পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বার্মিংহাম থেকে মোঃ হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দী : এ যেন প্রত্যাশার এক চরম প্রাপ্তি। চোখে মুখে সবার আনন্দের ছাপ। যান্ত্রিক জীবনের হাজারও ব্যস্ততার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে কর্মীদের নিরলস কর্ম যেন এক সফলতার হাতছানি। এটাই যেন শেষ নয়. উদ্যোক্তাদের অদম্য কর্মস্পৃহা ও দীপ্ত শপথ ইঙ্গিত দিচ্ছে, আরো অনেক দূর যাবার। যে প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে বাস্তব এই কথামালার সমাহার, তা হলো ব্রিটেনের অন্যতম দ্বীনি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্স। অসংখ্য দাতা ও শুভাকাক্সক্ষীদের অফুরন্ত ভালবাসা, এক ঝাঁক নিবেদিত কর্মীদের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা ও সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতায় বহু প্রত্যাশিত ব্রিটেনের অন্যতম বহুমুখী দ্বীনী শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্স আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। গত ২৩ অক্টোবর দুপুর ১২টার সময় বহুপ্রত্যাশিত এ সুবিশাল কমপ্লেক্সের একটি ভবন এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুভ উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষে কমপ্লেক্সটিকে বর্নিল সাজে সাজানো হয়; আনন্দ এবং প্রাপ্তি ছোঁয়া মিলে সর্বত্র।
ব্রিটেনের মূলধারার শিক্ষার সাথে ইসলামি শিক্ষার সমন্বয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে ‘দি ব্রিটিশ মুসলিম স্কুল’ নামে একটি আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এতে দেশ-বিদেশের ছাত্ররা আবাসিক ও অনাবাসিক সুবিধাসহ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ লাভ করবে।
দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ, উলামায়ে কেরাম ও কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও শত শত জনতার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির মধ্য দিয়ে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন, সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ উস্তাজুল উলামা হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী। প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে নিয়ে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্সের অন্যতম ফাউন্ডার মেম্বার বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আলহাজ নাছির আহমদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উস্তাজুল মুহাদ্দিছিন, আরব আমিরাতের সাবেক বিচারপতি শায়খুল হাদিছ আল্লামা হবিবুর রহমান, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক কবি মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান ঢাকা, প্রবীণ আলেমে দ্বীন হযরত আল্লামা মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী। অনুষ্ঠানে কমপ্লেক্সের সার্বিক পরিকল্পনা তুলে ধরেন কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কমপ্লেক্সের সেক্রেটারি মোঃ মিসবাউর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোঃ খুরশেদুল হক ও প্রেস এন্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি মোঃ হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লন্ডন দারুল হাদিছ লতিফিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাহহার, শিক্ষক মাওলানা মারুফ আহমদ, সলসবারি কাউন্সিলের কাউন্সিলার আতিকুল হক, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুল হক নোমানী, লতিফিয়া ফুলতলী কমপ্লেক্সের ফাউন্ডার মেম্বার কাউন্সিলার আহমেদুল হক এমবিই, মাওলানা কাজী সেলিম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ ও মাওলানা রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা হুসাম উদ্দিন আল হুমায়দী ও মাদরাসার ছাত্র হামজা আহমদ। নাশিদ পরিবেশন করেন ক্বারী মাহফুজুল হাসান খান, ক্বারী মতিউর রহমান ও ক্বারী খয়ের আহমদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী কমপ্লেক্সের কাজের ভূয়শী প্রশংসা করে বলেন, আমি আশা করি ব্রিটেনে দ্বীনি শিক্ষার ক্ষেত্রে এই কমপ্লেক্স উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। এই কমপ্লেক্স থেকে বহু আলেম উলামা ও আশেকে রাসুল (সঃ) বের হবেন এবং দেশ-বিদেশে দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে ভ’মিকা রাখবেন। তিনি উপস্থিত সকলকে কমপ্লেক্সের কাজে সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি শায়খুল হাদিছ আল্লামা হাবিবুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এ দেশে আমাদের পীর ও মুর্শিদ নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ফুলতলী ছাহেব ক্বিলাহ জীবিত থাকলে দ্বীনের খেদমতে এই কমপ্লেক্স গড়ে ওঠার দৃশ্য দেখলে খুবই খুশি হতেন। মিডল্যান্সের মত স্থানে এরূপ একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে যাঁরা সহায়তা করেছেন তাঁদের প্রতি ছাহেব ক্বিবলাহর রুহ খুশি থাকবে বলেও তিনি জানান। পরিশেষে, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।