বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বছরের পর বছর ধরে রাজশাহী মহানগরবাসীকে পানের অযোগ্য পানি রাজশাহী ওয়াসা সরবরাহ করে মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে ফেলার পর এবার সেই পানের অযোগ্য পানির দাম তিনগুনের বেশী বাড়াতে যাচ্ছে। বছরের শুরুতে ওয়াসার এমন পদক্ষেপকে সাধারন মানুষ হঠকারী আর অনায্য বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছে।
রাজশাহী ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করে তা একেবারে পানযোগ্য নয়। সম্প্রতি রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পানির পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছে এ পানিতে রয়েছে দুষিত টোটাল কলিকর্ম। এটি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে পানির নমুনা নিয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে পাঠিয়েছিল। সেখান থেকে এমন রিপোর্ট আসায় তারা মুখে কুলুপ আঁটে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা না করে উল্টো এখন পানির দাম তিনগুন বাড়াতে যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র রসায়নবিদ শফিকুল ইসলামের অভিমত পানিতে দুষিত টোটাল কলিফর্ম মান মাত্রা থাকতে হবে শূন্য। এর বেশী হলে পানিকে পানের অযোগ্য ধরা হয়। ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পানের ফলে মানুষ ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এরই মধ্যে মরার উপর খাড়ার ঘাঁর মত এক লাফে তিন গুণ বাড়ানো হচ্ছে পানির দাম। রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ো:নিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন মূল্য কার্যকর করবে। বেশি দামে পানি বেচে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছে দেউলিয়া হয়ে পড়া সরকারি এই প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ১ হাজার লিটার পানি উত্তোলন, পরিশোধন ও সরবরাহে ওয়াসার খরচ হয় ৮ টাকা ৯০ পয়সা। এত দিন আবাসিক সংযোগে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো ২ টাকা ২৭ পয়সা। আবাসিকে সেটি বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৬ টাকা ৮১ পয়সা। বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে হাজার লিটার পানির মূল্য ধরা হবে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা। এখন এই পানির দাম ৪ টাকা ৫৪ পয়সা। আবাসিক ও বাণিজ্যিক উভয়ের ক্ষেত্রেই পানির দাম পুরোপুরি তিনগুণ বাড়ানো হচ্ছে।
আবাসিক ও বাণিজ্যিক যেসব সংযোগে মিটার নেই, সেগুলোর ক্ষেত্রে সংযোগ পাইপের ব্যাস ও ভবনের তলার ওপর নির্ভর করে মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। আবাসিকে আধা ইঞ্চি পাইপে নিচতলার জন্য মাসে সর্বনি¤œ ১৫০ টাকা এবং দশতলার জন্য ৮২৫ টাকা মূল্য ধরা হবে। এক ইঞ্চি পাইপে নিচতলায় ৩৭৫ টাকা এবং দশতলায় ২ হাজার ৭০ টাকা। দ্বিতীয় থেকে নবম তলা পর্যন্ত কিংবা দশতলার ওপরের তলার জন্য পানির বিল আনুপাতিক হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
যেকোনো ধরনের আবাসিক ভবনে দেড় ইঞ্চি পাইপে ৫ হাজর ৬২৫ টাকা, ২ ইঞ্চিতে ৭ হাজার ৫০০, ৩ ইঞ্চিতে ৯ হাজার ৩৫০ এবং ৪ ইঞ্চিতে ১১ হাজার ২৫০ টাকা ধরা হয়েছে। বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে নিচতলায় আধা ইঞ্চি পাইপে মাসিক ৩০০ টাকা এবং দশতলায় ১ হাজার ৬৫০ টাকা মূল্য ধরা হয়েছে। এক ইঞ্চি পাইপে নিচতলায় ৭৫০ টাকা এবং দশতলায় ৪ হাজার ১৪০ টাকা ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় থেকে নবম এবং দশতলার ওপরের তলার জন্য বিল বাড়বে আনুপাতিক হারে। বাণিজ্যিকে দেড় ইঞ্চি পাইপের জন্য ১১ হাজার ২৫০ টাকা, ২ ইঞ্চিতে ১৫ হাজার, ৩ ইঞ্চিতে ১৮ হাজার ৭৫০ এবং ৪ ইঞ্চিতে ২২ হাজার ৫০০ টাকা ধরা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা। এখন ১০৩টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করছে ওয়াসা। নগরীতে পানির চাহিদা প্রতিদিন ১১ কোটি ৩২ লাখ লিটার। তবে ওয়াসা ৯ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারে। ৭১২ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে এই পানি নগরীতে সরবরাহ করা হয়।
এ বিষয়ে রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীর হোসেনের কথা হলো রাজশাহী ওয়াসা বোর্ড এবং সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন নিয়েই পানির মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন মূল্য কার্যকর হবে।’
এক লাফে তিনগুণ মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, ‘বিষয়টাকে আমরা সেভাবে দেখছি না। সর্বশেষ ২০১৪ সালে পানির মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। দেশের অন্যান্য স্থানে পানির মূল্য এর চেয়েও বেশি। উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমাদের মূল্য বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।