Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রলীগ সভাপতির হাত থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থীর সংবাদ সম্মেলন

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৬ এএম

বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি), ছাত্রলীগ নেতা সরদার ইয়াছির আরাফাত নোমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানী, মারধর ও জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই এক শিক্ষার্থী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের স্নাতক (সম্মান) ইংরেজী ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসী। এসময় তার শ্বাশুড়ী বাগেরহাট শহরের দশানী ক্রস রোড এলাকার বাসিন্দা রেহেনা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। জান্নাতুল ফেরদৌসী ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান চৌধুরী নয়নের স্ত্রী। জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে আমার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষ করে স্বামীর (হাসান চৌধুরী নয়ন) সাথে রিকশাযোগে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের মূল সনদ আনতে সরকারি পিসি কলেজে যাই। কলেজ চত্বরে প্রবেশের পর সরদার ইয়াছির আরাফাত নোমানের অনুসারী আব্দুর রহমান শাহ, কাওসার, ইকবাল, বিতাসসহ কয়েকজন রিকশা অবরোধ করে, কলেজে কেন প্রবেশ করেছি জানতে চায় তারা। আমি বলি মার্কশীট নিতে এসেছি। এই কথাশুনে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তখন আমরা অতিদ্রæত রিকশা নিয়ে কলেজ ত্যাগের চেষ্টা করি। এসময় ওরা রিকশা পিছনের হুড ও আমার বোরকা টেনে ছিড়ে ফেলে। আমার শরীরেও হাত দেয় তারা। এক পর্যায়ে রিকশাওয়ালা দ্রæত রিকশা টান দিলে তারা রিকশা পিছনে ইটের টুকরা ছোড়ে।

রিকশা নিয়ে বাসার সামনে আসার পূর্বে তিনটি মোটরসাইকেলে আব্দুর রহমান শাহ, কাওসার, আরমানসহ কয়েকজন চলে আসে। তারা আমার ও আমার স্বামীর উপর হামলা করে। সিজারিয়ান রোগী হওয়ায় আমাকে মারধর না করতে হামলাকারীদের উপর অনুরোধ করেন আমার স্বামী। আমাদের ডাকি চৎকারে স্থানীয় লোকজন চলে আসলে হামলাকারীদের হাতে থাকা রামদা দিয়ে আমাদের ভয় দেখায়। এসবের মধ্যে ভিপি সরদার ইয়াছির আরাফাত নোমান ঘটনাস্থলে আসে।

তখন আমি ও আমার শ্বাশুরী তার পা জড়িয়ে ধরে আমার স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চাই। এতেও নোমান ভাইয়ের মন গলেনি। তখন আমার বুকের উপর লাথি মেরে বলে, ‘রক্ষিতা তুই চুপ কর। তোর স্বামীকে মারার জন্যই আমি এসেছি। সেও আমার স্বামীকে মারধর করতে শুরু করে। নোমান ও তার লোকদের মারধরে আমার স্বামীর ডান পা ভেঙ্গে যায়। এছাড়া আমার স্বামীর হাত ও মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগে। এক পর্যায়ে তারা আমার স্বামীর ফোন, ব্যাগে থাকা নগদ টাকা ও আমার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নেয় তারা।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এসবের মাঝে রাস্তা দিয়ে পুলিশের গাড়ি যাচ্ছিল। সেখান থেকে পুলিশ নোমানকে ধরে নিয়ে যায়। এবং আহত অবস্থায় আমার স্বামী, শ্বাশুড়ী ও আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার স্বামী এখনও বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরবর্তীতে আমি বাগেরহাট মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। বরং ওই দিন বিকেলেই অজানা কারণে নোমানসহ অন্যদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

জান্নাতুল ফেরদৌস আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে আমার একধরণের নজর দারির মধ্যে রয়েছে। যেখানে যাইনা কেন আমাদের উপর নজর রাখছেন তারা। যেকোন ভাবে আমাকে চেপে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। আমরা যদি নোমানের বিরুদ্ধে কোন কথাবলি তাহলে আমাদের মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে।


বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম জানান, জান্নাতুল ফেরদৌসের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ