প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ (বুধবার) ঢাকা সফরে আসছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। এটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। ভারতীয় প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ লাল গালিচা অভ্যর্থনা প্রদান করবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ কোবিন্দকে স্বাগত জানাবেন। সেখানে ভারতের প্রেসিডেন্টকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।

প্রেসিডেন্টর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন ভারতের ফাস্টলেডি, প্রেসিডেন্টর কন্যা, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ভারতের প্রেসিডেন্ট ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষের সমাপনী দিন উদযাপন ও বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ সফর করবেন।
ড. মোমেন জানান, বুধবার ভারতের প্রেসিডেন্ট কোবিন্দকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। বিমানবন্দরে ভারতের প্রেসিডেন্টকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। বিমানবন্দর থেকে ভারতের প্রেসিডেন্ট সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর কোবিন্দ ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে পরিদর্শন করবেন। একই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভারতের প্রেসিডেন্টর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন ভারতের প্রেসিডেন্ট। এ সময় ভারতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের প্রেসিডেন্টকে উপহার হিসেবে প্রদান করবেন। এরপর রামনাথ কোবিন্দ প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের প্রেসিডেন্ট গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। একই দিন বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদযাপনের জন্য আয়োজিত মহাবিজয়ের মহানায়ক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন।

সফরের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর রামনাথ ঢাকার রমনায় কালী মন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। ওই দিন দুপুর তিনি দিল্লীর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

ভারতের প্রেসিডেন্টর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতে আলোচনা বিষয়ে মোমেন জানান, এসব সৌজন্য সাক্ষাতে দুদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
সংবাদ সম্মেলন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, ভারতের প্রেসিডেন্টর সফরে দুদেশের মধ্যে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) বিষয় নেই।