পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয়করণ হওয়া দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেলের অর্থ ফেরত দেওয়াসহ ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ‘জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোট’। দাবি মেনে না নিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণকর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষকরা।
গতকাল মোঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টার দিকে আলটিমেটামের মাধ্যমে শেষ হয় এই মহাসমাবেশ। মহাজোট আহ্বায়ক মো.আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাথমিকের প্রায় তিন হাজারের অধিক শিক্ষক অংশ নিয়েছেন।
তাদের অন্য দুটি দাবি হলো- প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক জাতীয়করণ-২০১৩ নীতিমালা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ শিক্ষককে জ্যেষ্ঠতা দেওয়া ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে পদোন্নতি পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি বাস্তবায়ন করা।
সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক আবদুর রহমান বাচ্চুর সঞ্চালনায় সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতার চরম দুঃসময় অতিবাহিত করছে। শিক্ষকদের ভোগকৃত টাইমস্কেল কর্তন ও জ্যেষ্ঠতার তালিকা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অধিগ্রহণকৃত বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক বিধিমালা ২০১৩-বিধি (৯) উপবিধি (১) এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যেমন অধিগ্রহণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের উল্লেখিত বিধি বিধান অনুযায়ী কার্যকর ২০শতাংশ চাকরিকালের ভিত্তিতে জ্যৈষ্ঠতা নির্ধারণ, পদোন্নতি, সিলেকশন গ্রেড এবং প্রযোজ্য টাইমস্কেল প্রাপ্য হয়ে আসছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবরের এক পত্রের মাধ্যমে বিভাগ ওয়ারী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের অধিদপ্তরে ডেকে এনে কার্যকর চাকরিকালের ৫০শতাংশ ভিত্তিতে চাকরিকাল গণনা না করে বিধি ৯ উপবিধি (১) এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কার্যকর চাকরিকালের পরিবর্তে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি ধরে জ্যৈষ্ঠতা তালিকা করার মৌখিক নির্দেশনা দেন। তালিকা অনুযায়ী পুরাতন বিদ্যালয়ে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ১৮ হাজার সহকারী শিক্ষক, প্রধান শিক্ষকের পদে চলতি দায়িত্ব পেলেও সারাদেশে অনেক জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক থাকা সত্তে¡ও একজনকে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়নি।
তারা বলেন , জাতীয়করণকৃত সহকারী শিক্ষকদের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যতগুলি আইন ও পরিপত্র জারি করা হয়েছে তার কোনটাতেই জাতীয়করণের তারিখ ধরে গণনা করার কথা বলা হয়নি। বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে কার্যকর চাকরিকাল ৫০ শতাংশ হিসাব ধরে গণনা করার কথা উল্লেখ আছে। দীর্ঘ ৮ বছর পর একই কায়দায় বিধি ৯ উপবিধি (১) এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছুসংখ্যক ষড়যন্ত্রকারীর কুপ্ররোচনায় গেজেট সংশোধন করে জাতীয়করণের পূর্বের ৫০শতাংশ চাকরিকাল গণনা বাদ দিয়ে ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের ভোগকৃত টাইমস্কেল ফেরত প্রদানের জন্য একটি পত্র জারি করেন। যার কারণে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষক চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন । ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষক মৃত্যুবরণ ও অবসরে চলে গিয়ে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করছেন বলেও জানান তারা। তাই তারা অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পত্রটি প্রত্যাহার করার দাবি জানান। এছাড়াও গেজেট প্রকাশ করার সময় কিছু প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার পরও ভুল বশত গেজেটে প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রকাশিত না হয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রকাশিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন বক্তারা।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণি দিয়েছেন, আমাদের সরকারি শিক্ষকদের ১৩ তম গ্রেডে উন্নীত করেছেন, আমার প্রশ্ন সেই জাতীয়করণকৃত শিক্ষকরা কেন আজ শহীদ মিনারে? তারা আজকে কেনো রাজপথে আসবে? প্রধানমন্ত্রী সব দিয়েছেন। গেজেট দিয়েছেন, পরিবর্তন দিয়েছেন। এই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কারা? সরকারি আমলারা। আমাদের এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের আন্দোলন ঐসব কুচক্রী আমলাদের বিরুদ্ধে যারা ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
সমাবেশ থেকে তাদের দাবিগুলো মানার জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দাবি না মানা হলে আগামী ১ ফেব্রুয়ারী থেকে তিন দিন, ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে সাতদিন এবং তাও দাবি মানা না হলে ১ মার্চ থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোট।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।