Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদ সদস্যকে প্রধান অতিথি না রেখেই ইউএনও সভাপতি, অনুষ্ঠান বর্জন আওয়ামীলীগের

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:১৯ পিএম

বরগুনার তালতলীতে বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে মহান বিজয় দিবস ও সুবর্ণজয়ন্তী পালনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি শপথ গ্রহণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে প্রধান অতিথি না রেখেই ইউএনও নিজেই সভাপতি থাকায় অনুষ্ঠান বর্জন করেন তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন। তবে উপজেলা ছাত্র দলের দুই সাবেক সভাপতিকে ইউএনও’র পাশে বসিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, গতকাল বিজয় দিবস উপলক্ষে ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তালতলী উপজেলা প্রশাসন। এ আয়োজনের আমন্ত্রণ পত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড.ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবিউল কবিরকে বিশেষ অতিথি লেখা রয়েছে তবে অনুষ্ঠানের ব্যানারে তাদের নাম ব্যবহার করা হয়নি। শুধুমাত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হোসেন সভাপতি হিসেবে ব্যানার করা হয়। সকালের অনুষ্ঠানে এই ব্যানার ব্যবহার করেনি তাই দিনের সকল অনুষ্ঠান শেষ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন।

আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড.ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি’র নাম ব্যানারে নেই এমন কি উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবিউল কবির কে বিশেষ অতিথি করা হয়নি। এটা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজ। নিন্দার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। অনুষ্ঠান বর্জন করেন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন। এছাড়াও সকালের অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসন দখল দিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে ইউএনও’র আত্মীয় ও স্ত্রী’র। আসন না পেয়ে ফিরে আসেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মু.তৌফিকউজ্জামান তনু, তালতলী প্রেসক্লাবের সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

এদিকে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন অনুষ্ঠান বর্জন করলেও তালতলী উপজেলা বিএনপি’র সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের সাবেক দুই সভাপতি সাইফুল ইসলাম মামুন ও আতিকুর রহমান অসিমকে ইউএনও’র পাশে আসনে বসিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক উপভোগ করেন বলে অভিযোগ করেন আওয়ামীলীগ।

তালতলী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মু. আ. মোতালিব বলেন, গতকালের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের অবমূল্যায়ন করেন ইউএনও। এজন্য আমরাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে চলে আসছি। তিনি আরও বলেন সংসদ সদস্যের নাম না থাকার বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মু. তৌফিকউজ্জামান তনু বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যকে প্রধান অতিথি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম ব্যানারে বিশেষ অতিথি না দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে তার নাম সভাপতি হিসেবে দেওয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগ অনুষ্ঠান বর্জন করেন। কিছু ভিআইপি আসন নির্ধারিত রাখা হয়েছে। সেখানে ইউএনও’র স্ত্রী আত্মীয়রা দখল করে রাখেন তাই আসন না পেয়ে চলে আসছি। তিনি আরও বলেন আওয়ামীলীগ অনুষ্ঠান বর্জন করলেও ছাত্রদলের দুই সাবেক সভাপতিকে পাশে বসিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ব্যানার না দেখে সকালের সকল অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় এসেছি। বিকালের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগেই সংবাদ পাই যে ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা হয়নি। তাই আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সবাই মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জন করা হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আসন না পেয়ে ফিরে আসার বিষয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওছার হোসেন বলেন, অনুষ্ঠান বর্জনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রধান অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্যে’র নাম থাকার কথা ছিলো কিন্তু সে অনুপস্থিত থাকায় কোনো অতিথি’র নাম লেখাই ছিলো না। তাই সরকারের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম দেওয়া হয়েছে। বর্জন করলে এতে কিছু যায় আসে না, এটা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। তারা যদি মনে করেন রাষ্ট্রের বাহিরের কেউ তাহলে বর্জনের প্রশ্ন আসতে পারে।

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কেউ আমার কাছে কোনো অভিযোগও করেনি। তাই কোনো মন্তব্য দিবো না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরগুনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ