চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
উত্তর : আধুনিক শিক্ষিতা মেয়েরা আকাইদ, ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত, পিতামাতা, স্বামী ও সন্তানের হক এবং নিত্য প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসাইল সম্পর্কে অনেকটা অজ্ঞ। অথচ প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন করা ফরজ। অনেক পিতামাতাও এ ব্যাপারে উদাসীন; তারা সন্তানকে জাগতিক শিক্ষা দেওয়াকেই যথেষ্ট মনে করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ২২৪)।
সময়ের পাবন্দ না হওয়া: নারীরা নামাজ-ইবাদত, খাবার, গোসল ইত্যাদি সকল কাজে বিলম্ব করে। এতে সংশ্লিষ্ট লোকেরা পেরেশান হয়। অনেক জরুরি কাজ নষ্ট হয়ে যায়। (বোখারি : ৬৪১২)।
অন্যের দোষচর্চায় লিপ্ত হওয়া : অন্যের দোষচর্চা করা কবিরা গোনাহ। এরশাদ হচ্ছে, হে মুমিনগণ! তোমরা কারো দোষ অনুসন্ধান ও গিবত (অগোচরে দুর্নাম) কোরো না। তোমাদের কেউ কি স্বীয় মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? এটা তো তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করে থাকো। আল্লাহকে ভয় করো। নিঃসন্দেহে তিনি তওবা কবুলকারী; দয়ালু।’ (সুরা হুজুরাত : ১২)।
পরস্পর সালাম না দেওয়া: বাবা-মা, ভাইবোন, স্বামী-সন্তানকেও অনেক নারী সালাম দিতে অভ্যস্ত নয়। এমনকি কেউ তাদেরকে সালাম দিলে উত্তর দেয় না বা শুনিয়ে দেয় না। অথচ রাসুল (সা.) পরস্পরে সালাম দিতে বলেছেন। (বোখারি : ২৮)।
একজনের কথা অন্যের কাছে লাগানো: এ ধরনের অন্যায় কাজ থেকে বেঁচে থাকা খুবই জরুরি। হাদিসে এসেছে, এ গোনাহ কবরের শাস্তি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। (বোখারি : ১৩৭৮)।
নিজেকে প্রদর্শনের মানসিকতা: অনেক নারী সাজসজ্জা করলে একান্তই পরপুরুষ বা পরনারীকে দেখানোর জন্য করে। এটা গর্হিত কাজ। তাদের উচিত, যথাসম্ভব ঘরে বসে স্বামীকে খুশি করার জন্য সাজসজ্জা করা, স্বামীর মন খুশি করা ও তার দৃষ্টি হেফাজতের ব্যাপারে সহায়তা করা। এজন্য তারা আল্লাহর দরবারে অনেক সওয়াব পাবে। (তিরমিজি : ১১৬১)।
সাজসজ্জার নামে হারাম কাজ করা: বিধর্মী ও অসভ্য নারীদের মতো স্টাইল করে চুল কাটা, ভ্রু প্লাগ করা, বিউটি পার্লারে গিয়ে অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করানো ইত্যাদি। (সুনানে আবি দাউদ : ৪০৩১)।
শরীর আবৃতকারী মোটা ঢিলেঢালা পোশাক না পরা: বর্তমানে অনেক নারী বোরকা তো চেনেই না, আবার ঢিলেঢালা পোশাক পরতেও ভুলে গেছে, যাতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার-আকৃতি বোঝা না যায়। ফলে সমাজে নারী নির্যাতনের মতো জঘন্য অপরাধ অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলেছে। (সুরা নুর : ৩১)।
ঘরের ভেতর পর্দা না করা: বাইরে পর্দা করলেও অনেকে পারিবারিক জীবনে পর্দার ধার ধারে না। খালাতো ভাই, মামাতো ভাই, ফুফাতো ভাই, দেবর-ভাসুরদের সঙ্গে পর্দার কথা চিন্তাও করে না। অথচ এদের সঙ্গেও পর্দা করার কথা হাদিসে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে। (তিরমিজি : ১১৭১)।
বোরকা পরেও পর্দা না করা: অনেকে বোরকা পরে, কিন্তু চেহারা খোলা রাখে। অথচ চেহারা সকল সৌন্দর্যের সমষ্টি। চেহারা আবৃত রাখা জরুরি। চেহারা, মাথা, চুল বা উভয় চোখ খোলা থাকলে বোরকা অর্থহীন। এমন পর্দা শরিয়তে গ্রহণযোগ্য নয়। অনেকে এমন নকশী বোরকা পরে, তাতে পুরুষদের আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়। এটাও বর্জনীয়। (সুরা নুর : ৩১)।
কাজকর্মে অযথা বিলম্ব করা: প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে অযথা ঘোরাঘুরি করে যাত্রা বিলম্ব করে অনেকে। শেষে গন্তব্য¯’ানে অসময়ে এবং ভোগান্তির শিকার হয়ে পৌঁছে। অথচ অযথা বিলম্ব না করে একটু আগে বেরুলেই পথের অনেক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো। (তিরমিজি : ২৩২৩)।
সফরে অতিরিক্ত আসবাব নেওয়া: সফরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামানপত্র নিয়ে বিরাট বোঝার সৃষ্টি করে অনেকে। যা বহন করতে সঙ্গী পুরুষদের কষ্ট হয়। এমনটা একেবারেই অনুচিত। (সুনানে নাসাঈ : ৪৯৯৬)।
অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করা: হাতে টাকা থাকুক বা না থাকুক, পছন্দ হলে অপ্রয়োজনীয় জিনিস হলেও কিনতে হবে অনেক নারীর। এর জন্য ঋণ করতেও দ্বিধা করে না। যদি ঋণ নাও করতে হয়, তবু নিজ টাকা অপ্রয়োজনে খরচ করা গোনাহ। তবে নিজের পছন্দের কোনো জিনিস যদি স্বামীরও পছন্দ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ওই জিনিসের প্রয়োজন পড়লে কিনে নেবে। (সুরা আনআম : ১৪১, বোখারি : ২৪০৮)।
উপকার করলে শোকরিয়া আদায় না করা : ঘরের বউ-ঝিয়েরা প্রশংসাযোগ্য কাজ করলেও শাশুড়ি কিংবা ননদরা তার শোকরিয়া আদায় করে না। এটা বড়ই সংকীর্ণমনার পরিচয়। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কারোর শোকরিয়া আদায় করে না, সে আল্লাহর শোকরিয়াও আদায় করে না। অর্থাৎ আল্লাহ তার শোকরিয়া কবুল করেন না।’ (বোখারি : ২৯, তিরমিজি : ১৯৫৫)।
উত্তর দিচ্ছেন : মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ। গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।