দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : দাম্ভিকতা ও অহঙ্কার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পছন্দ করেন না। যে আনন্দ ও উল্লাস মানুষকে দম্ভ ও অহঙ্কারের সীমা পর্যন্ত পৌঁছায় তাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনের সূরা আল-কাসাস এর ৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ওই পরকাল আমি তাদের জন্য নির্ধারিত করি, যারা দুনিয়ার বুকে ঔদ্ধত্য প্রকাশ ও অনর্থ সৃষ্টি করতে চায় না। আর শুভ পরিণাম আল্লাহভীরুদের জন্য’।
আর সহীহ হাদীসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ অহঙ্কার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না’। জনৈক ব্যক্তি প্রশ্ন করলেন, কোন মানুষ যদি এমন হয় যে, সে চায় তার বস্ত্র উত্তম হোক, তার জুতো সুন্দর হোক তাহলে এটা কি অহঙ্কার ? জবাবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহঙ্কার মানে সত্যকে অস্বীকার করা এবং অন্য মানুষকে তুচ্ছ জ্ঞান করা’।
সহীহ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, এক ব্যক্তি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর সম্মুখে বাম হাত দ্বারা খানা খাচ্ছিল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘ডান হাত দিয়ে খাও’। সে বলল, পারি না। সম্ভব না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি আর পারবে না’। অহঙ্কার করেই সে পারি না বলেছিল। বাস্তবে তার কোন সমস্যা ছিল না। বর্ণনাকারী বলেছেন, লোকটি তার ডান হাতটি আর কোনদিন মুখের দিকে উঠাতে পারেনি। (মুসলিম)
বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত অন্য এক হাদীসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পূর্ব যুগে একজন লোক ছিল, সে উন্নত মানের এক সেট কাপড় পরিধান করে পথ চলছিল যা তাকে আত্মম্ভরিতায় নিমজ্জিত করেছিল। মাথা ছিল চিরুনীকৃত, সে পথ চলছিল দাম্ভিকতার সাথে। ঠিক সেই মূহুর্তে আকস্মিক আল্লাহ তায়ালা তাকে ভূমিতে দাবিয়ে দিলেন। লোকটি কিয়ামত পর্যন্ত মাটিতে ধসতেই থাকবে, ধসতেই থাকবে। (বুখারী ও মুসলিম)
এছাড়া হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত - তিনি বলেন, আমি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামবাসীদের সম্পর্কে অবগত করাব যে, তারা কারা হবে? তারা হবে প্রত্যেকই কঠোর স্বভাবী, দুশ্চিরিত্র ও অহঙ্কারী। (বুখারী ও মুসলিম)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিনয়ী, আর্ত-মানবতার খিদমতকারী, দুর্বল, অসহায় লোকদের সাহায্যকারী ও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর খাঁটি উম্মত হিসাবে জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন : মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী। মুহতামিম, জামিয়া মদীনাতুল উলূম ভাটারা, ঢাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।