যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
যেকোনো ভিটামিন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভিটামিন-এ ও বি এর মতো ভিটামিন-ডিও শরীরের জন্য অনেক কার্যকর। ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি, দাঁত এবং হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন-ডি। তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তের সর্বোত্তম মাত্রা বজায় রাখতে দৈনিক ১০০০-৪০০০ আইইউ কিংবা ২৫-১০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-ডি গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন-ডি গ্রহণে দেখা দিতে পারে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
তাহলে এবার দেখে নেওয়া যাক, মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি এর কুফল সম্পর্কে কিছু তথ্য-
১) হাইপারক্যালসেমিয়া
এটি মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি গ্রহণের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। হাইপারক্যালসেমিয়ার ক্ষেত্রে রক্তে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আমরা সকলেই জানি যে, ভিটামিন- ডি মূলত খাবার থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সহায়তা করে। তাই শরীরে মাত্রা অতিরিক্ত ভিটামিন-ডি এর অর্থ হল, ক্যালসিয়ামের শোষণও বেশি হওয়া। এর ফলে খিদে কমে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, উচ্চ রক্তচাপ, ক্লান্তি এবং বমি বমি ভাবের মতো বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
২) কিডনির সমস্যা হওয়া
মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি মূলত কিডনি রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। অতিরিক্ত ভিটামিন-ডি এর কারণে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বারবার প্রস্রব পাওয়া কিংবা কিডনিষ্টোনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যারা ইতোমধ্যেই কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন-ডি গ্রহণ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
৩) হজমের সমস্যা দেখা দেয়
শরীরে ভিটামিন-ডি এবং ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে পাকস্থলীতে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা ডায়রিয়ার মতো বিভিন্ন হজম সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এগুলো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। তাই যেকোনো ধরনের সম্পূরক গ্রহণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪) হাড় ক্ষয়
হাড়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি কিন্তু হাড়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম। তাই হাড়ের সর্বোত্তম স্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসক নির্ধারিত মাত্রায় ভিটামিন-ডি এবং ক্যালসিয়াম গ্রহণ করুন।
৫) খিদে কম পাওয়া এবং বমি বমি ভাব
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি এর কারণে খিদে কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এগুলো মূলত হাইপারক্যালসেমিয়ার সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত।
৬) অত্যধিক ক্লান্তির অনুভূতি
আপনি কী শরীরে কোনো শক্তি পান না? আপনার কী অত্যাধিক ক্লান্তির অনুভূতি হয়? তাহলে এটি মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি গ্ৰহণের কারণে হতে পারে। এটিও মূলত হাইপারক্যালসেমিয়ার সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত।
৭) বিরক্তির অনুভূতি হওয়া
বারবার বিরক্ত হওয়া বা খিটখিটে মেজাজ, হাইপারক্যালসেমিয়ার অন্যতম সাধারণ লক্ষণ। যা মূলত ভিটামিন-ডি এর আধিক্যজনিত কারণে হয়ে থাকে। তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-ডি, মস্তিষ্কের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতেও সক্ষম। এর থেকে বিভ্রান্তি, সাইকোসিস কিংবা বিষণ্নতার মতো বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই এই ধরনের উপসর্গগুলো লক্ষ্য করা মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।