Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতি স্বীকার না করা এবং হস্তক্ষেপকে অগ্রাহ্য করতে শি-পুতিন ঐকমত্য

রাশিয়াকে ফের হুঁশিয়ারি ইইউ, জার্মানি ও ব্রিটেনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

পশ্চিমাদের চাপের নতি স্বীকার না করা এবং যে কোন হস্তক্ষেপকে অগ্রাহ্য করতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার ভিডিও লিংকে কথা বলেন বিশ্বের প্রভাবশালী এই দুই রাষ্ট্রনেতা। এক সপ্তাহ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে ইউক্রেন নিয়ে বাইডেন পুতিনকে কড়া হুমকি দেন। পশ্চিমারা চীন ও রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। এরই মধ্যে শি ও পুতিনের মধ্যে ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হলো। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শি জিনপিংয়ের বরাত দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, বর্তমানে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের নামে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি চীন ও রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক নীতির ওপর নিষ্ঠুর হস্তক্ষেপ করছে। নিজেদের নিরাপত্তা এবং স্বার্থ রক্ষায় চীন ও রাশিয়ার যৌথ প্রচেষ্টা আরো বাড়ানো উচিত। ক্রেমলিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ সাংবাদিকদের জানান, পশ্চিমাদের চাপ থেকে রক্ষায় রাশিয়াকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন শি জিনপিং। তিনি রাশিয়ার উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ইউরি উশাকভ বলেন, দুই প্রেসিডেন্টই অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অকাস চুক্তি এবং অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে কোয়াড জোট গঠনের সমালোচনা করেছেন। এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে আবারো রাশিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি এবং ব্রিটেন। ইইউর নির্বাহী কমিশন সতর্ক করেছে, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত নিলে আরো অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য তারা প্রস্ত্তত। জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজও পার্লামেন্টে বলেছেন, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বে আঘাত করলে রাশিয়াকে তার মূল্য দিতে হবে। কয়েক ঘণ্ট পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলার প্রতিজ্ঞাই করে থাকে তাহলে কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। চীনের বক্তব্য, পশ্চিমা দেশগুলো এখন আর নিজেদের সীমার মধ্যে আটকে নেই, বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজিক লোকেশনেও তারা চীন ও রাশিয়ার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। প্যাসিফিক অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়া, অ্যামেরিকা, জাপান এবং ভারত যেভাবে জোট তৈরি করেছে, তার সমালোচনা করেছে চীন। একইসাথে ন্যাটোকেও একহাত নিয়ে তারা জানিয়েছে, রাশিয়ার দাবি ন্যাটোর মেনে নেওয়া উচিত। রাশিয়ার দাবি, ন্যাটো আর অগ্রসর হতে পারবে না। অর্থাৎ, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা যাবে না। এর ফলে রাশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। বিঘ্নিত হচ্ছে বলেই ইউক্রেনের সীমান্তে তারা সেনা পাঠাতে বাধ্য হয়েছে। রাশিয়ার এই দাবিকে সমর্থন করেছে চীন। ব্যবসা এবং পারস্পরিক নিরাপত্তার বিষয়ে রাশিয়া এবং চীন যৌথভাবে কাজ করবে বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরো আলোচনা হবে বলেও তারা জানিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে চীন ও রাশিয়ার এই বৈঠককে ভালো চোখে দেখছে না পশ্চিমা দেশগুলো। ভবিষ্যতে এই জোট কতদূর এগোয় তার দিকে তাকিয়ে কূটনৈতিক বিশ্ব। অপর এক খবরে বলা হয়, আসন্ন শীতকালীন বেইজিং অলিম্পিক ২০২২-এ অংশ নিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর মধ্যে দিয়ে প্রথম কোনও রাষ্ট্রপ্রধান আসন্ন ইভেন্টটিতে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হলো। এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইউক্রেন সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বুধবার ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসেন চীনা প্রেসিডেন্ট ও রুশ প্রেসিডেন্ট। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়ন এবং দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ এনে অলিম্পিক-২০২২-এ কূটনীতিক পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকে সম্প্রতি সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া। এদিকে জাপানও দ্রুত নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানিয়েছে টোকিও। তবে মানবাধিকার সম্পর্কিত ঘটনার অভিযোগ বরাবরের মতো এবারও অস্বীকার করেছে বেইজিং। ভিডিও কনফারেন্সে চীনের প্রেসিডেন্টকে পুতিন বলেন, আমি বলতে চাই যে খেলাধুলা ও অলিম্পিক নিয়ে রাজনীতিকরণের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা সব সময় একে অপরকে সমর্থন করি। করোনার ধাক্কা সামলে আগামী বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনে অনুষ্ঠিত হতে চলছে শীতকালীন বেইজিং অলিম্পিক। বিশ্বের অনেক দেশের প্রতিযোগীরা এই ক্রিয়া ইভেন্টে অংশ নেবেন। সিনহুয়া, রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ