মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা এক নারীর সাথে প্রয়াত ব্যবসায়ী জেফরি এপস্টেইনের একটি চুক্তি প্রকাশ্যে এসেছে। প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে চলমান একটি যৌন নিপীড়নের মামলা থেকে তাকে রক্ষা করার জন্য ওই চুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করা আদালতের নিষ্পত্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে।
এপস্টেইন এবং ভার্জিনিয়া রবার্টসের (বর্তমানে ভার্জিনিয়া জিওফ্রে নামে পরিচিত) মধ্যে ২০০৯ সালে ওই বন্দোবস্ত চুক্তি হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে ‘অন্য যেকোন ব্যক্তি বা সত্তার’ জন্য দায় থেকে মুক্তি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার প্রকাশিত আদালতের একটি নথি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
জিওফ্রে গত আগস্টে অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার অভিযোগ, দুই দশকেরও বেশি সময় আগে প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাকে যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করেছিলেন। তার বয়স তখন ১৭ বছর ছিল। সে সময় তিনি লন্ডনে এপস্টাইনের সাবেক সহযোগী গিসলাইন ম্যাক্সওয়েলের বাড়িতে ছিলেন। জিওফ্রে বলেছেন যে, প্রিন্স অ্যান্ড্রু এপস্টাইনের দুটি বাড়িতেও তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপণ করেছেন। তবে প্রিন্স অ্যান্ড্রু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এপস্টাইনের সাথে সম্পন্ন মীমাংসা চুক্তির মাধ্যমে জিওফ্রেকে ৫ লাখ ডলার প্রদান করা হয়েছিল। অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা তার দেওয়ানী মামলার অংশ হিসাবে এই চুক্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। চুক্তিতে জিওফ্রের অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে যে, এপস্টাইন তাকে কিশোরী হিসেবে ফ্লোরিডার পাম বিচে তার এস্টেটে ‘যৌন দাসী’ হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।
৬১ বছর বয়সী প্রিন্স অ্যান্ড্রু মামলা খারিজ করার জন্য যুক্তি দিয়েছিলেন যে, এপস্টাইন এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার মাধ্যমে জিওফ্রে ‘অর্থ’ চাইছেন। ৩৮ বছর বয়সী জিওফ্রে অ্যান্ড্রুর কাছ থেকে অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। যুবরাজের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক অন্যায়ের অভিযোগ নেই।
প্রিন্স অ্যান্ড্রুর প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী অ্যান্ড্রু ব্রেটলার বলেছেন যে, চুক্তিটি ‘প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং অন্যদেরকে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে মিসেস জিওফ্রের করা অভিযোগ থেকে উদ্ভূত যে কোনও কথিত দায় থেকে মুক্তি দেয়’। আইনজীবী ডেভিড বয়েস, যিনি জিওফ্রের প্রতিনিধিত্ব করেন, সোমবার একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, তার ক্লায়েন্ট এবং এপস্টাইনের মধ্যে মীমাংসার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য আসামীদের রক্ষা করার ভাষাটি প্রিন্সের মামলার অংশে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ছিল কারণ অনুচ্ছেদে তার কথা উল্লেখ ছিল না। বয়েস বলেছিলেন যে, তিনি এপস্টাইন-জিওফ্রে চুক্তিটি ‘প্রিন্স অ্যান্ড্রু’র জনসংযোগ প্রচারাভিযানের দ্বারা করা দাবিগুলি খণ্ডন করার জন্য প্রকাশ্যে আনতে চান।
২০০৯ সালে করা চুক্তির ধারাটি জিওফ্রেকে অ্যান্ড্রুর মামলা করতে বাধা দেয় কিনা তা নির্ধারণ করা এখন মার্কিন জেলা বিচারক লুইস কাপলানের উপর নির্ভর করবে। সিভিল মামলা খারিজ করার জন্য অ্যান্ড্রুর গতির বিষয়ে একটি শুনানি মঙ্গলবার নির্ধারিত হয়েছে। এপস্টেইনকে ২০১৯ সালে তার জেলের সেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল যা পরে কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যার রায় দেয়। তিনি তার নিজের যৌন পাচার মামলায় বিচারের অপেক্ষায় ছিলেন।
অ্যান্ড্রুর আইনজীবীরা একাধিক ভিত্তিতে দেওয়ানী মামলাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, যার মধ্যে বলা হয়েছে যে জিওফ্রে গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময় অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেছেন এবং সঠিকভাবে কলোরাডোর বাসিন্দা বলে দাবি করতে পারেন না, যেখানে তার মা থাকেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে, প্রিন্স অ্যান্ড্রু বিবিসি নিউজনাইট প্রোগ্রামে বলেছিলেন যে, তিনি কখনও জিওফ্রের সাথে যৌন সম্পর্ক করেননি। বলেছিলেন, ‘এটি ঘটেনি।’ তিনি বলেছিলেন যে, তার সাথে কখনও দেখা করার ‘কোনও স্মৃতি’ নেই।
প্রসঙ্গত, নারী পাচারের দায়ে অভিযুক্ত জেফরি এপস্টাইনের সাথে মেলামেশার কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ডিউক অব ইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রু। যার জেরে নভেম্বর ২০১৯-এ অনেক রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, এপস্টাইনের সাথে তার মেলামেশা ‘আমার পরিবারের কাজে বাধা’ হয়ে উঠেছে।
জিওফ্রের করা মামলাটি ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিচার থেকে পৃথক যা গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। ৬০ বছর বয়সী ম্যাক্সওয়েল ১৯৯৪ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে এপস্টাইনের জন্য মেয়েদের নিয়োগ এবং সহযোগিতার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। সূত্র: বিবিসি নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।