Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবিতে শিবির অভিযোগে শিক্ষার্থীকে রাতভর ছাত্রলীগের নির্যাতন

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৬ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে শিবির অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ওই হলের পদ্মা বøকের ৪০০৮ নাম্বার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. শাহরিয়াদ মিয়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগ ও বিজয় একাত্তর হলের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন-হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ফয়সাল মিয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাজেদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ বাবু, শাকিরুল ইসলাম সাকিব, গণ যোগাযোগ উপ-সম্পাদক শাকিবুল ইসলাম সুজন, সাহিত্য সম্পাদক ইউসুফ তুহিন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক বায়েজিদ বোস্তামী, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক পিয়ার হাসান সাকিবসহ আরো বেশ কয়য়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। অভিযুক্ত সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার মধ্যরাতে শিবির সন্দেহে ভুক্তভোগী শাহরিয়াদকে পদ্মা বøকের ৪০০৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে মারধর করতে থাকে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মীরা। চড়-থাপ্পর থেকে শুরু করে বাঁশ ও কাঠ দিয়েও পেটানো হয়। বাবা-মা তুলে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিক পৌঁছালে তাদের উপস্থিতিতেই ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন ছাত্রলীগ কর্মীরা।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী তার শিবির সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন। এরপর আবারও তাকে তার সাথে কে বা কারা জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে ছাত্রলীগ কর্মীরা। তবে সকাল বেলা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের নির্দেশ দেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। পরে হল প্রশাসনের মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে সোপর্দ করা হলে শিবিরের সাথে ভুক্তভোগীর কোন সম্পৃক্ততা না পেয়ে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর।
নির্যাতনের বিষয়টি অভিযুক্ত একজন ছাত্রলীগ কর্মী স্বীকার করলেও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সবার সামনে নিজে স্বীকার করেছে যে শিবিরের সাথে জড়িত। তাকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং তাকে হল প্রভোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছ হস্তান্তর করা হয়েছে। তার থেকে আমরা আরো ১২ থেকে ১৩ জন শিবিরের কর্মীর নাম পেয়েছি এবং তাদেরকে নিয়ে আমরা পরবর্তীতে কাজ করব।
বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আব্দুল বাছির সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবির একটি নিষিদ্ধ সংগঠন। এর সাথে ওর (ভুক্তভোগী) সম্পৃক্ততা আছে বলে জেনেছি কিন্তু তার সম্পৃক্ততা আমরা শারীরিকভাবে দেখিনি। যেহেতু সে স্বীকার করেছে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী এসব বিষয় প্রক্টর দেখবেন।
শিবির সংশ্লিষ্টতার স্পষ্ট কোন তথ্য প্রমাণ না পাওয়ায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী। ### রাহাদ উদ্দিন



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ