পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কয়েক মাস আগে বিয়ে করেছেন শোভন ও রিতা। দু’জনই চাকরিজীবী। আগামীর নিরাপত্তায় সংসারের শুরু থেকে সঞ্চয় করতে আগ্রহী এই দম্পতি, কিন্তু সঞ্চয়ের জন্য উপযুক্ত মাধ্যম কোনটি? ব্যাংক এবং সঞ্চয়পত্রের স্কিম যাচাই-বাছাই নিয়ে তৈরি হয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। তারা বলেন, প্রতি মাসে নির্ধারিত হারে অর্থ জমা করতে চান তারা। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকে নিরাপত্তা আছে, কিন্তু মুনাফার হার খুবই কম। এমনকি আমানতও কমতে পারে। আর জমানো কিছু টাকা আছে, সেটা রাখার ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্রে তুলনামূলকভাবে মুনাফার হার বেশি, তবে টিআইএনসহ নানা শর্ত ও ঝক্কিঝামেলার শেষ নেই।
শোভন ও রিতার মতোই সিদ্ধান্তহীনতায় বেসরকারি চাকরিজীবী রাজিব হোসেন। নতুন চাকরি তার। এ জন্য মাসে যে বেতন পান, তা থেকে সঞ্চয় করতে চান কিছু টাকা। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকই তার কাছে ভরসার জায়গা। কিন্তু মুনাফার হার খুবই কম। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করে পাঁচ বছর পর যে মুনাফা পাওয়া যাবে, তা আকাক্সক্ষার চেয়ে খুবই কম।
বর্তমানে ব্যাংকের সুদহার এত কমে গেছে যে, টাকা রেখে যে সুদ আসছে, তা দিয়ে মূল্যস্ফীতির ঘাটতিই মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে আমানতের সুদহার সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ওপর বিভিন্ন মাশুল কাটার পর ব্যাংক খাতে আমানতের গড় সুদহার বা মুনাফা মিলছে ৪ শতাংশের কিছুটা বেশি। অবশ্য ব্যাংকভেদে এর চেয়ে সামান্য বেশি পাওয়া যায়। দেশে গত ডিসেম্বর মাস শেষে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আগের মাস নভেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এর অর্থ হলো, ব্যাংকে টাকা রাখলে তা কমে যায়। আর হালালভাবে ‘সুকুক’ বিনিয়োগে মুনাফা মিলছে ৯ শতাংশ। এটি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ধরুন, ব্যাংকে কেউ ১০০ টাকা জমা রেখেছেন। সুদের হার ছয় ভাগ হলে বছর শেষে তিনি ১০৬ টাকা পাবেন। কিন্তু মূল্যস্ফীতির হারও ছয় ভাগ বা তার চেয়ে বেশি, তাহলে ১০০ টাকায় এখন যে পণ্য বা সেবা পাওয়া যায়, বছর শেষে তার জন্য ১০৬ টাকা বা তার চেয়েও বেশি খরচ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ব্যাংকে টাকা জমা রেখে সেই টাকা থেকে প্রকৃতপক্ষে কোনো আয় হবে না আমানতকারীদের। যদিও ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদহার ৪ শতাংশের আশপাশে। আর সুদের হার ছয়ের নিচে নামা মানেই মূল্যস্ফীতি ও টাকার ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় বছর শেষে মূল টাকা কমে যাওয়া। আর তাই ব্যাংক খাতেও আমানতের সুদহার নিয়ে বাড়ছে হতাশা।
সাধারণ আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা রাখে বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে মুনাফা পাওয়ার আশায়। কিন্তু কম সুদহার আর মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির কারণে বছর শেষে টাকা পাওয়া যাবে তাতে প্রকৃত আয় কমে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংক আমানতে সুদের হার কম। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে টিআইএনসহ নানা শর্ত ও ঝক্কিঝামেলার কারণে মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা কমছে। আর তাই নিম্ন-মধ্যবিত্ত, সীমিত আয়ের মানুষ, মহিলা, প্রতিবন্ধী ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিনিয়োগের আকষর্ণীয় মাধ্যম ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ‘সুকুক’। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। দেশের মানুষের ইসলামি ব্যাংকিংয়ের প্রতি আগ্রহ বেশ। আর তাই প্রতিদিনই দেশে ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমের পরিধি বাড়ছে। বর্তমানে দেশে ইসলামি ধারার ব্যাংকের সংখ্যা ১০। আরো অনেক ব্যাংক বিশেষায়িত শাখা ও উইন্ডো খোলার মাধ্যমে ইসলামি ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এ ছাড়া অন্য অনেক প্রচলিত ব্যাংকও এখন ইসলামি ধারার সেবা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানত ও ঋণের ২৭ শতাংশ হচ্ছে ইসলামি ব্যাংকগুলোর, যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
আর্থিক খাতের বিশ্লেষকদের মতে, মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে সুদের বন্ডের চেয়ে ইসলামিক বন্ডের (সুকুক) চাহিদা অনেক বেশি হবে। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড এই ‘সুকুক’। এটাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি বেক্সিমকোর মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘সুকুক’ বন্ড বাজারে আনায় এর আগ্রহ আরো বেশি হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া বলেছেন, বেক্সিমকোর মাধ্যমে দেশে সুকুক আল ইস্তিসানার উদ্বোধন বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত করেছে। এই পণ্যটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
সূত্র মতে, প্রথমবারের মতো দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানির (বেক্সিমকো) ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক গ্রিন সুকুক বন্ডের লেনদেন শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইস্তিসানা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গ্রিন সুকুক বন্ড। যার আকার তিন হাজার কোটি টাকা। এর মাধ্যমে বেক্সিমকো লিমিটেডের টেক্সটাইল ইউনিটের কার্যক্রম বাড়ানো এবং বেক্সিমকোর দু’টি সরকার অনুমোদিত সাবসিডিয়ারি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের (তিস্তা সোলার লিমিটেড এবং করতোয়া সোলার লিমিটেড) বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হবে।
বন্ডটি দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত ২২ ডিসেম্বর তালিকাভুক্তির অনুমোদন পাওয়ার পর গত ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন শুরুর দিনেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেশ আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। লেনদেনের দিক থেকে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নেয় সুকুক। লেনদেন শুরুর দাম ছিল ১১০ টাকা, যা ছিল দিনের সর্বোচ্চ দাম। সুকুকটির প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। লেনদেনের প্রথম দিন ৬ হাজার ৬ বারে সুকুকটির মোট ৩২ লাখ ৩২ হাজার ৭৭২টি ইউনিট লেনদেন হয়েছে। প্রথম দিনেই ডিএসই’র শীর্ষ লেনদেনের তালিকায় আট নম্বরে স্থান ছিল সুকুকটির। পাঁচ বছর মেয়াদি সিকিউরড কনভার্টেবল অথবা রিডেম্বল অ্যাসেট ব্যাকড এই সুকুক বিএসইসি থেকে অনুমোদন পাওয়া দেশের প্রথম গ্রিন সুকুক।
তবে এখনও বিনিয়োগকারীদের কাছে শরিয়াহভিত্তিক ‘সুকুক’ বন্ডে বিনিয়োগ একটি নতুন বিষয়। তাই সুকুকে বিনিয়োগ সম্পর্কে আরো জ্ঞান দরকার বলে মনে করছেন অনেক বিনিয়োগকারী। আব্দুর রহিম নামে এক বিনিয়োগকারী ইনকিলাবকে বলেন, শরীয়াহভিত্তিক ‘সুকুক’ বন্ডে বিনিয়োগ করার ইচ্ছা আছে। তবে বিষয়টি একেবারেই নতুন। তাই এটি সম্পর্কে আরো জানতে হবে।
সূত্র মতে, প্রচলিত আর্থিক বাজারে মুসলিম বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার আগ্রহ থাকলেও, নানা সীমাবদ্ধতায় তারা তা করতে পারছেন না। কারণ, শরিয়াহ্ আইন অনুযায়ী সুদ, জুয়া ও ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আর এ সমস্যাগুলোর বড় সমাধান হিসেবে সুকুক বা ইসলামিক বন্ড আবির্ভূত হয়েছে। ইসলামি আর্থিক নীতিমালার সম্মতিতে মুনাফার জন্য ট্রেজারি বন্ডের অনুরূপ হচ্ছে ইসলামি বন্ড সুকুক। চুক্তি এবং অন্যান্য দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে সুকুক ও প্রচলিত বন্ডের মধ্যে পার্থক্য আছে। ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক বন্ড সাধারণত ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। সুকুক একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেয়ার আইনি দলিল। প্রচলিত বন্ডে ইস্যুকারীর ঋণের দায়বদ্ধতার উপস্থাপন করে, অপরপক্ষে সুকুক কোনো সম্পত্তির মালিকানা নির্দেশ করে। সাধারণত সুকুকধারীরা সম্পদের মালিকানা লাভ করেন এবং মুনাফা পান। সুকুক ইস্যুকারী চুক্তি অনুসারে মেয়াদ শেষে ফেস ভ্যালুতে বন্ড কিনতে বাধ্য থাকে।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর আবু আহমেদ ইনকিলাবকে বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ আগে থেকেই সুদকে এড়িয়ে চলতে চায়। এ জন্য ইসলামি ব্যাংকিং খুবই জনপ্রিয়। আর তাই দেশে আরো আগেই সুকুক ছাড়ার দরকার ছিল। তবে দেরিতে হলেও সুকুক চালু করা হয়েছে। এটাকে ভালো উদ্যোগ উল্লেখ করে প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও সুকুক চালু করা হয়েছে, যা খুবই জনপ্রিয় হবে। যদিও এটি এমনিতেই আমাদের দেশে জনপ্রিয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক উবায়দুর রহমান খান নদভী ইনকিলাবকে বলেছেন, শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড সুকুক। মুসলিম দেশগুলোতে এটা বেশ প্রচলিত বা আস্থার নাম। দেশে সুকুক চালু একটি ভালো উদ্যোগ। পাশাপাশি বেক্সিমকোর মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘সুকুক’ বন্ড বাজারে আনায় এর চাহিদা আরো বাড়বে।
সূত্র মতে, মুসলিম দেশের পাশাপাশি অমুসলিম দেশেও এখন সুকুক চালু আছে। সুকুকের মধ্যে নৈতিক উপকরণও আছে, কারণ শূয়োরের গোশত, অ্যালকোহল, জুয়া, পর্নোগ্রাফি এবং তামাকের মতো কার্যকলাপের সাথে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সুতরাং এটি মুসলিম এবং অমুসলিম উভয় বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয়। সুকুক ছাড়ার দিক থেকে বর্তমানে মালয়েশিয়া বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। এছাড়া বাহরাইন, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, সউদী আরব, সিঙ্গাপুর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সুকুক ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
চলতি বাজেটে ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’ সম্পর্কে জনসাধারণকে আকৃষ্ট করতে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের বিনিয়োগলব্ধ আয়ের ওপর কর রেয়াত দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। ব্যক্তি শ্রোণর করদাতারা ট্রেজারি বন্ড থেকে ইতোমধ্যে এ ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন উল্লেখ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সুকুকে এ সুবিধা দেয়ার সুপারিশ করেছে।
সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো সুকুক প্রচলন করে সরকার ৮ হাজার কোটি টাকা তুলেছে। যেসব বিনিয়োগকারী সুদযুক্ত ট্রেজারি বিল (টি-বিল), বন্ড ও অন্যান্য সরকারি সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করতে অনাগ্রহী, সুকুক তাদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, সুকুক প্রচলনের আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর বহু বছরের জমে থাকা অলস তহবিলের ব্যবহার বাড়ানো। সঙ্গত কারণে, এ ব্যাংকগুলো প্রথাগত টি-বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেনি এবং তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত তারল্য ছিল। সুকুক একটি ইসলামিক আর্থিক সনদ, যেটি ট্রেজারি বন্ডের মতো কাজ করে।
গত বছরের অক্টোবরে এনবিআরের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে অর্থ বিভাগ জানায়, সুকুক সরকারের ইস্যু করা একটি ইসলামিক সিকিউরিটি। চিঠিতে আরো জানানো হয়, এতে ব্যক্তিপর্যায়ে বিনিয়োগের বিপরীতে কর সুবিধা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ট্রেজারি বন্ডের মতো সুকুকের মাধ্যমেও কর রেয়াত পাওয়ার সুযোগ দেয়ার সুপারিশ করা হয় চিঠিতে। সরকার শক্তিশালী বন্ড মার্কেট বিকাশে সুকুক বন্ডে এই নীতি সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এই ইসলামি বন্ডের সহজ প্রচলন ও বাজার শক্তিশালী হবে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেছেন, মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে সুদের বন্ডের চেয়ে ইসলামিক বন্ডের (সুকুক) চাহিদা অনেক বেশি। কারণ, শরিয়াহ্ আইন অনুযায়ী সুদ, জুয়া ও ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বর্তমান বাজারে উচ্চ মুনাফার সঞ্চয়ের মাধ্যম এমনিতেই সীমিত। সে হিসেবে সুকুক (ইসলামি বন্ড) নতুন বিনিয়োগের পথ খুলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সুকুক বন্ডে ফিক্সড সুদ নেই। এটি ট্রাস্টির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে মূলত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। আর ওই প্রকল্পের মালিকানার অংশীদার হয় সুকুক বন্ডের বিনিয়োগকারীরা, যা অন্য বন্ডে সুযোগ নেই। এছাড়া সুকুক বন্ড ব্যর্থ হলে, ওই প্রকল্পের সম্পদ বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দেয়ার সুযোগ থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।