Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জার্মানির নতুন মন্ত্রিপরিষদে যারা আছেন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:১১ এএম

জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডির রাজনীতিবিদ ওলাফ শলৎস দেশটির নবম চ্যান্সেলর নির্বাচিত হয়েছেন৷ তিনি এসপিডির চতুর্থ রাজনীতিবিদ যিনি এই পদ পেলেন৷ তার সরকারের মন্ত্রিসভায় নারী রয়েছেন পঞ্চাশ শতাংশ৷ শুধু তাই নয়, দেশটিতে প্রথম কোনো নারী হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ চলুন জেনে নেয়া যাক, কারা কারা রয়েছেন নতুন সরকারে৷

চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস: নতুন চ্যান্সেলর শলৎস এর আগে ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী এবং ডেপুটি চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেছেন৷ হামবুর্গের সাবেক এই মেয়রের মধ্যডানপস্থি দল গত সেপ্টেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে বিস্ময়করভাবে জিতে যায়, যদিও গত কয়েক বছর ধরে দলটির জনপ্রিয়তা কম ছিল৷

অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার (এফডিপি): মিডিয়াস্যাভি ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার ২০১৩ সাল থেকে জার্মানির মুক্ত গণতন্ত্রী দল এফডিপির প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন৷ তিনি এমন এক সময় দলটির দায়িত্ব নেন, যখন সেটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার মতো অবস্থাতেও ছিল না৷ লিন্ডনারের নেতৃত্বে সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি এবং শলৎস সরকারের অর্থমন্ত্রী হয়েছেন দলটির প্রধান৷

অর্থনীতি ও জলবায়ু সুরক্ষামন্ত্রী এবং ভাইস চ্যান্সেলর ব়্যোবার্ট হ্যাবেক (সবুজ দল): জার্মানির সবচেয়ে প্রভাবশালী অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ে জলবায়ু সুরক্ষাকে অন্তর্ভূক্ত করতে সক্ষম হয়েছে সবুজ দল৷ আর সেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সবুজ দলের সহ-প্রধান ৫২ বছর বয়সি ব়্যোবার্ট হ্যাবেক৷ তিনি দলটির অপেক্ষাকৃত উদারপন্থি ‘বাস্তববাদী’ অংশের সদস্য৷ শিশুদের জন্য বই লেখা এই রাজনীতিবিদ তার নিজের রাজ্য স্লেশভিশ-হল্সটাইনে পরিবেশ এবং কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক (সবুজ দল): সবুজ দলের চল্লিশ বছর বয়সি চ্যান্সেলর প্রার্থী আনালেনা বেয়ারবক চ্যান্সেলর হতে না পারলেও শলৎসের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পেরেছেন৷ তিনি ইতোমধ্যে জার্মানির চীন নীতি কঠোর করার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফায়েজার (এসপিডি): শলৎসের মন্ত্রিপরিষদের সবচেয়ে বড় বিস্ময় সম্ভবত ন্যান্সি ফায়েজার৷ এসপিডি দলের এই নারী রাজনীতিবিদকে জার্মানির বড় মন্ত্রণালয়গুলোর একটি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন উগ্র ডানপন্থিদের প্রতি সরকার আরো কড়া হতে সম্ভবত তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ তিনি হচ্ছেন জার্মানির প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷

স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লাউটারবাখ্ (এসপিডি): টেলিভিশন টকশো-তে স্পষ্টভাষী হিসেবে জার্মানদের কাছে জনপ্রিয় লাউটারবাখ্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ তিনি করোনা সংক্রমণ রোধে সবার জন্য টিকা বাধ্যতামূলক করার মতো কড়া পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

বিচারমন্ত্রী মার্কো ব্যুশমান (এফডিপি): এফডিপির ৪৪ বছর বয়সি রাজনীতিবিদ মার্কো ব্যুশমান ২০০৯ সালে প্রথম কেন্দ্রীয় সংসদের সাংসদ নির্বাচিত হন৷ পরবর্তীতে দলটির চরম দুর্দিনেও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ছিলেন তিনি৷ মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষায় তৎপর হিসেবে সুনাম রয়েছে তার৷

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিষ্টিন লাম্বব্রেশট্ (এসপিডি): ম্যার্কেল সরকারের সর্বশেষ বিচারমন্ত্রীকে এবার দেশটির সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক অবশ্য ধারণা করেছিলেন ৫৬ বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হবে, কেননা সামরিক বিষয়ে তার জ্ঞান সীমিত৷

খাদ্য এবং কৃষিমন্ত্রী চেম ও্যজডেমির (সবুজ দল): সবুজ দলের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ চেম ও্যজডেমির অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকারে জায়গা পেলেন৷ জার্মান মন্ত্রি পরিষদে এই প্রথম একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত রাজনীতিবদ জায়গা পেলেন৷ তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত চেম প্রায় এক দশক ধরে সবুজ দলের সহ-চেয়ারম্যান৷

পরিবেশ, প্রকৃতি সুরক্ষা, পরমাণু সুরক্ষা এবং ভোক্তাসুরক্ষামন্ত্রী স্টেফি লেমকে (সবুজ দল): ১৯৮৯ সালে পূর্ব জার্মানিতে সবুজ দলের প্রথম শাখা চালু করা স্টেফি ল্যামকেকে জার্মানির সবচেয়ে বড় নামের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল অবধি জার্মান সংসদে থাকাকালে আফগান যুদ্ধে জার্মানির অংশগ্রহণের ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি৷

পরিবহণ ও ডিজিটাল অবকাঠামোমন্ত্রী ফল্কার ভিসিং (এফডিপি): সঙ্গে গড়া জোট সরকারে তাই তিনি অপরিচিত কোনো মুখ নন৷ এর আগে পাঁচ বছর রাইনল্যান্ড-পালাটিনাট রাজ্যের রাজ্য সংসদে অর্থনীতি মন্ত্রণালয় সামলেছেন তিনি৷

শ্রম এবং সমাজ বিষয়ক মন্ত্রী হুবার্টাস হাইল (এসপিডি): ম্যার্কেলের সর্বশেষ সরকারে থাকা পদটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন এসপিডির হাইল৷ তার দল যে তার উপর সন্তুষ্ট - এটা তারই ইঙ্গিত৷ জার্মানিতে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর পাশাপাশি ‘হোম ওয়ার্কার’-এর ঘাটতি মোকাবিলা ও তাদের মজুরি বৃদ্ধিতে মনোযোগ দেবেন তিনি৷

অর্থনীতি সহায়তা এবং উন্নয়নমন্ত্রী স্যোয়েনিয়া শুলৎসে (এসপিডি): ম্যার্কেল সরকারের পরিবেশমন্ত্রী স্যোয়েনিয়া শুলৎসে হচ্ছেন শলৎসের প্রথম উন্নয়নমন্ত্রী৷ ৫৩ বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদ পরমাণু বিদ্যুতের ঘোরবিরোধী এবং বিভিন্ন পরিবেশ বিষয়ক সংস্থার সদস্য৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জার্মানি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ