে যখন কোন মানুষ খাবার টেবিলে বা চায়ের সঙ্গে বা অন্য কোন ভাবে বাড়তি লবণ বা চিনি গ্রহণ করে, সেটা তার জন্য ঝুঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
মানুষের শরীরে যত সোডিয়াম ঢোকে, তার প্রধান উৎস লবণ। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) বলছেন, মানুষের দেহ ঠিকভাবে কাজ করার জন্য খুব কম পরিমাণ লবণ দরকার হয়। কিন্তু মানুষ প্রতিদিন সেই মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি লবণ গ্রহণ করছে। সংস্থাটি বলছে, একজন মানুষের সবমিলিয়ে ২,৩০০ মিলিগ্রাম বা এক চা চামচের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পুষ্টিবিদ ফারজানা আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, মানুষের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বয়স অনুযায়ী চাহিদা আছে। কিন্তু কারও যদি লিভার, কিডনি বা বড় জটিলতা থাকে, তখন সেটার বেশি বা কম হলে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ''আমরা সরাসরি লবণ খেতে একেবারেই মানা করে দেই। কিন্তু নানা খাবারের মধ্য দিয়ে একজনের শরীরে যতটুকু লবণ যাবে, তা যেন আধা চা চামচ থেকে এক চা চামচের বেশি না হয়,'' তিনি বলছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার অথবা রেস্তোরাঁয় খাবারে যে লবণ থাকে, সেটা নিয়ন্ত্রণের কোন উপায় থাকে না।
আবার চিনি, শর্করা বা সুগার, যে নামেই ডাকা হোক না কেন, গত কয়েক দশক ধরে এটি বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, এটি জনস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান শত্রুতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার এর ওপর বাড়তি কর বসাচ্ছে। স্কুল আর হাসপাতালগুলো খাদ্যতালিকা থেকে একে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন: আমাদের খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিতে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজসমৃদ্ধ কর্ন সিরাপ বা বাড়তি চিনিওয়ালা পানীয়, জুস ড্রিংক, মধু, বা সাদা চিনি এগুলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে, কারণ তা ধমনির ভেতর ট্রাইগ্লিসারাইড জাতীয় চর্বি জমাতে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জরিপে এই বাড়তি যোগ করা চিনি সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয়ের সাথে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার স্থূলতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। যেসব খাবার - যেমন বিভিন্ন ফলের রস বা মিশ্রণ এবং সিরাপ খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিছু গবেষণায় বলা হয়, চিনি বা মিষ্টি খাওয়ার আকর্ষণ কোকেনের আকর্ষণের মতোই - যাকে বলা চলে একটা নেশা।
একাধিক গবেষণার ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোন এক দিনের খাবারে যদি ১৫০ গ্রামের বেশি ফ্রুকটোজ থাকে, তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অনেক খাবারের মধ্যে চিনি যুক্ত থাকে, যাকে বলা হয় মুক্ত চিনি। যেমন মধু, সিরাপ, ফলের জুস ইত্যাদি। পেস্ট্রি, কেক, বিস্কুট, কোমল পানীয়ের মধ্যে যে চিনি যুক্ত থাকে, সেটিও এর অন্তর্ভুক্ত। এতে কেউ সরাসরি চিনি বা মিষ্টি না খেলেও এসব খাবার থেকে শরীরের চিনি প্রবেশ করে।
আবার চা বা কফি, শরবতের সঙ্গে সরাসরি চিনি মিশিয়েও খাওয়া হয়। একে বলা হয় বাড়তি চিনি। উভয় ক্ষেত্রে শরীরের সরাসরি চিনি প্রবেশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে, একজন ব্যক্তি প্রতিদিন যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে, তার ১০ শতাংশের কম অতিরিক্ত চিনি বা বাড়তি চিনি খাওয়া উচিত। চকলেটের বাইরে চা এবং কফি এজন্য অনেকাংশে দায়ী। বিশ্বের অনেক দেশ চিনির ওপর বাড়তি কর বসিয়ে মিষ্টি খাওয়া কমানোর চেষ্টা করছে। সূত্র: বিবিসি।লবণ বা চিনি যখন মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে
অনলাইন ডেস্ক
খাবারের টেবিলে অনেকেরই পাতে অতিরিক্ত লবণ নেয়া বা চায়ের বাড়তি চিনি নেয়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্প মাত্রার এরকম কাঁচা লবণ বা চিনি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।
মানবদেহের জন্য লবণ বা চিনির প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু তার মাত্রা রয়েছে। মানুষ প্রতিদিন যে নানা ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকে, তার ভেতরেও লবণ বা চিনির উপস্থিতি থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিন যতটা লবণ বা চিনি খাওয়া উচিত, খাবার থেকেই অনেক সময় তার চেয়ে বেশি শরীরে প্রবেশ করে। ফলে যখন কোন মানুষ খাবার টেবিলে বা চায়ের সঙ্গে বা অন্য কোন ভাবে বাড়তি লবণ বা চিনি গ্রহণ করে, সেটা তার জন্য ঝুঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
মানুষের শরীরে যত সোডিয়াম ঢোকে, তার প্রধান উৎস লবণ। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) বলছেন, মানুষের দেহ ঠিকভাবে কাজ করার জন্য খুব কম পরিমাণ লবণ দরকার হয়। কিন্তু মানুষ প্রতিদিন সেই মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি লবণ গ্রহণ করছে। সংস্থাটি বলছে, একজন মানুষের সবমিলিয়ে ২,৩০০ মিলিগ্রাম বা এক চা চামচের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পুষ্টিবিদ ফারজানা আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, মানুষের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বয়স অনুযায়ী চাহিদা আছে। কিন্তু কারও যদি লিভার, কিডনি বা বড় জটিলতা থাকে, তখন সেটার বেশি বা কম হলে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ''আমরা সরাসরি লবণ খেতে একেবারেই মানা করে দেই। কিন্তু নানা খাবারের মধ্য দিয়ে একজনের শরীরে যতটুকু লবণ যাবে, তা যেন আধা চা চামচ থেকে এক চা চামচের বেশি না হয়,'' তিনি বলছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার অথবা রেস্তোরাঁয় খাবারে যে লবণ থাকে, সেটা নিয়ন্ত্রণের কোন উপায় থাকে না।
আবার চিনি, শর্করা বা সুগার, যে নামেই ডাকা হোক না কেন, গত কয়েক দশক ধরে এটি বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, এটি জনস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান শত্রুতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার এর ওপর বাড়তি কর বসাচ্ছে। স্কুল আর হাসপাতালগুলো খাদ্যতালিকা থেকে একে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন: আমাদের খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিতে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজসমৃদ্ধ কর্ন সিরাপ বা বাড়তি চিনিওয়ালা পানীয়, জুস ড্রিংক, মধু, বা সাদা চিনি এগুলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে, কারণ তা ধমনির ভেতর ট্রাইগ্লিসারাইড জাতীয় চর্বি জমাতে ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জরিপে এই বাড়তি যোগ করা চিনি সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয়ের সাথে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার স্থূলতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। যেসব খাবার - যেমন বিভিন্ন ফলের রস বা মিশ্রণ এবং সিরাপ খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিছু গবেষণায় বলা হয়, চিনি বা মিষ্টি খাওয়ার আকর্ষণ কোকেনের আকর্ষণের মতোই - যাকে বলা চলে একটা নেশা।
একাধিক গবেষণার ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোন এক দিনের খাবারে যদি ১৫০ গ্রামের বেশি ফ্রুকটোজ থাকে, তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অনেক খাবারের মধ্যে চিনি যুক্ত থাকে, যাকে বলা হয় মুক্ত চিনি। যেমন মধু, সিরাপ, ফলের জুস ইত্যাদি। পেস্ট্রি, কেক, বিস্কুট, কোমল পানীয়ের মধ্যে যে চিনি যুক্ত থাকে, সেটিও এর অন্তর্ভুক্ত। এতে কেউ সরাসরি চিনি বা মিষ্টি না খেলেও এসব খাবার থেকে শরীরের চিনি প্রবেশ করে।
আবার চা বা কফি, শরবতের সঙ্গে সরাসরি চিনি মিশিয়েও খাওয়া হয়। একে বলা হয় বাড়তি চিনি। উভয় ক্ষেত্রে শরীরের সরাসরি চিনি প্রবেশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে, একজন ব্যক্তি প্রতিদিন যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে, তার ১০ শতাংশের কম অতিরিক্ত চিনি বা বাড়তি চিনি খাওয়া উচিত। চকলেটের বাইরে চা এবং কফি এজন্য অনেকাংশে দায়ী। বিশ্বের অনেক দেশ চিনির ওপর বাড়তি কর বসিয়ে মিষ্টি খাওয়া কমানোর চেষ্টা করছে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।