Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বড় ঘাটতিতে বাংলাদেশ

লেনদেন ভারসাম্য জুলাই-অক্টোবরে ঘাটতি ৪৭৭ কোটি ডলার ষ গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬৩ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত ষ আমদানি বাড়াকে দুষছেন বিশ্লেষকরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে সম্প্রতি উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণের সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকেও দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্যনীয়। তবে অগ্রগতির মধ্যেই অর্থনীতিতে বিপরীত চিত্রও প্রতীয়মান হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের চার মাসেই (জুলাই-অক্টোবর) বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৭৭ কোটি (৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলার। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ৩৬৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর শুরুই হয়েছিল লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে। প্রথম তিন মাসে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৩১ কোটি ৪০ লাখ (২ দশমিক ৩১ বিলিয়ন) ডলার। চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর) তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। অথচ গত বছরের একই সময়ে এই সূচকে ঘাটতির পরিবর্তে বড় অংকের উদ্বৃত্ত ছিল।

নিয়মিত আমদানি-রফতানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাব উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি বাড়ায় বৈদেশিক লেনদেনে এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে, এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমদানি বাড়ার ভালো দিকও আছে। দেশে বিনিয়োগ বাড়বে; কর্মসংস্থান হবে। অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হবে।

প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল গত ২০২০-২১ অর্থবছর। নয় মাস পর্যন্তও (জুলাই-মার্চ) এই সূচক উদ্বৃত্ত ছিল। কিন্তু আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এপ্রিল থেকে ঘাটতি (ঋণাত্মক) দেখা দেয়। বেশ কয়েক বছর পর সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩৪ কোটি ডলার। অথচ গত বছরের এই চার মাসে উদ্বৃত্ত ছিল ৪১৪ কোটি ১০ লাখ (৪ দশমিক ১৪ বিলিয়ন) ডলার। ৯২৭ কোটি ৪০ লাখ (৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন) ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের বছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

তবে আর্থিক হিসাবে এখনও উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই-অক্টোবর সময়ে এই উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ (৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলার। গত বছরের এই সময়ে ৬৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ অন্য দাতাদেশ ও সংস্থার কাছ থেকে কাক্সিক্ষত ঋণসহায়তা পাওয়ায় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এক লাফে বাণিজ্য ঘাটতি তিন গুণ
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিতে জোয়ার বইতে শুরু করেছে। আর এতে আমদানি-রফতানির মধ্যে ব্যবধান চ‚ড়ায় উঠছে। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বাংলাদেশে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯১০ কোটি (৯ দশমিক ১০ বিলিয়ন) ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় তিন গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৪৯ কোটি ৬০ লাখ (৩ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন) ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে ২ হাজার ৩৯০ কোটি (২৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই চার মাসে ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।

অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ১ হাজার ৪৮০ কোটি ১০ লাখ (১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন রফতানিকারকরা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এ হিসাবেই অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯১০ বিলিয়ন ডলার।

সেবা বাণিজ্যেও ঘাটতি বাড়ছে
জুলাই-অক্টোবর সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৭০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ২:৫৩ এএম says : 0
    দৈনিক ইনকিলাবে ভারতের যে খবর টি প্রকাশ করা হয়েছে,খবর টি শির নাম ,ভারত,দরিদ্র ও চরম অসাম্যের দেশ,আমি আমাদের দেশের বিশিষ্টজনের কাছে অনুরোধ রইল,বিষয়টি পড়ে যেন একটু চিন্তা করে দেখেন যে ভারতের এই অবস্থা কি জন্য,1%লোক পুরা ভারতের মালিক,ধনী আরো না কি ধনী হইতেছে,কিন্তু সেটি কি কারনে আসলেই কেউ সেইটি চিন্তা করে না,শুধু আমার ভাই তোমার ভাই শয়তান ভাই ফাজিল ভাই,এই দল সেই দল,কিন্তু জনগণ সেটা বুজতেছেনা যে এই গুলি করে জনগন গরিব হয়ে যাবে,এক দিন ঐ ভারতের মতই হবে,1%লোক ধনী হবে,মাত্র শুরু দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি,এই পদ্ধতি যদি চলতে থাকে ভারতের মত বাংলাদেশ ও এমন হবে,এই জন্যই বাংলাদেশে রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী আমলারা সংসদীয় পদ্ধতি করেছেন,শেষ পযন্ত বাংলাদেশের 99%মানুষ গরিব হয়ে যাবে,যদি এই সংসদীয় পদ্ধতি থাকে,কিন্তু আমরা জনগণ বুঝি না যে আমরা নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারতেছি,এই ভাবে সংসদীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি চলবে,দলীয় ভাবে মন্ত্রী এম পিরা এই দেশের মালিক হবেন,99%জনগণ গরিব হয়ে যাবে,
    Total Reply(0) Reply
  • MD.Uzzal Hossain ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:৩৮ এএম says : 0
    উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশ,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ