Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

করোনার অতিসংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রন

| প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

এমনিতেই করোনা নিয়ে গোটা পৃথিবীর মাথা ব্যথার শেষ নেই। এর মধ্যে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রন। এটি দক্ষিন আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের নতুন এ ধরনের নাম দিয়েছে ‘অমিক্রন’। গ্রিক বর্ণমালা দিয়ে এর আগে যেমন আলফা ও ডেলটার নামকরণ করা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এ ধরনের এমন নাম দেওয়া হয়েছে। নতুন নাম দিয়ে সংস্থাটি অমিক্রনকে করোনাভাইরাসের ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সেন্টার ফর এপিডেমিক রেসপন্স অ্যান্ড ইনোভেশনের পরিচালক টুলিও ডি অলিভেরা বলেছেন, অমিক্রন বহুবার ‘অস্বাভাবিকভাবে রূপ বদল’ করেছে। এ পর্যন্ত ছড়ানো ধরনগুলোর চেয়ে এটা ‘অনেকটাই আলাদা’। তিনি আরও বলেন, ‘ধরনটি আমাদের খুব অবাক করেছে, বিবর্তিত হওয়ার জন্য বড় বড় ধাপ পার হয়েছে এবং ধারণা অনুযায়ী অনেকবার জিনগত রূপ বদলেছে। গত ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দুইজনের শরীরে অমিক্রন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। শনাক্ত হওয়া দুই জন জিম্বাবুয়ে ফেরত নারী ক্রিকেটার। ওই দুই নারী ক্রিকেটার দেশে ফিরলে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে তাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষায় তাদের দেহে ধরা পড়া ধরনটি অমিক্রন বলে নিশ্চিত করা হয়। আর করোনার অন্য ধরনের সঙ্গে অমিক্রনের তুলনার প্রশ্নে ভারতের সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, নতুন ধরনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। শেষ ভারতে শনাক্ত হওয়া অতি সংক্রামক ডেলটা ধরন বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। স্বামীনাথন বলেন, ডেল্টার চেয়েও অনেক বেশি সংক্রামক হতে পারে অমিক্রন; যদিও এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় এখনো আসেনি। কয়েক দিনের মধ্যে অমিক্রন ধরন নিয়ে আরও তথ্য জানা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। নতুন এ ধরনে আরও উদ্বেগের বিষয় রয়েছে। ভাইরাসের যে অংশ প্রথম মানুষের দেহকোষের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়, তার নাম রিসেপ্টর বাইন্ডিং ডোমেইন। অমিক্রনের সেই রিসেপ্টর বাইন্ডিং ডোমেইন ১০ বার রূপ পরিবর্তন করেছে। এর আগপর্যন্ত শনাক্ত সবচেয়ে সংক্রামক ডেলটা ধরনের ক্ষেত্রে এ বদল ঘটেছিল মাত্র দুবার।

দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড লেসেলস বলছেন, ‘এ ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা এবং এক মানুষ থেকে অন্য মানুষে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা আরও বেশি। এসব আমাদের শঙ্কার মধ্যে ফেলেছে। আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে ভেদ করার কিছু ক্ষমতাও সম্ভবত এর রয়েছে। ইউরোপের দেশে দেশে এটি খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে, নেদারল্যান্ডে শুরু হয়েছে লকডাউন। এটি দ্রুত গতিতে ছড়ালেও এ থেকে মৃত্যু কম হচ্ছে। ইংল্যান্ডেই প্রথম অমিক্রনে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। তবে এমন উদাহরণও আছে, কাগজে-কলমে অনেক ধরনকে বিপজ্জনক মনে হলেও পরে দেখা যায় তেমন কিছুই নয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে বেটা ধরন নিয়ে সবার মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। কারণ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে বেটার জুড়ি ছিল না। কিন্তু ডেলটা ধরন আরও দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল ও তার তান্ডব সকলকে হতবাক করে দিল।

বেশ কিছুদিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী থাকলেও কিছু কিছু দেশে আবার তা দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করেছে। আবার বর্তমানে বিশ্বের মাথাব্যথার কারন অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এসব রোগীর চিকিৎসায় লক্ষণ ভিত্তিক হোমিও ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে রুগীর স্বাস্থ্য পুনর্বাসনে সহায়তা করা যেতে পারে। করোনা মোকাবেলায় হোমিও চিকিৎসকগণ লক্ষণ সদৃশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের কথা উল্লেখ করেছেন।

হোমিও সমাধানঃ- হোমিওপ্যাথি হলো একটি লক্ষণভিত্তিক প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। ডা. স্যামুয়েল হানেমান এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রবর্তক। তিনি ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রবর্তন করেন এবং ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি এই চিকিৎসাকার্য পরিচালনা করেন। সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখেনা, আর হোমিওপ্যাথি হলো রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এই শীতের মৌসুমে ঘোরাঘুরি বা যেকোনো রকম জনসমাগম করতেই হলে সীমিত পরিসরে অল্পসংখ্যক মানুষকে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর অমিক্রন নিয়ে জনমনে যেন আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রচারণা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। আর নতুন ভ্যারিয়েন্ট থেকে নিরাপদ থাকতে করোনার টিকা নেয়া এবং নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।

মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
হোমিও চিকিৎসক, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য
প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সোসাইটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন